প্রেরিতগণের কার্য-বিবরণ

34/59

৩৩শ অধ্যায়—কষ্টকর অবস্থার মধ্যে কাজ করা

ঈশ্বরের কাজের জন্য সঠিক আর্থিক সমর্থন দেবার বিষয়ে তার পরিবর্তিত লোকদের কাছে শাস্ত্রের সরল শিক্ষা দানের সময় পৌল যত্নশীল ছিলেন, আর যখন তিনি নিজেকে সুসমাচার প্রচারকরুপে নিজের আর্থিক সংস্থানের জন্য জাগতিক কাজকর্মের ব্যাপারে ” পরিশ্রম ত্যাগ করিবার অধিকার” AABen 284.1

(১ করিন্থয় ৯:৬ পদ) দাবি করেছেন, অথচ তার পরিচর্যাকাজে নিযোজিত থাকাকালে সভ্যতার বিরাট কেন্দ্রে তিনি তার নিজের ভরণ—পোষণের জন্য একটা হস্তশিল্পে নিজেকে নিয়োজিত করেছেন। AABen 284.2

যিহূদীদের মধ্যে শারীরিক পরিশ্রম করা অজানা বা মর্যাদাহানিকর ছিল না। মোশির মাধ্যমে ইব্রীয়দের সন্তানদের পরিশ্রম করার অভ্যাস করতে শিক্ষা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, আর শারীরিক পরিশ্রম সম্পর্কে অজ্ঞ থেকে যুবকদের বড় হতে দেওয়াকে পাপ বলে গণ্য করা হতো। যদিও কোন AABen 284.3

সন্তানকে পবিত্র পদের জন্য শিক্ষিত করতে হতো, বাস্তব জীবন সম্পর্কে জ্ঞান প্রয়োজনীয় মনে করা হতো। তার পিতামাতা ধনী হোক বা গরীব হোক, প্রত্যেক যুবককে একটা না একটা হাতের কাজ শিখতে হতো। যে সব পিতামাতারা তাদের সন্তানদের এই রকম প্রশিক্ষণ দিতে অবহেলা করত তাদের ঈশ্বরের শিক্ষার থেকে দূরে সরে যাচ্ছে বলে মনে করা হতো। এই প্রথার সাথে সামঞ্জস্য রক্ষা করে, পৌল ছোট বেলা থেকে তাম্বু তৈরীর কাজ শিখেছিলেন। AABen 284.4

তিনি খ্রীষ্টের শিষ্য হবার আগে, পৌল একটা উঁচু পদ অধিকার করে ছিলেন আর তার জীবিকার জন্য কায়িক পরিশ্রমের ওপর নির্ভও করতে হতো না। কিন্তু পরে যখন তিনি তার সব অর্থ সম্পদ খ্রীষ্টের কাজের স¤প্রসারণের জন্য খরচ করে ফেলেন, তখন তার জীবিকা নির্বাহের জন্য মাঝে মাঝে তার ব্যবসায় ফিরে যেতে হয়েছে। বিশেষভাবে এটাই হয়তো কারণ যে যখন তিনি বিভিন্ন জায়গায় কাজ করেছেন তখন সেখানে তার উদ্দেশ্য সম্পর্কে ভুল বোঝা হয়েছে। AABen 284.5

থিষলনীকীতে বাক্য প্রচারের সময় আমরা পৌলকে হাতের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করার বিষয় প্রথম পাঠ করি। সেখানের মন্ডলীর বিশ্বাসীদের কাছে লিখতে গিয়ে তিনি তাদের স্মরণ করিয়ে দেন যে, তিনি হয়তো তাদের কাছে “ভারস্বরূপ” হতে পারেন, আর তিনি আরও বলেন, “হে ভ্রাতৃগণ, আমাদের AABen 285.1

পরিশ্রম ও আয়াস তোমাদের স্মরণে আছে ; তোমাদের কাহারও ভারস্বরূপ যেন না হই, তজ্জন্য আমরা দিবারাত্র কার্য্য করিতে করিতে তোমাদের কাছে ঈশ্বরের সুসমাচার প্রচার করিয়াছিলাম।” ১ থিষলনীকীয় ২:৬,৯ পদ। আবার তিনি তাদের কাছে তার দ্বিতীয় পত্রে বলেন যে, তিনি ও তার সহকর্মীরা যখন তাদের সাথে ছিলেন তখন তারা “বিনামূল্যে কাহারও কাছে অন্ন ভোজন” করেন নি, বরং দিন রাত কাজ করতেন যেন “কাহারও ভারস্বরূপ” না হন, তিনি লিখেছেন, “আমাদেও যে অধিকার নাই, তাহা নয় ; কিন্তু তোমাদের নিকটে আপনাদিগকে আদর্শরূপে দেখাইতে চাহিলাম, যেন তোমরা আমাদের অনুকারী হও।” ২ থিষলনীকীয় ৩:৮,৯ পদ। AABen 285.2

থিষলনকি তে পৌল একদল লোকের দেখা পেলেন যারা হাত দিয়ে কাজ করতে অস্বীকার করত। এই শ্রেণীর লোকদের বিষয়ে তিনি পরে লেখেন, “তোমাদের মধ্যে কেহ কেহ অনিয়মিতরূপে চলিতেছে, কোন কার্য্য না করিয়া অনধিকারচর্চ্চা করিয়া থাকে। এই প্রকার লোকদিগকে আমরা প্রভু যীশু খ্রীষ্টের করুক।”থিষলনীকীতে কাজ করার সময় পৌল এই সব লোকদের কাছে সঠিক আদর্শ রাখার বিষয়ে যত্নশীল ছিলেন। তিনি লেখেন, “কারণ আমরা যখন তোমাদের কাছে ছিলাম, তখন তোমাদিগকে এই আদেশ দিতাম যে, যদি কেহ কার্য্য করিতে না চায়, তবে সে আহারও না করুক।” ১১, ১২, ১০ পদ। AABen 285.3

প্রত্যেক যুগে ঈশ্বরের দাসগণের প্রচেষ্টা ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য শয়তান মÐলীর মধ্যে অতি গোঁড়ামীর মনোভাব ঢুকিয়ে দেয়। এ রকম পৌলের সময়ে যেমন , পরবর্তী শতকে সংস্কারের যুগেও তেমনই দিয়েছে। উইক্লিফ, লুথার ও আরও অনেকে তাদের বিশ্বাস ও প্রভাব দিয়ে যারা পৃথিবীকে আশীর্বাদযুক্ত করেছিলেন, তারাও এই সব শয়তানির মোকাবিলা করেছেন, যা দিয়ে শত্র” অতি গোঁড়ামী, অতি উৎসাহী, অস্থির ও অপবিত্র মন বিশিষ্ট হতে পরিচালিত করতে চেষ্টা করেছিল। বিপথগামী লোকেরা এই শিক্ষা দিত যে, প্রকৃত পবিত্রতা অর্জন মনকে জাগতিক চিন্তার উর্দ্ধে নিয়ে যায়, আর মানুষকে শ্রম থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকতে পরিচালিত করে। অন্যান্যরা, শাস্ত্রের কোন কোন AABen 285.4

পদের চরম ব্যাখ্যা গ্রহণ করে শিক্ষা দিয়েছে যে কাজ করা পাপ—খ্রীষ্টানরা নিজেদের জন্য বা তাদের পরিবার পরিজনদের জন্য কোন পার্থিব কল্যাণের চিন্তা করবে না, কিন্তু তাদের জীবন সম্পূর্ণ ভাবে আধ্যাত্মিক বিষয়ে উৎসর্গীকৃত থাকবে। পৌলের শিক্ষা ও আদর্শ এই রকম চরম ব্যাখ্যার প্রতি তিরস্কারপূর্ণ। AABen 286.1

থিষলনীকীতে থাকা কালে পৌল তার জীবিকা নির্বাহের জন্য সম্পূর্ণভাবে তার হাতের কাজের ওপর নির্ভরশীল ছিলেন না। পরে সেই শহরের অভিজ্ঞতা উল্লেখ করতে গিয়ে সেই শহরে থাকা কালে ফিলিপীয় বিশ্বাসীদের কাছ থেকে পাওয়া উপহারসমূহের প্রাপ্তিস্বীকার করে লেখা চিঠিতে তিনি বলেন, “বাস্তবিক থিষলনীকীতেও তোমরা একবার, বরং দুই বার আমার প্রয়োজনীয় উপকার পাঠাইয়াছিলে।” ফিলিপীয় ৪:১৬ পদ। এই সাহায্য পাওয়া সত্তে¡ও তিনি থিষলনীকীযদের কাছে পরিশ্রমের আদর্শ স্থাপন করতে যত্নশীল ছিলেন, যেন কেউ তাকে বৈধভাবে লোলুপতার দোষারোপ করতে না পারে, আরও যারা কায়িক শ্রম সম্পর্কে গোঁড়া মতবাদ পোষণ করত তাদের একটা ব্যবহারিক তিরস্কার প্রদান করতে পারেন। AABen 286.2

পৌল যখন প্রথম করিন্থে যান, তখন তিনি নিজেকে এমন একদল লোকের মধ্যে আবিস্কার করলেন যারা বিদেশীদের হাবভাব সম্পর্কে সন্দেহপ্রবণ ছিল। সমুদ্রপারের গ্রীকেরা চতুর ব্যবসাযী ছিল। এত দিন পর্যন্ত তারা নিজেদের ব্যবসার এই চতুরনীতি অভ্যাস করায়, এই বিশ্বাস তাদের মধ্যে বদ্ধমূল হয়েছিল যে, লাভ করাই ঈশ্বরপ্রেম, আর বৈধ বা অবৈধ যে কোন উপায়ে অর্থ উপার্জন করা প্রশংসনীয়। পৌল তাদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট সম্পর্কে পরিচিত ছিলেন, তিনি তাদের এমন কোন সুযোগ দেবেন না যাতে তারা বলতে পারে যে তিনি নিজেকে ধনী করার জন্য প্রচার করেন। তিনি হয়ত তার করিন্থীয় শ্রোতাদের কাছে ভরণপোষণের জন্য ন্যায্য দাবি করতে পারতেন; কিন্তু তিনি এই অধিকার ত্যাগ করতে রাজী ছিলেন, নচেৎ, তিনি লাভের জন্য প্রচার করেন এই অন্যায় সন্দেহের কারণে পরিচর্যাকারীরূপে তার প্রয়োজনীযতা ও সফরতা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারত। তিনি অসত্য উপস্থাপনার সব রকম উপলক্ষ দূর করতে চেষ্টা করেছেন, যেন তার বার্তা প্রচারের গতি হারিয়ে না যায়। AABen 286.3

পৌল করিন্থে আসার পরেই , “তিনি আক্কিলা নামে এক যিহূদীর দেখা পাইলেন ; ইনি জাতিতে পন্তীয়, অল্প দিন পূর্ব্বে আপন স্ত্রী প্রিষ্কিল্লার সহিত ইতালিয়া হইতে আসিয়াছিলেন।” তারা পৌলের “সমব্যবসায়ী” ছিলেন। রোম থেকে সব যিহূদীদের চলে যাবার জন্য ক্লৌদিয়র আজ্ঞায় নির্বাসিত হয়ে, আক্কিলা ও প্রিষ্কিল্লা করিন্থে এসে তাম্বু তৈরীর ব্যবসা আরম্ভ করে। পৌল তাদের ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারলেন যে, তারা ঈশ্বরকে ভয় করে ও তাদের চারপাশের দুষিত প্রভাব এড়িয়ে থাকতে চায়, তাই তিনি “তাঁহাদের সঙ্গে অবস্থিতি করিলেন, ও তাঁহারা কর্ম্ম করিতে লাগিলেন। . . . প্রতি বিশ্রামবারে তিনি সমাজ—গৃহে কথা প্রসঙ্গ করিতেন, এবং যিহূদী ও গ্রীকদিগকে বিশ্বাস করিতে প্রবৃত্তি দিতেন।” প্রেরিত ১৮:২—৪ পদ। AABen 287.1

পরে, সীল তীমথিয় করিন্থে পৌলের সঙ্গে যোগ দিল। এই ভ্রাতৃগণ কাজের ব্যয়ভার বহন করবার জন্য তাদের সাথে মাকিদনিয় মন্ডলীসমূহ থেকে অর্থ সাহায্য নিয়ে এসেছিল। করিন্থে একটা দৃঢ় মন্ডলী স্থাপন করার পরে, সেখানের বিশ্বাসীদের কাছে তার লেখা দ্বিতীয় চিঠিতে তিনি তাদের সঙ্গে থাকা কালে তার আচরণ পুনর্বিবেচনা করেন। তিনি প্রশ্ন করেন, “আমি কি পাপ করিয়াছি যে, তোমাদের উন্নতির নিমিত্তে আপনাকে বিনত করিয়াছি, বিনা বেতনে তোমাদের কাছে ঈশ্বরের সুসমাচার প্রচার করিয়াছি ? তোমাদের পরিচর্য্যা করিবার জন্য আমি অন্য অন্য মন্ডলীকে লুট করিয়া বেতন গ্রহণ করিয়াছি ; এবং যখন তোমাদের নিকটে ছিলাম, তখন আমার অভাব হইলেও কাহারও ভারস্বরূপ হই নাই, কেননা মাকিদনিয়া হইতে ভ্রাতৃগণ আসিয়া আমার অভাব দূর করিলেন। হাঁ, আমি যাহাতে কোন বিষয়ে তোমাদের ভারস্বরূপ না হই, আপনাকে এরূপে রক্ষা করিয়াছি, এবং রক্ষা করিব। খ্রীষ্টের সত্য যখন আমাতে আছে, তখন আখায়ার কোন অঞ্চলে কেহ আমার এই শ— ঘা নিবারণ করিতে পারিবে না।” ২ করিন্থীয় ১১:৭—১০ পদ। AABen 287.2

পৌল বলেন বলেন কেন তিনি করিন্থে এই পথ অবলম্বন করেন। কারণ “যাহারা সুযোগ পাইতে ইচ্ছা করে” ২ করিন্থীয় ১১:১২ পদ। তারা যেন তার নিন্দা করার সুযোগ না পায়। যখন তিনি তাম্বু নির্মাণের কাজ করছিলেন, তখন তিনি বিশ্বস্তভাবে পরিশ্রম করে সুসমাচার প্রচারও করছিলেন। তিনি তার পরিশ্রমের বিষয়ে এই কথা বলেন, “প্রেরিতের চিহ্ন সকল তোমাদের মধ্যে সম্পূর্ণ ধৈর্য্য সহকারে, নানা চিহ্নকার্য্য, অদ্ভুত লক্ষণ ও পরাক্রম—কার্য্য দ্বারা সম্পন্ন হইয়াছে।” আর তিনি আরও বলেন, “বল দেখি, অন্য সকল মন্ডলী অপেক্ষা তোমরা কিসে অপকৃষ্ট হইলে ? আমি আপনি তোমাদের গলগ্রহ হই নাই, এইমাত্র ; আমার এই অন্যায়টী ক্ষমা কর। দেখ, এই ত্রতীয় বার আমি তোমাদের কাছে যাইতে প্রস্তুত আছি ; আর আমি তোমাদের গলগ্রহ হইব না ; কেননা আমি তোমাদেও কোন দ্রব্যেও চেষ্টা নয়, তোমাদেরই চেষ্টা করিতেছি। . . . আর আমি অতিশয় আনন্দের তোমাদের প্রাণের নিমিত্ত ব্যয় করিব, এবং ব্যয়িতও হইব।” ২ করিন্থীয় ১২:১২—১৫ পদ। AABen 287.3

ইফিষে তিন বছর পর্যন্ত সেই অঞ্চলের সব জায়গায় আগ্রাসী সুসমাচার প্রচারাভিযান পরিচালনা করার সময়, পৌল আবার তার ব্যবসাও চালিয়ে গিয়েছেন। করিন্থেও মত, ইফিষেও প্রেরিত আক্কিলা ও প্রিষ্কিল্লার উপস্থিতিতে আনন্দিত হয়েছিলেন, তারা তার সঙ্গে তার দ্বিতীয় মিশনারী যাত্রায় এশিয়ায় AABen 288.1

ফিরে এসেছিল। সেখানে কতগুলো লোক ছিল যারা পৌলের হাতের কাজ করার বিরোধিতা করত, তারা ঘোষণা দিয়েছিল যে, সুসমাচারের পরিচারকরূপে এই কাজ করা অসামঞ্জস্যপূর্ণ। পৌল একজন অতি উচ্চপদস্ত পরিচারক হিসাবে বাক্য প্রচারের সাথে যান্ত্রিক কাজের সাথে যুক্ত থাকবেন ? একজন শ্রমিক কি তার বেতন পাবার যোগ্য না ? যে সময়টা আরও ভাল কোন কাজে ব্যয় করা যেত সেই সময়টা কেন তাম্বু বানিয়ে কাটাতে হবে ? AABen 288.2

কিন্তু এভাবে সময় ব্যয় করাকে পৌল বৃথা বলে বিবেচনা করতেন না। আক্কিলার সঙ্গে কাজ করার সময় তিনি মহান শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা কওে চলতেন, ত্রাণকর্তার পক্ষে সাক্ষ্য বহন করার কোন সুযোগ তিনি হারাতেন না, অথবা যাদের সাহায্যের প্রয়োজন তাদের সাহায্য বঞ্চিত করতেন না। তার মন সব সময় আধ্যাত্মিক জ্ঞানের নাগাল পাবার জন্য উন্মুখ থাকত। তিনি তার সহকর্মীদের আধ্যাত্মিক বিষয়ে শিক্ষা দিতেন, তিনি পুঙ্খানুপুঙ্খতা ও অধ্যাবসায়ের আদর্শ স্থাপন করেছিলেন। তিনি একজন দ্রুত, দক্ষ কর্মী,ও ব্যবসায় অধ্যবসায়ী, “আত্মায় উত্তপ্ত,” রোমীয় ১২:১১ পদ, ও প্রভুর দাস ছিলেন। তিনি তার ব্যবসায় কাজ করার সময় এমন এক শ্রেণীর লোকদের সাথে মিশতেন, যাদের নাগাল অন্য কোন ভাবে পেতে পারতেন না। তিনি তার সহকর্মীদেও দেখিয়েছেন যে, সাধারণ শিল্পকর্মে দক্ষতা ঈশ্বরদত্ত দান, যিনি তা ঠিক মত ব্যবহার করার জন্য দান ও জ্ঞান, উভয়ই সরবরাহ করেন। তিনি শিক্ষা দিয়েছেন যে, এমন কি দৈনন্দিন পরিশ্রমেও ঈশ্বর গৌরবান্বিত হবেন। খ্রীষ্টান পরিচর্যাকারীরূপে তার শ্রমে—শক্ত হাত দুখানা তার করুণার আবেদনের শক্তির কিছুই হরণ করতে পারে নি। AABen 288.3

শুধু নিজের জীবিকার জন্য না, কিন্তু তার সহকার্যকারীদের যেন সাহায্য করতে পারেন সে জন্য পৌল কখনও কখনও দিনরাত কাজ করতেন। তিনি তার রোজগারের অর্থ লূকের সাথে সহভাগ করেছেন, আর তিনি তীমথীয়কে সাহায্য করেছেন। অন্যদের প্রয়োজন মিটাতে এমন কি কখনও কখনও তিনি অনাহারেও কষ্ট পেয়েছেন। তার একটা নিঃস্বার্থপূর্ণ জীবন ছিল। তার পরিচর্যা কাজের শেষে , মিলিতে ইফিষিয় প্রাচিনবর্গের কাছে তার বিদায় ভাষণে তিনি তার শ্রমেক্লান্ত হাতদুখানা তুলেধওে বললেন, “আমি কাহারও রৌপ্যের কি স্বর্ণের প্রতি লোভ করি নাই। তোমরা আপনারা জান, আমার নিজের এবং আমার সঙ্গীদের অভাব দূর করণার্থে এই দুই হস্ত কার্য্য করিয়াছে। সকল বিষয়ে আমি তোমাদিগকে দৃষ্টান্ত দেখাইয়াছি যে, এই প্রকারে পরিশ্রম করিয়া দুর্ব্বলদিগকে সাহায্য করিতে হইবে, এবং প্রভু যীশুর বাক্য স্মরণ করা উচিৎ, কেননা তিনি বলিয়াছেন, গ্রহণ করা অপেক্ষা বরং দান করা ধন্য হইবার বিষয়।” প্রেরিত ২০:৩৩—৩৫ পদ। AABen 289.1

যদি পরিচর্যাকারীরা মনে করে যে, তারা খ্রীষ্টের কাজের জন্য কষ্ট ও অন্নবস্ত্রাভাবে জর্জরিত, তাহলে পৌল যে কারখানায় কাজ করতেন, কল্পনায় সেই কারখানা পরিদর্শনে যাক। তাদের এ কথা মনে রাখতে হবে যে, ঈশ্বরের এই মনোনীত ব্যক্তি তাম্বু তৈরী করছেন, তিনি তার খাবারের জন্য কাজ করছেন, একজন প্রেরিত হিসাবে তিনি পরিশ্রম করে তার ন্যায্য আয় করছেন। AABen 289.2

কাজ একটা আশীর্ব্বাদ, একটা অভিশাপ না। শ্রমবিমূখতা ধার্মিকতাকে বিনষ্ট কারে আর ঈশ্বরের আত্মাকে দুঃখ দেয়। একটা বদ্ধ পুকুর কটুগন্ধবিশিষ্ট, কিন্তু একটা বিশুদ্ধ প্রবাহিত স্রোত দেশের ওপর দিয়ে স্বাস্থ্য ও সুখ প্রসারিত করে। পৌল জানতেন যে, যারা শারীরিক পরিশ্রম করা অবহেলা করে, তারা অচিরেই দুর্বল হয়ে পড়ে। তিনি তার যুবক পরিচর্যকারীদের এই শিক্ষা দিতে চেয়েছিলেন যে হাত দিয়ে কাজ করলে, মাংসপেশী ও তন্ত্রগুলোকে কর্মতৎপর রাখলে, সুসমাচারের ক্ষেত্রে তাদের জন্য যে কষ্ট ও অন্নবস্ত্রাভাব অপেক্ষা করছে, তা সহ্য করতে তারা শক্তিশালী হবে। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে, তিনি যদি তার শরীরতন্ত্রেও সব অঙ্গগুলোকে সঠিকভাবে কর্মতৎপর না রাখেন, তবে নিজের শিক্ষাদানের কোন বৈধতা ও শক্তি থাকবে না। AABen 289.3

জীবনের সাধারণ কর্তব্যগুলো বিশ্বস্তভাবে সম্পাদন করলে যে অমূল্য অভিজ্ঞতা অর্জন করা যায়, অলস তা থেকে বঞ্চিত থাকে ও ক্ষতিস্বীকার করতে বাধ্য হয়। ঈশ্বর তাঁর অনুগ্রহে তাদের ওপর যে সব সুবিধাদি প্রদান করেছেন শুধু তা ভোগ করার জন্য একজন দুজন না, হাজার হাজার লোক জীবনযাত্রা চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি তাদের কাছে যে সব ধনসম্পদ গচ্ছিত রেখেছেন, তার জন্য তারা সদাপ্রভুর কাছে কৃতজ্ঞতার দান আনতে ভুলে যায়। তারা ভূলে যায় যে, তাদের কাছে যে তালন্ত ধার দেওয়া হয়েছে তা বুদ্ধিপূর্বক ব্যবসায় খাটালে তারা একসঙ্গে উৎপাদক ও ভোগকারী উভয়ই হতে পারে। তাঁর সাহায্যকারী হাতরূপে সদাপ্রভু তাদেও দিয়ে কী করাতে চান তা যদি তারা বুঝতে পারতো তাহলে তারা তাদের কর্তব্য থেকে দূরে থাকত না। AABen 290.1

যে সব যুবকেরা মনে করে যে, ঈশ্বর তাদের প্রচার কাজের জন্য ডেকেছেন, যে অবস্থার মধ্যে তারা কাজে ঢুকলো তার ওপর তাদের প্রয়োজনীয়তা অনেকাংশে নির্ভর করবে। যারা পরিচর্যা কাজের জন্য ঈশ্বর কর্তৃক মনোনীত হয়েছে, তারা তাদের উচ্চ—আহবানের প্রমান দেবে আর সব রকম সম্ভাবনার মধ্যে দিয়ে নিজেকে একজন দক্ষ কর্মীরূপে গড়ে তুলবে। তারা এমন একটা অভিজ্ঞতা অর্জন করতে চেষ্টা করবে যা তাদের পরিকল্পনা করতে, সংগঠিত করতে, ও কাজে পরিণত করতে যোগ্য করবে। তাদের আহবানের পবিত্রতা উপলব্ধি করে, তারা, আত্ম—সংযম দ্বারা, তাঁর মঙ্গলভাব, প্রেম, ও সত্য প্রকাশ করে, আরও ও আরও বেশী তাদের প্রভুর মত হবে। তারা যখন তাদের কাছে গচ্ছিত তালন্ত উন্নয়নে ঐকান্তিকতা প্রকাশ করবে, মন্ডলী তখন তাদের সুবিবেচনাপূর্ণভাবে সাহায্য করবে। AABen 290.2

সবাই যারা মনে করে যে তাদের আহ্বান করা হয়েছে, তাদের সকলকে তখনই লাগাতার অর্থনৈতিক ভারবহন করার জন্য মন্ডলীর ওপর নিজেদের ও নিজেদের পরিবার পরিজনকে চাপিয়ে দিতে উৎসাহিত করতে হবে না। এতে সীমিত অভিজ্ঞতার ব্যক্তিরা তোষামোদে নষ্ট হয়ে যেতে পারে, আর তাদের পক্ষ থেকে স্বাধীনভাবে করা কোন গুরুতর প্রচেষ্টায় নির্বোধের মত সমর্থন প্রত্যাশা করবে। ঈশ্বরের কাজের প্রসারণের জন্য উৎসর্গীকৃত অর্থ, সহজ জীবনের অভিলাষ চরিতার্থ করার জন্য ও কেবল বেতন পাবার জন্য প্রচার কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশকারীদের ভোগ করতে দেওয়া উচিৎ না। AABen 290.3

যুবকেরা যারা পরিচর্যা কাজে তাদের বর ব্যবহার করতে চায়, তারা থিষলনীকীতে, করিন্থে, ইফিষে, ও অন্যান্য জায়গায় পৌলের উদাহরণ থেকে সহায়ক শিক্ষা খুঁজে পেতে পারে। যদিও একজন তুখোড় বক্তা, ও একটা বিশেষ কাজ করার জন্য ঈশ্বর কর্তৃক মনোনীত, তবুও তিনি কখনও শ্রমের ঊর্দ্ধে ছিলেন না, না তিনি তার প্রিয় কাজের জন্য ত্যাগস্বীকার করতে কখনও ক্লান্তি বোধ করেছেন। তিনি করিন্থীয়দের কাছে লিখেছেন, “এখনকার এই দণ্ড পর্য্যন্ত আমরা ক্ষুধার্ত্ত, তৃষ্ণার্ত্ত ও বস্ত্রহীন রহিয়াছি, আর মুষ্ট্যাঘাতে আহত হইতেছি, ও অস্থির—বাস রহিয়াছি ; এবং স্বহস্তে কার্য্য পরিশ্রম করিতেছি ; নিন্দিত হইতে হইতে আশীর্ব্বাদ করিতেছি, তাড়িত হইতে হইতে সহ্য করিতেছি।” ১ করিন্থীয় ৪:১১, ১২ পদ। AABen 291.1

শ্রেষ্ঠ মানব শিক্ষকদের মধ্যে একজন, পৌল, সব চেয়ে নিচু কাজ থেকে সব চেয়ে উঁচু কাজ পর্যন্ত হৃষ্টচিত্তে সব দায়িত্ব পালন করেছেন। তার প্রভুর সেবা কাজে থাকাকালে অবস্থার প্রয়োজনে স্বেচ্ছায় তাকে তার ব্যবসায় শ্রম দিতে হয়েছে। যা হোক না কেন,যীশুর জন্য আত্মা লাভ করার বিশেষ AABen 291.2

সুযোগের উন্নতি করার জন্য তিনি তার জাগতিক কাজ সরিয়ে রাখতে সব সময় প্রস্তুত থেকেছেন। তার উদ্যম ও অধ্যবসায় অলস ও আরামঅন্বেষীদের জন্য তিরস্কারস্বরূপ। AABen 291.3

সেই সময় মন্ডলীর মধ্যে একটা ভাবানুভূতির প্রভাব বৃদ্ধি পাচ্ছিল, তা হল, যারা সম্পূর্ণভাবে প্রয়োজনীয় শারীরিক পরিশ্রম থেকে মুক্ত, কেবল তাদের দিয়েই কৃতকার্যতার সঙ্গে সুসমাচার প্রচার করা সম্ভব, পৌল এই প্রভাবের বিরূদ্ধে একটা আদর্শ স্থাপন করেন। অনেক জায়গায় যেখানে লোকেরা সুসমাচারের সত্যের সঙ্গে পরিচিত না, সেখানে উৎসর্গীকৃত সাধারণ সভ্যদের দিয়ে কী করা যায়, পৌল ব্যবহারোপযোগী পন্থায় দৃষ্টান্ত সহকারে তা ব্যাখ্যা করেছেন। ঈশ্বরের কাজের অগ্রগতির জন্য তারা কী করতে পারে এই ইচ্ছা বিশিষ্ট অনেক নম্র কর্মীরা পৌলের পন্থায় অনুপ্রাণিত হয়েছিল, আর সেই একই সময় তারা দৈনিক পরিশ্রম করে তাদের ভরণপোষণ জোগাড় করেছে। আক্কিলা ও প্রিষ্কিল্লাকে তাদের সব টুকু সময় সুসমাচারের সেবায় দিয়ে দেবার জন্য ডাকা হয়েছিল না, তবুও ঈশ্বর এই সরল শ্রমিকদের দিয়ে অতি সঠিকভাবে আপল্লোকে সত্যের পথ দেখিয়েছেন। সদাপ্রভু তাঁর উদ্দেশ্য সাধন AABen 291.4

করার জন্য বিভিন্ন উপায় ব্যবহার করেন, যখন বিশেষ তালন্ত বিশিষ্ট অনেককে সুসমাচার প্রচার ও শিক্ষাদানের জন্য তাদেও সমুদয় শক্তি নিয়োজিত করতে মনোনীত করেছেন, তখন আরও অনেককে, যাদের ওপর মানুষের হস্তার্পণ করে অভিষেক করা হয় নি, তাদের আত্মালাভের কাজে গুরুত্বপূর্ণ অংশ গ্রহণ করতে ডাকা হয়েছে। AABen 292.1

আত্ম—নির্ভরশীল সুসমাচার প্রচারকের জন্য বিরাট ক্ষেত্র খোলা রয়েছে। পরিচর্যা কাজের সাথে সময়ের কিছু অংশ কোন রকম কায়িক পরিশ্রমে ব্যয় করে অনেকে অনেক মূল্যবান অভিজ্ঞতা লাভ করতে পারে,আর এই পদ্ধতিতে চাহিদাপূর্ণ ক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ সেবার জন্য দক্ষ কার্যকারী গঠন করা যেতে পারে। AABen 292.2

আত্মত্যাগকারী ঈশ্বরের দাস যে বাক্য ও ধর্মতত্বের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে সে অন্তরে একটা ভারী বোঝা বয়ে বেড়ায়। সে ঘন্টা মেপে কাজ করে না। তার বেতন তার কাজকে প্রভাবিত করে না, বা সে অসুবিধাজনক অবস্থার মধ্যে দায়িত্ব ছেড়ে চলে আসে না। স্বর্গ থেকে সে নিয়োগ পেয়েছে, আর তার কাছে অর্পিত কাজ শেষ হয়ে গেলে পুরস্কারের জন্য সে স্বর্গের দিকে তাকিয়ে থাকে। AABen 292.3

ঈশ্বরের পরিকল্পনা এই যে, এই প্রকারের সব কার্যকারীকে অনর্থক ভবিষ্যৎ বিষয়ে ভয় ও অনিশ্চয়তাবোধ থেকে মুক্ত রাখতে হবে, যেন তারা তীমথিয়কে দেওয়া পৌলের নির্দেশ পালন করার পূর্ণ সুযোগ লাভ করতে পারে। “এ সকল বিষয়ে চিন্তা কর, এ সকলে স্থিতি কর, যেন তোমার উন্নতি সকলের প্রত্যক্ষ হয়।” ১ তীমথিয় ৪:১৫ পদ। তাদের শরীর ও মন সতেজ রাখার জন্য তারা যদিও যথেষ্ট অনুশীলন করতে যত্নশীল হবে, তবুও ঈশ্বরের পরিকল্পনা এই না যে তাদের অধিকাংশ সময় জাগতিক কাজে ব্যয় করতে বাধ্য করা হবে। AABen 292.4

এই সব বিশ্বস্ত কার্যকারীরা, যদিও সুসমাচারের জন্য ব্যয় করতে ও ব্যয়িত হতে ইচ্ছুক, তবুও তারা প্রলোভনের উর্দ্ধে না। মন্ডলীর পক্ষ থেকে তাদের যথোচিত আর্থিক সমর্থন দিতে ব্যর্থ হওয়ার কারণে যখন তারা দুশ্চিন্তায় ভারাক্রান্ত ও বাধাপ্রাপ্ত হয়, প্রলোভনকারী তখন কেউ কেউকে হিংস্রভাবে চারিদিক থেকে অবরোধ করে ফেলে। যখন তারা দেখে যে তাদের পরিশ্রমকে এত হালকা ভাবে মূল্যায়ন করা হচ্ছে, তারা তখন হতাশ হয়ে পড়ে। একথা সত্যি যে, তারা তাদের ন্যায্য পুরস্কার পাবার জন্য বিচার দিনের দিকে চেয়ে থাকবে,আর এই আশাই তাদের উজ্জিবিত রাখবে ; এর মধ্যে তাদের পরিবারের অন্নবস্ত্রেরও প্রয়োজন আছে। তারা মনে করতে পারে, যদি তাদের ঐশ্বরিক মনোনয়ন থেকে অব্যহতি দেওয়া হত তাহলে তারা স্বেচ্ছায় তাদের হাত দিয়ে কাজ করতে পারত। যারা তাদের যথেষ্ট অর্থ সরবরাহ করার কথা, তাদের অদূরদর্শিতা সত্বেও তারা উপলব্ধি করে যে তাদের সময়টুকু ঈশ্বরের অধিকারে। তারা কাজের মধ্যে প্রবেশ করার জন্য প্রলোভনের ঊর্দ্ধে ওঠে যার দ্বারা তারা অচিরেই অভাবের ধরাছোঁয়ার বাইরে নিজেদের স্থাপন করে, আর তারা তাদের কাছে জীবনের চেয়ে প্রিয় কাজের অগ্রগতির জন্য কাজ করতে আরম্ভ করে। এই কাজ করার জন্য তাদের হয়ত, পৌলের আদর্শ অনুসরণ করতে বাধ্য হয় আর কিছু সময়ের জন্য তাদের পরিচর্যা কাজের সাথে সাথে শারীরিক পরিশ্রম করতেও লেগে যায়। এই কাজ তারা তাদের নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য করে না, কিন্তু এই পৃথিবীতে ঈশ্বরের কাজের স্বার্থেই করে। AABen 292.5

শক্তিশালী ও দৃঢ় কাজ করার জন্য অর্থ না থাকায়, কোন কোন সময় ঈশ্বরের দাসগণের পক্ষে করণীয় প্রয়োজনীয় কাজ করা সম্ভব হয় না। অনেকে ভয় পায় যে, তাদের আয়ত্তে¡ যে সুযোগ—সুবিধা রয়েছে তা দিয়ে তাদের যা করা কর্তব্য তারা তা করতে পারবে না। কিন্তু তারা যদি বিশ্বাসে অগ্রসর হয়, ঈশ্বরের পরিত্রাণ প্রকাশিত হবে, আর তাদের প্রচেষ্টা উত্তর উত্তর বৃদ্ধি পাবে। যিনি তাঁর অনুগামীদের সমগ্র পৃথিবীতে যেতে আদেশ দিয়েছেন তিনি প্রত্যেক কার্যকারীকে, যারা তার আদেশের বাধ্য হয়ে তাঁর বার্তা প্রচার করার সুযোগ গ্রহণ করবে। AABen 293.1

সদাপ্রভু তাঁর কাজ গড়ে তোলার জন্য সব সময় তাঁর দাসগণের কাছে সব পরিকল্পনা ব্যাখ্যা করে বলেন না। তিনি কখনো কখনো তাঁর লোকদের আত্মবিশ্বাস পরীক্ষা করার জন্য কতগুলো পরিস্থিতি উপস্থিত করেন যা তাদের বিশ্বাসে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে বাধ্য করে। প্রায়ই তিনি তাদের সঙ্কীর্ণ ও পীড়াদায়ক জায়গায় নিয়ে আসেন, আর তাদের সামনে অগ্রসর হতে বলেন যখন তাদের মনে হয় তাদের পা যর্দনের জল ছুঁয়ে গিয়েছে। ঠিক এই সময়, যখন তাঁর দাসগণের প্রার্থনা ঐকান্তিক বিশ্বাসে তাঁর কাছে উত্থিত হয়, তখন ঈশ্বর তাদের সামনে পথ খুলে দেন আর তাদের বের করে একটা খোলা জায়গায় নিয়ে আসেন। AABen 293.2

যখন ঈশ্বরের বার্তাবাহকেরা সদাপ্রভুর দ্রাক্ষাক্ষেত্রের চাহিদাপূর্ণ অংশের প্রতি তাদের দায়িত্ব বুঝতে পারবে, ও প্রভুর আত্মায় আত্মা লাভের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে, ঈশ্বরের দূতগণ তাদেও সামনে পথ প্রস্তুত করে দেবে, আর কাজ এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্য অর্থের সংস্থান করবে। যারা আলোকপ্রাপ্ত তারা তাদের পক্ষে কাজ করতে কাজের ব্যযভার বহন করার জন্য মুক্তহস্তে দান করবে। তারা প্রত্যেক সাহায্যের ডাকে উদারভাবে সাড়া দেবে, আর ঈশ্বরের আত্মা তাদের অন্তরের ওপর কাজ করবেন যেন তারা শুধু দেশের ভেতরেই না কিন্তু দেশের বাইরেও সদাপ্রভুর কাজের পোষণ করে। এইভাবে অন্যান্য জায়গায়ও শ্রমরত কর্মীদের মধ্যে শক্তি আসবে, আর সদাপ্রভুর কাজ তাঁর নিজের নির্দ্ধারিত পথে অগ্রসর হবে। AABen 294.1

ইংরাজী পান্ডূলিপি ২১৭ পৃষ্ঠা AABen 294.2