প্রেরিতগণের কার্য-বিবরণ

32/59

৩১শ অধ্যায়—বার্ত্তায় মনোযোগী

এই অধ্যায়টা করিন্থীয়দের প্রতি প্রেরিত পৌলের দ্বিতীয় পত্রের উপর ভিত্তিযুক্ত।

ইফিষ থেকে পৌল আরও একটা মিশনারী যাত্রা সুর” করলেন, এই সময় তিনি আশা করেছিলেন যে তিনি আর একবার ইউরোপে তার পূর্বেকার কর্মস্থলগুলোতে ঘুরে আসবেন। ত্রোয়াতে তিনি “খ্রীষ্টের সুসমাচারের জন্য” কিছুদিন অপেক্ষা করে দেখলেন যে সেখানে তার বার্ত্তা শোনার জন্য কিছু লোক প্রস্তুত। এখানে কাজ করার পরে তিনি বলেছিলেন, “আর প্রভুতে আমার সম্মুখে একটী দ্বার খোলা হইয়াছিল।” কিন্তু ত্রোয়াতে তার প্রচেষ্টা সফল হলেও তিনি সেখানে বেশীদিন থাকতে পারেন নি। “সমস্ত মণ্ডলীর চিন্তা,” বিশেষভাবে করিন্থীয় মণ্ডলী তার অন্তরে চেপে বসেছিল। ত্রোয়াতে তিনি আশা করেছিলেন যে সেখানে তীতের দেখা পাবেন, আর তার কাছ থেকে করিন্থীয় ভ্রাতৃগণের কাছে পাঠানো উপদেশ ও তিরস্কারবাণী তারা কীভাবে গ্রহণ করল সে বিষয়ে জানবেন। কিন্তু এ ব্যাপারে তিনি নির“ৎসাহিত হলেন। এই অভিজ্ঞতা সম্পর্কে তিনি লিখেছেন, “তখন অমার ভ্রাতা তীতকে না পাওয়াতে আমার আত্মায় কিছু আরাম পাই নাই।” সে জন্য তিনি ত্রোয়া ছেড়ে পার হয়ে মাকিদনিয়ায় চলে যান , আর সেখানে ফিলিপীতে তিনি তীমথীয়ের দেখা পান। AABen 265.1

এই সময় করিন্থীয় মণ্ডলীর সম্পর্কে দুশ্চিন্তায় , পৌল সব কিছু ভাল আশা করেছেন; তবুও, তার উপদেশ ও তিরস্কার তারা ভুল বুঝতে পারে মনে করে, মাঝে মাঝে তার অন্তরের ওপর দিয়ে গভীর দুঃখের অনুভূতির স্রোত বয়ে যেত, পওে তিনি লিখেছেন, “তখনও আমাদের মাংসের কিছুমাত্র শান্তি ছিল না; কিন্তু সর্ব্বদিকে ক্লিষ্ট হইতেছিলাম; বাহিওে যুদ্ধ, অন্তরে ভয় ছিল। তথাপি ঈশ্বও, যিনি অবনতদিগকে সান্ত্বনা করেন, তিনি তীতের আগমন দ্বারা আমাদিগকে সন্ত্বনা করিলেন।” AABen 265.2

এই বিশ্বস্ত সংবাদবাহক একটা আনন্দ সংবাদ নিয়ে এল যে, করিন্থীয় বিশ্বাসীদের মধ্যে একটা চমৎকার পরিবর্ত্তন সংঘটিত হয়েছে। অনেকে পৌলের চিঠিতে লেখা নির্দ্দেশ গ্রহণ করেছে আর তাদেও পাপের জন্য অনতপ্ত হয়েছে। তাদের জীবন আর খ্রীষ্টধর্মের জন্য অবমাননাকর নয়, কিন্তু বাস্তব ঈশ্বরপ্রেমিকদের সপক্ষে একটা শক্তিশালী প্রভাব বিস্তার করতে পেরেছে। AABen 266.1

আনন্দে পরিপূর্ণ হয়ে,পৌল তাদের মধ্যে যে মঙ্গল সাধিত হয়েছে তাতে তার অন্তরের আনন্দ প্রকাশ করে তিনি আরও একটা চিঠি পাঠালেন: “কেননা যদিও আমার পত্র দ্বারা তোমাদিগকে দুঃখিত করিয়াছিলাম, তবু অনুশোচনা করি না—যদিও অনুশোচনা করিয়াছিলাম।” তার কথা অগ্রাহ্য হবে বলে তিনি যখন ভয়ে যাতনাগ্রস্তহচ্ছিলেন, তখন তিনি তার সুস্পষ্ট ও কঠোরভাবে চিঠি লেখার জন্য কখনও কখনও আফসোসও করেছেন। তিনি আরও বলেন, “এখন আমি আনন্দ করিতেছি; তোমাদের মনোদুঃখ হইয়াছে, সে জন্য নয়, কিন্তু তোমাদেও মনোদুঃখ মনপরিবর্ত্তন—জনক হইয়াছে, সেই জন্য; কারণ ঈশ্বরের মতানুযায়ী মনোদুঃখ তোমাদের হইয়াছে, যেন আমাদের দ্বারা কোন বিষয়ে তোমাদের ক্ষতি না হয়। কারণ ঈশ্বরের মতানুযায়ী যে মনোদুঃখ, তাহা পরিত্রাণজনক এমন মনপরিবর্ত্তন উৎপন্ন কওে, যাহা অনুশোচনীয় নয়।” সেই অনুশোচনা যা ঐশ্বরিক অনুগ্রহের প্রভাবে অন্তরে উৎপন্ন হয়, তা পাপ স্বীকার ও পাপ পরিত্যাগের দিকে পরিচালিত করে। প্রেরিত যে রকম ফলের কথা বলেছেন, করিন্থীয় বিশ্বাসীদের জীবনে সে রকম ফল দেখা গিয়েছিল। “তাহা তোমাদের পক্ষে কত যত্ন সাধন করিয়াছে ! আর কেমন দোষপ্রক্ষালন, আর কেমন বিরক্তি, আর কেমন ভয, আর কেমন অনুরাগ, আর কেমন উদ্যোগ, আর কেমন প্রতিকার।” AABen 266.2

কিছুদিন যাবৎ পৌল তার অন্তরে মণ্ডলীর জন্য একটা বোঝা বয়ে বেড়াচ্ছিলেন—এ বোঝা এত ভারি ছিল যে তিনি তা আর বইতে পারছিলেন না। মিথ্যা শিক্ষকেরা সুসমাচারের সত্যের বদলে তাদের ধর্মতত্ত¡ গ্রহণ করতে প্ররোচিত করে বিশ্বাসীদের মধ্যে তার প্রভাব ধ্বংশ করার প্রয়াস পাচিছল। যে জটিল অবস্থা ও হতাশা পৌলকে ঘিওে রেখেছিল তা তার কথায় প্রকাশ পেয়েছে, “ফলতঃ আত্যন্তিক দুঃখভারে আমরা শক্তির অতিরিক্তরূপে ভারগ্রস্ত হইয়া পড়িয়াছিলাম।” AABen 266.3

কিন্তু এখন দুশ্চিন্তার একটা কারণ দূরীভূত হয়েছিল। করিন্থীয়দের কাছে পাঠানো চিঠি তারা গ্রহণ করেছে এই সংবাদে, পৌল উল্লাসে ফেটে পড়লেন: তিনি বললেন, “ধন্য আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের ঈশ্বর ও পিতা ; তিনিই করূণা—সমষ্টির পিতা এবং সমস্ত সান্ত্বনার ঈশ্বর ; তিনি আমাদের সমস্ত ক্লেশের মধ্যে আমাদিগকে সান্ত্বনা করেন, যেন আমরা নিজে ঈশ্বর—দত্ত যে সান্ত্বনায় সান্ত্বনা—প্রাপ্ত হই, সেইসান্ত্বনা দ্বারা সমস্ত ক্লেশের পাত্রদিগকে সান্ত্বনা করিতে পারি। কেননা খ্রীষ্টের দুঃখভোগ যেমন আমাদেও প্রতি উপচিয়া পড়ে, তেমনি খ্রীষ্ট দ্বারা আমাদের সান্ত্বনাও উপচিয়া পড়ে। আর আমরা যদি ক্লেশ পাই, তবে তাহা তোমাদের সান্ত্বনার ও পরিত্রাণের নিমিত্ত ; অথবা যদি সান্ত্বনা পাই, তবে তাহা তোমাদেও সান্ত্বনার নিমিত্ত ; সেই সান্ত্বনা সেই একই প্রকার ধৈর্য্যযুক্ত দুঃখভোগে কার্য্য সাধন করিতেছে, যে প্রকার দুঃখ আমরার ভোগ করিতেছি। আর তোমাদের বিষয়ে আমাদেরপ্রত্যাশা দৃঢ় ; কেননা আমরা জানি, তোমাদের যেমন দুঃখভোগের, তেমনি সান্ত্বনারও সহভাগী।” AABen 267.1

তাদের পুনঃমনপরিবর্ত্তন ও অনুগ্রহে বৃদ্ধিলাভ করার জন্য আনন্দ প্রকাশ করতে গিয়ে , পৌল অন্তর ও জীবন পরিবর্ত্তনের জন্য সমস্ত প্রশংসা ঈশ্বরের প্রতি আরোপ করেন। তিনি উল্লাস কওে বলেন, “আর ধন্য ঈশ্বও, তিনি সর্ব্বদা আমাদিগকে লইয়া খ্রীষ্টে বিজয়—যাত্রা করেন, এবং তাঁহার সম্বন্ধীয় জ্ঞানের সুগন্ধ আমাদের দ্বারা সর্ব্বস্থানে প্রকাশ করেন : কারণ যাহারা পরিত্রাণ পাইতেছে ও যাহারা বিনাশ পাইতেছে, উভয়ের কাছে আমরা ঈশ্বরের পক্ষে খ্রীষ্টের সুগন্ধস্বরূপ।” যুদ্ধে বিজয়ী সেনাপতির যুদ্ধের থেকে ফিরে আসার সময় একদল বন্দীর মিছিল নিয়ে আসা সেই সময়ের প্রথা ছিল। এই রকম অনুষ্ঠানে সুগন্ধীবাহকদের নিযুক্ত করা হত, আর যখন সৈন্যরা বিজয় উল্লাসে ঘরে ফিরত তখন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বন্দীদের ওপর সুগন্ধী, মৃত্যুর সুগন্ধী ছিটিয়ে দিত, এতে বুঝানো হত যে তাদের মৃত্যুদণ্ডের সময় গনিয়ে এসেছে ; কিন্তু সেই সব বন্দীরা যারা তাদের বন্দীকর্ত্তাদের কাছে অনুগ্রহ পেয়েছিল আর যাদের জীবন বাঁচিয়ে দেওয়া হয়েছিল, তাদের কাছে এই সুগন্ধী জীবনের সুগন্ধী ছিল, অর তা তাদেও বুঝিয়ে দিত যে তাদের মুক্তির সময় এসে পড়েছে। AABen 267.2

পৌল এখন বিশ্বাস ও প্রত্যাশায় ভরপুর ছিলেন। তিনি অনুভব করলেন যে, করিন্থে ঈশ্বরের কাজের ওপর শয়তান আর বিজয় লাভ করতে পারবে না, আর প্রশংসাবাণীতে তিনি তার অন্তরের কৃতজ্ঞতা ঢেলে দিলেন। তিনি ও তার সহকর্মীরা খ্রীষ্ট ও সত্যেও শত্রুদের ওপর তাদের বিজয় লাভ, নতুন উদ্যমে ত্রাণকর্তার জ্ঞান প্রসারিত করার জন্য গিয়ে উজ্জাপন করবেন। সুগন্ধীদ্রব্যেও মত সুসমাচারের সুগন্ধ পৃথিবীর চারিদিকে ছড়িয়ে দিতে হবে। যারা খ্রীষ্টকে গ্রহণ করবে, এই বার্ত্তা তাদের জীবনে জীবনের সুগন্ধরূপ হবে ; কিন্তু যারা অবিশ্বাসের মধ্যে পড়ে থাকতে থাকবে, তাদের কাছে এই বার্ত্তা মৃত্যুর জন্য মৃত্যুজনক গন্ধ হবে। AABen 267.3

কাজের অভিভূত করা বিশালত্ব অনুভব কওে পৌল বললেন, “এই সকলের জন্য উপযুক্ত কে ?” কে খ্রীষ্টকে এমন ভাবে প্রচার করতে পারবে যে তাঁর শত্রুরা বার্ত্তাবাহক বা তাদের দ্বারা বাহিত বার্ত্তাকে তুচ্ছজ্ঞান করার কোন সঙ্গত কারণ খুঁজে পাবে না ? পৌল বিশ্বাসীদের ওপর সুসমাচার—সেবাকাজের দায়িত্বের গুর“ত্বপূর্ণতা বদ্ধমূল করতে চেয়েছিলেন। বাক্য প্রচারে বিশ্বস্ততার সঙ্গে পবিত্র ও সঙ্গতিপূর্ণ জীবনই কেবল সেবাকারীদের প্রচেষ্টাকে ঈশ্বরের কাছে গ্রহণযোগ্য ও আত্মাগণের কাছে লাভজনক করে তুলতে পারে। আমাদেও সময়ের সেবাকারীরা, কাজের বিশালতার কথা চিন্তা করে, হয়ত প্রেরিতের সঙ্গে বলে উঠবে, “এই সকলের জন্য উপযুক্ত কে ?” AABen 268.1

সেখানে অনেকে ছিল যারা পৌলকে তার প্রথম চিঠি লেখার জন্য আত্ম—প্রশংসার দোষে দোষারোপ করেছিল। এ বিষয়ে উলে—খ করে পৌল মণ্ডলীর সদস্যদের জিজ্ঞেস করেন যে তারাও তার উদ্দেশ্য সম্পর্কে এ রকম বিচার করে কিনা। তিনি প্রশ্ন করলেন, “আমরা কি পুনর্ব্বার আপনাদের প্রশংসা করিতে আরম্ভ করিতেছি ? অথবা তোমাদের প্রতি কিম্বা তোমাদের হইতে সুখ্যাতি—পত্রে কি অন্য কাহারও কাহারও ন্যায় আমাদের প্রয়োজন আছে ? বিশ্বাসীরা এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় চলে গেলে প্রায়ই তারা তাদের সঙ্গে করে, পূর্বে তারা যে মণ্ডলীর সঙ্গে সংযুক্ত ছিল সেই মণ্ডলীর কাছ থেকে প্রশংসাপত্র নিয়ে যেত ; কিন্তু নামকরা কার্যকারী বা এই সব মণ্ডলীর প্রতিষ্ঠাতাদের সে বকম প্রশংসাপত্রের প্রয়োজন হত না। করিন্থীয় বিশ্বাসীরা যাদের মূর্ত্তিপূজা থেকে সুসমাচারের বিশ্বাসে পরিচালিত করা হয়েছিল তারা নিজেরাই পৌলের প্রয়োজনীয় সব প্রশংসাপত্র ছিল। তাদের সত্য গ্রহণ, ও তাদের জীবনে ঘটিত পরিবর্তন, খ্রীষ্টের সেবকরূপে তার উপদেশদান, তিরস্কার, ও পরামর্শদানের ক্ষমতা ও তার পরিশ্রমে বিশ্বস্ততা, সরব সাক্ষ্য বহন করেছিল। AABen 268.2

পৌল করিন্থীয় ভ্রাতৃগণকে তার প্রশংসাপত্ররূপে বিবেচনা করতেন। “তোমরাই আমাদের পত্র, আমাদেও হৃদয়ে লিখিত পত্র, যাহা সকল মনুষ্য জানে ও পাঠ করে ; ফলতঃ তোমরা খ্রীষ্টের পত্র, আমাদেও পরিচর্য্যায় সাধিত পত্র বলিয়া প্রকাশ পাইতেছ ; তাহা কালী দিয়া নয়, কিন্তু জীবন্ত ঈশ্বরের আত্ম্ দিয়া, প্রস্তর—ফলকে নয়, কিন্তু মাংসময় হৃদয়—ফলকে লিখিত হইয়াছে।” AABen 269.1

একজন সেবাকারীকে যে ঈশ্বর সেবাকাজে ডেকেছেন, পাপীদের মনপরিবর্তন ও সত্যের মাধ্যমে তাদের পবিত্রীকরণই সব চেয়ে জোরালো প্রমান। যারা পরিবর্তিত হয়েছে তাদের হৃদয়ের ওপর তার প্রেরিত পদের প্রমান লিখিত আছে, আর তাদের নবীনীকৃত জীবন তার সাক্ষ্য বহন করে। খ্রীষ্ট, গৌরবের প্রত্যাশা, ভেতরে গড়ে উঠতে থাকেন। একজন সেবাকারী তার কাজের এই সব মুদ্রাঙ্কণ দেখে প্রচুরভাবে শক্তিমন্ত হন। AABen 269.2

পৌলের পরিশ্রমের জন্য করিন্থীয় মণ্ডলী যেমন সাক্ষ্য বহন করেছিল, বর্তমানে খ্রীষ্টের সেবাকারীদেরও সেই রকম সাক্ষ্য পাওয়া উচিৎ। যদিও এই যুগে প্রচুর প্রচারক রয়েছেন, কিন্তু, খ্রীষ্টের অন্তরে অবস্থিত প্রেমে পরিপূর্ণ, যোগ্য, ও পবিত্র সেবাকারীর অনেক অভাব রয়েছে। অনেকে যারা খ্রীষ্টের ধর্মধারী, তারা অহংঙ্কার, আত্ম—তুষ্টিতা, জাগতিকতার প্রতি প্রেম, অন্যেও দোষ খুঁজে বেড়ানো, তিক্ততা, পরশ্রীকাতরতা বা ঈর্ষার ফল বহন করে বেড়াচ্ছে। তাদের জীবন ত্রাণকর্তার জীবন থেকে সম্পূর্ণ বিপরীত, অনেক সময় তারা যে সেবাকারীর পরিশ্রমে পরিবর্তিত হয়েছিল, সেই চরিত্রের প্রতি দুঃখপূর্ণ সাক্ষ্য বহন করে। AABen 269.3

সুসমাচারের একজন সফল সেবাকারীরূপে ঈশ্বরের কাছে গ্রহণযোগ্য হওয়ার চেয়ে বড় সম্মান আর কোন মানুষের হতে পারে না। কিন্তু প্রভু যাকে তাঁর কাজের জন্য শক্তি ও সফলতা দিয়ে আশীর্ব্বাদ করেন, সে গর্ব্ব করে না। তাদের নিজেদের কোন শক্তি নাই বুঝতে পেরে তারা তাঁর ওপর তাদের সব নির্ভরতার জন্য কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে। পৌলের সাথে তারাও বলে, “আমরা যে আপনারাই কিছুর মিমাংসা করিতে নিজ গুণে উপযুক্ত, তাহা নয় ; কিস্তু আমাদের উপযোগিতা ঈশ্বর হইতে উৎপন্ন ; তিনিই আমাদিগকে নূতন নিয়মের পরিচারক, অক্ষরের নয়, কিন্তু আত্মার পরিচারক হইবার উপযুক্তও করিয়াছেন।” একজন খাঁটি পরিচারক প্রভুর কাজ করে। সে তার কাজের গুর“ত্ব অনুভব করে, এ কথা মনে করে যে খ্রীষ্ট যেমন ধরে রাখতেন সেও তেমন মণ্ডলী ও জগতের সঙ্গে সম্পর্ক ধরে রাখবে। সে পাপীদের একটা উন্নততর ও উচ্চতর জীবনে পরিচালিত করতে অক্লান্ত পরিশ্রম করবে যেন তারা পরাভূতকারীর পুরষ্কার পেতে পারে। তার ওষ্ঠাধর বেদীর থেকে নেওয়া জ্বলন্ত অঙ্গারের স্পর্শ দেওয়া, আর সে যীশুকে পাপীর একমাত্র প্রত্যাশারূপে তুলে ধরে। যারা তার কথা শোনে তারা বুঝতে পাওে যে, সে ঐকান্তিক, ও সার্থক প্রার্থনায় ঈশ্বরের কাছে আকর্ষিত হয়েছে। পবিত্র আত্মা তার ওপর অধিষ্ঠান করেছেন, আর তার আত্মা জীবনসাধক স্বর্গীয় অগ্নি অনুভব করেছে আর সে আধ্যাতিক বস্তুগুলোকে আধ্যাতিকতা দিয়ে তুলনা করতে সক্ষম। তাকে শয়তানের দূর্গসমূহকে ভেঙ্গে ফেলার শক্তি দেওয়া হয়েছে। তার ঈশ্বরের প্রেম উপস্থ্পনায় অনেক হৃদয় চূর্ণ হবে, আর অনেকে এ কথা জিজ্ঞেস করতে পরিচালিত হবে, “পরিত্রাণ পাইবার জন্য আমাকে কি করিতে হইবে ?” AABen 269.4

“এই জন্য আমরা এই পরিচর্য্যা—পদ প্রাপ্ত হওয়ায়, যেরূপে দয়া পাইয়াছি, তদনুসারে নিরুৎসাহ হই না ; বরং লজ্জার গুপাত কার্য্যসমূহে জলাঞ্জলি দিয়াছি, ধূর্ত্ততায় চলি না, ঈশ্বরের বাক্যে ভাঁজ দিই না, কিন্তু সত্য প্রকাশ দ্বারা ঈশ্বরের সাক্ষাতে মনুষ্যমাত্রের সংবেদের কাছে আপনাদিগকে যোগ্যপাত্র দেখাইতেছি। কিন্তু আমাদে সুসমাচার যদি আবৃত থাকে, তবে যাহারা বিনাশ পাইতেছে, তাহাদেরই কাছে আবৃত থাকে। তাহাদের মধ্যে এই যুগের দেব অবিশ্বাসীদেও মন অন্ধ করিয়াছে, যেন ঈশ্বরের প্রতিমূর্ত্তি যে খ্রীষ্ট, তাঁহার গৌরবের সুসমাচার—দীপ্তি তাঁহাদেও প্রতি উদয় না হয়। বস্তুতঃ আমরা আপনাদিগকে নয়, কিন্তু খ্রীষ্ট যীশুকেই প্রভু বলিয়া প্রচার করিতেছি, এবং আপনাদিগকে যীশুর নিমিত্ত তোমাদেও দাস বলিয়া দেখাইতেছি। কারণ যে ঈশ্বও বলিয়াছিলেন, ‘অন্ধকারের মধ্য হইতে দীপ্তি প্রকাশিত হইবে,’ তিনিআ আমাদেও হৃদয়ে দীপ্তি প্রকাশ করিলেন, যেন যীশু খ্রীষ্টের মুখমণ্ডলে ঈশ্বরের গৌরবের জ্ঞান—দীপ্তি প্রকাশ পায়।” AABen 270.1

খ্রীষ্টের পরিচারকরূপে তার কাছে পবিত্র আস্থা গচ্ছিত রেখে ঈশ্বরের অনুগ্রহ ও দয়া দেখানোকে পৌল এই ভাবে বড় করে দেখিয়েছেন। ঈশ্বরের প্রচুর দয়ার গুণে তিনি ও তার ভ্রাতৃগণ কষ্ট, দুর্দ্দশা, ও বিপদ থেকে সুরক্ষিত হয়েছেন। তাদের শ্রোতাদের আকাক্সখার সাথে মিল রেখে তারা বিশ্বাস ও শিক্ষাকে রঊপ দেন নি। অথবা তাদের শিক্ষাকে বেশী আকর্ষণীয় করার জন্য পরিত্রাণের প্রয়োজনীয় সত্যসমূহকে গোপন রাখেন নি। আত্মাগণের মনপরিবর্তন ওবিশ্বাস উৎপাদনের জন্য প্রার্থনা করে তারা, সরলও সুস্পষ্টভাবে সত্য উপস্থাপন করেছিলেন। তারা তাদের আচরণকে তাদের শিক্ষার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ রাখার চেষ্টা করেছেন, যেন যে সত্য তারা উপস্থাপন করেছেন তা যেন নিজে থেকে মানুষের বিবেকের কাছে প্রশংসা পেতে পারে। AABen 270.2

তিনি আরও বললেন, “কিন্তু এই ধন মৃন্ময় পাত্রে করিয়া আমরা ধারণ করিতেছি, যেন পরাক্রমের উৎকর্ষ ঈশ্বরের হয়, আমাদেও হইতে নয়।” ঈশ্বও হয়তো নিষ্পাপ দূতগণের মাধ্যমে তাঁর সত্য ঘোষণা করতে পারতেন, কিন্তু এটা তাঁর পরিকল্পনা না। মানুষেরা দুর্বলতা দ্বারা পরিবেষ্টিত, তাঁর পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে তিনি সেই মানবজাতিকে যন্ত্ররূপে মনোনীত করেছেন। এই অমূল্য ধন মাটির পাত্রে রাখা হয়েছে। মানুষের মাধ্যমে তাঁর আশীর্ব্বাদ পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিতে হবে। তাদের মাধ্যমেই তাঁর গৌরব পাপের অন্ধকারের মধ্যে আলো দান করবে। প্রেমের সেবাকাজের দ্বারা তারা পাপী ও অভাবীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে, আর তাদের ক্রুশের কাছে নিয়ে আসবে। আর তাদের সব কাজে যিনি সব কিছুর উচুঁতে আর সব কিছুর ওপরে আছেন, তাঁকে গৌরব, সম্মান, ও প্রশংসা পদান করবে। AABen 271.1

তার নিজের অভিজ্ঞতার কথা উলে—খ করে, পৌল দেখান যেখ্রীষ্টের সেবাকাজ গ্রহণ কওে তিনি স্বার্থপর উদ্দেশ্য দ্বারা পরিচালিত হন নি, কারণ তার যাত্রাপথ কষ্ট ও প্রলোভনে ঘেরা ছিল। তিনি লিখেছিলেন, “আমরা সর্ব্বপ্রকাওে ক্লিষ্ট হইতেছি, কিন্তু সঙ্কটাপন্ন হই না ; তাড়িত হইতেছি, কিন্তু পরিত্যক্ত হই না ; অধঃক্ষিপ্ত হইতেছি, কিন্তু বিনষ্ট হই না। আমরা সর্ব্বদা এই দেহে যীশুর মৃত্যু বহন করিয়া বেড়াইতেছি, যেন যীশুর জীবনও আমাদেও দেহে প্রকাশ পায়।” AABen 271.2

পৌল তার ভ্রাতৃগণকে এ কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন যে, খ্রীষ্টের বার্তাবাহকরূপে তিনি ও তার সহকর্মীরা সব সময় বিপদেও মধ্যে আছেন। যে কষ্ট তারা ভোগ করছিলেন, তাতে তাদের শক্তি ক্ষয় করে ফেলছিল। তিনি লিখেছিলেন, “কেননা আমরা জীবিত হইয়াও যীশুর জন্য সর্ব্বদাই মৃত্যু—মুখে সমর্পিত হইতেছি, যেন আমাদেও মর্ত্ত্য মাংসে যীশুর জীবনও প্রকাশ পায়। এইরূপে আমাদিগেতে মৃত্যু, কিন্তু তোমাদিগেতে জীবন কার্য্য স্ধন করিতেছে।” অন্নবস্ত্রাদির অভাবে, ও খাঁটুনীর জন্য শরীরিক ভাবে কষ্ট পেলেও খ্রীষ্টের এই সেবাকারীগণ তাঁর মৃত্যুর সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলছিলেন। করিন্থীয়দের আধ্যাত্মিক জীবনে ও স্বাস্থ্যে ফিরিয়ে আনা তাদের মধ্যে মৃত্যুজনক কাজ করছিল, যারা সত্যে বিশ্বাস কওে অনন্ত জীবনে অংশীদার হয়েছিল। এ কথা স্মরণে রেখে, যীশুর অনুগামীরা সব সময় সতর্ক থাকবে যেন, অবহেলা ও অনানুগত্যতা দিয়ে তারা এই সব কর্মীদের যাতনা বৃদ্ধি না করে। AABen 271.3

পৌল আরও বলেছেন, “পরন্তু বিশ্বাসের সেই আত্মা আমাদের আছে, যেরূপ লেখা আছে, “আমি বিশ্বাস করিলাম, তাই কথা কহিলাম ; তেমনি আমরাও বিশ্বাস করিতেছি, তাই কথাও কহিতেছি।” তার ওপর গচিছত সত্যের বাস্তবতা সম্পর্কে সম্পূর্ণ আস্থাবান হওয়ায় কোন কিছু পৌলকে ঈশ্বরের বাক্য প্রতারণামূলক ভাবে ব্যবহার বা তার অন্তরের বিশ্বাসকে গোপন রাখতে উৎসাহী করতে পারত না। জগতের মতামতের সঙ্গে একমত হয়ে তিনি ধন, মান, অথবা আমোদ—প্রমোদ ক্রয় করতেন না। করিন্থীয়দের কাছে যে সত্য তিনি প্রচার করেছিলেন সে জন্য তিনি যদিও সবসময় সাক্ষ্যমর হবার ভয়ে ছিলেন, তথাপি তিনি আতঙ্কিত ছিলেন না, কারণ তিনি জানতেন যে, যিনি মরেছিলেন আর আবার উঠেছিলেন, তিনি তাকে কবর থেকে তুলবেন আর পিতার কাছে উপস্থিত করবেন। AABen 272.1

তিনি বলেছিলেন, “কারণ সকলই তোমাদের নিমিত্ত, যেন ঈশ্বরের অনুগ্রহ অধিক লোকের দ্বারা বহুলীকৃত হইয়া ঈশ্বরের গৌরবার্থে প্রচুর ধন্যবাদের কারণ হইয়া উঠে।” প্রেরিত আত্ম—মর্যাদা বৃদ্ধির জন্য সুসমাচার প্রচার করেন নি। আত্মাগণকে উদ্ধারের আশা এই কাজে তাদের জীবন উৎসর্গ করতে পরিচালিত করেছিল। আর এই আশা তাদের বিপদ ও প্রকৃত নির্যাতনের হুমকির মুখেও তাদের কাজ করা থেকে বিরত রাখতে পারে নি। AABen 272.2

পৌল বলেন, “এই জন্য আমরা নির“ৎসাহ হই না, কিন্তু আমাদেও বাহ্য মনুষ্য যদ্যপি ক্ষীণ হইতেছে, তথাপি আন্তরিক মনুষ্য দিন দিন নূতনীকৃত হইতেছে।” পৌল শত্র“ও শক্তি অনুভব করেছিলেন ; কিন্তু যদিও তার শারীরিক শক্তি ক্ষীণ হয়ে আসছিল, তবুও তিনি বিশ্বস্ততা ও নির্ভীকতা সঙ্গে খ্রীষ্টের সুসমাচার কওে গিয়েছিলেন। ঈশ্বরের সমস্ত যুদ্ধসাজে সজ্জিত হয়ে, ক্রুশের এই বীর, সংগ্রামে অগ্রসর হয়ে চলেছিলেন। তার আনন্দধ্বনি ঘোষণা দিল যে তিনি যুদ্ধে বিজয়ী হয়েছেন। বিশ্বস্তদেও পুরস্কারের প্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধ রেখে তিনি বিজয়ীর সুরে ঘোষণা দিলেন, “বস্তুতঃ আপাততঃ আমাদের যে লঘুতর ক্লেশ হইয়া থাকে, তাহা উত্তর উত্তর অনুপমরূপে আমাদেও জন্য অনন্তকালস্থায়ী গুর“তর প্রতাপ সাধন করিতেছে ; আমরা ত দৃশ্য বস্তু লক্ষ্য না করিয়া অদৃশ্য বস্তু লক্ষ্য করিতেছি ; কারণ যাহা যাহা দৃশ্য, তাহা ক্ষণকালস্থায়ী, কিন্তু যাহা যাহা অদৃশ্য, তাহা অনন্তকালস্থায়ী।”প্রেরিতের অতি ঐকান্তিক ও স্পর্শকারী আবেদনে করিন্থীয় ভ্রাতৃগণ তাদের ত্রাণকর্তার অতুলনীয় প্রেম নতুনভাবে বিবেচনা করেছিল। তিনি লিখেছিলেন, “কেননা তোমরা আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের অনুগ্রহ জ্ঞাত আছ ; তিনি ধনবান্ হইলেও তোমাদের নিমিত্ত দরিদ্র হইলেন, যেন তোমরা তাঁহার দরিদ্রতায় ধনবান্ হও।” তোমরা জান যে উচ্চতা থেকে তিনি নিচের দিকে ঝুঁকে পড়েছিলেন, আর কোন অবনমনের স্তরে তিনি নেমেছিলেন। একবার আত্ম—অস্বীকার ও আত্মত্যাগের পথে প্রবেশ করে, তাঁর জীবন দানের আগ পর্যন্ত তিনি আর পেছনে ফিরে তাকান নি। সিংহাসন ও ক্রুশের মাঝখানে তাঁর আর কোন বিশ্রামের সময় ছিল না। AABen 272.3

পদে পদে পৌল প্রসঙ্গ ধরে রাখছিলেন যেন যারা তার চিঠি পড়বে তারা যেন তাদের জন্য ত্রাণকর্তার স্বেচ্ছায় অবনমনের বিষয় সম্পূর্ণ উপলব্ধি করতে পারে। যখন তিনি ঈশ্বরের সমান ছিলেন আর তাঁরা এক সঙ্গে দূতগণের আরাধনা লাভ করতেন, প্রেরিত সেই সময় থেকে তাঁর গন্তব্য পথ অনুসরণ করে, অবনমনের নিম্নতম স্তরে পৌঁছানো পর্যন্ত পৌল খ্রীষ্টকে উপস্থাপন করেছেন। পৌল নিশ্চিত হয়েছিলেন যে, স্বর্গীয় রাজাধিরাজের অত্যাশ্চর্য আত্মত্যাগের বিষয় যদি তাদের বুঝানো যায়, তাহলে তাদেও জীবন থেকে সব স্বার্থপরতা নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। তিনি দেখালেন কীভাবে ঈশ্বরের পুত্র তঁক্ষ গৌরব একপাশে সরিয়ে রেখে, স্বেচ্ছায় নিজেকে মানব প্রকৃতির বশে নিয়ে এলেন, আর নিজেকে দাসের মত নত করলেন, আর “মৃত্যু পর্যন্ত, এমন কি ক্রুশীয় মৃত্যু পর্যন্ত” (ফিলিপীয় ২:৮), নিজেকে বাধ্য রাখলেন, যেন তিনি পতিত মানবকে আশা, আনন্দ ও স্বের্গের অধিকারভ্রষ্টতা থেকে তুলে আনতে পারেন। AABen 273.1

আমরা যখন ক্রুশের আলোকে ঐশ্বরিক চরিত্র অধ্যয়ন করি, তখন আমরা ন্যায়পরায়ণতা ও ন্যায়বিচারের সঙ্গে দয়া, কোমলতা, ও ক্ষমাশীলতার সংমিশ্রণ দেখতে পাই। মানুষকে ঈশ্বরের সঙ্গে মিলিত করার জন্য হাতে ও পায়ে ও কুক্ষিদেশে যাতনার ক্ষতচিহ্ন ধারণকারী একজনকে আমরা সিংহাসনেব মধ্যে দেখতে পাই। আমরা অনভিগম্য অলোর মধ্যে বাসকারী, অসীম, এক পিতাকে দেখতে পাই, তা সত্বেও তিনি তাঁর পুত্রের গুণে আমাদের তাঁর নিজের কাছে গ্রহণ করছেন। প্রতিহিংসার মেঘ যা কেবল হতাশা ও যন্ত্রনার হুমকি দেয়, ক্রুশের থেকে বিচ্ছুরিত আলো ঈশ্বরের লেখনী প্রকাশ কওে : বাঁচ, পাপী, বাঁচ ! হে অনুতপ্ত, বিশ্বাসী আত্মাগণ, বাঁচ ! আমি তোমাদের মুক্তিপণ পরিশোধ করেছি। AABen 274.1

খ্রীষ্টের বিষয়ে ধ্যান করার সময় আমরা এক অপরিমেয় প্রেমের বেলাভূমিতে অবস্থান করি। আমরা এই প্রেমের কথা বলার চেষ্টা করি, কিন্তু ভাষা আমাদের ব্যর্থ করে। পৃথিবীতে তাঁর জীবন, আমাদের জন্য তাঁর আত্মত্যাগ, আমাদের উকিল রূপে স্বর্গে তাঁর কাজ, আর যারা তাঁকে ভালবাসে তাদের জন্য তিনি যে সব বাড়ী তৈরী করছেন, সে বিষয় আমরা যখন বিবেচনা করি, আমরা কেবল আশ্চর্য হয়ে চিঃকার করতে পারি, খ্রীষ্টের প্রেমের কি উচ্চতা ও গভীরতা ! “ইহাতেই প্রেম আছে ; আমরা যে ঈশ্বরকে প্রেম করিয়াছিলাম তাহা নয় ; কিন্তু তিনিই আমাদিগকে প্রেম করিলেন, এবং আপন পুত্রকে আমাদেও পাপার্থক প্রায়শ্চিত্ত হইবার জন্য প্রেরণ করিলেন” “দেখ, পিতা আমাদিগকে কেমন প্রেম প্রদান করিয়াছেন যে, আমরা ঈশ্বরের সন্তান বলিয়া আখ্যাত হই ; আর আমরা তাহাই বটে।” ১ যোহন ৪:১০; ৩:১ পদ। AABen 274.2

এই প্রেম প্রত্যেক খাঁটি বিশ্বাসীর হৃদয়—বেদীতে পবিত্র আগুনের মত প্রজ্জ্বলিত হতে থাকে। খ্রীষ্টের মাধ্যমে ঈশ্বরের এই প্রেম প্রকাশিত হয়েছিল। এই পৃথিবীতেই তাঁর সন্তানেরা তাদেও নিষ্পাপ জীবন দিযে প্রতিফলিত করবে। এইভাবে পাপীরা ঈশ্বরের মেষশাবককে দেখবার জন্য ক্রুশের দিকে পরিচালিত হবে। AABen 274.3

ইংরাজী পাণ্ডুলিপি ২০২ পৃষ্ঠা AABen 274.4