প্রেরিতগণের কার্য-বিবরণ
৩০শ অধ্যায়—প্রেরিতদের কার্য—বিবরণ
প্রেরিত করিন্থীয়দের কাছে সনির্বন্ধ অনুরোধ করে বললেন, “যে মনে করে, আমি দাঁড়াইয়া আছি, সে সাবধান হউক, পাছে পড়িয়া যায়।” তারা যদি গর্বিত ও আত্মবিশ্বাসী হয়, জাগ্রত থাকা ও প্রার্থনায় অবহেলা করে, তাহলে তারা নিদারুণ পাপের মধ্যে পড়বে, আর নিজেদের ওপর ঈশ্বরের ক্রোধ ডেকে আনবে। তবুও পৌল তাদের নৈরাশ্য ও হতাশার মধ্যে পড়তে দিতে চাননি। তিনি তাদের এই নিশ্চয়তা দিয়ে ছিলেন: “আর ঈশ্বর বিশ্বাস্য; তিনি তোমাদের প্রতি তোমাদের শক্তির অতিরিক্ত পরীক্ষা ঘটিতে দিবেন না, বরং পরীক্ষার সঙ্গে সঙ্গে রক্ষার পথও করিয়া দিবেন, যেন তোমরা সহ্য করিতে পার।” AABen 259.1
পৌল তার ভ্রাতৃগণকে নিজেদের কাছে জিজ্ঞেস করতে বলেন তাদের কথা ও কাজ কীভাবে অন্যদের ওপর প্রভাব ফেলবে, আর তা অন্য কিছু করুক বা না করুক, আর তা যত নির্দোষই মনে হোক না কেন তা পৌত্তলিকতাকে বৈধতা দেবে অথবা যারা হয়তো বিশ্বাসে দুর্বল তাদের বিবেকের কাছে দ্বিধা এনে দেবে। ” অতএব তোমরা ভোজন, কি পান, কি যাহা কিছু কর , সকলই ঈশ্বরের গৌরবার্থে কর। কি যিহূদী, কি গ্রীক, কি ঈশ্বরের মণ্ডলী, কাহারও বিঘড়ব জন্মাইও না।” AABen 259.2
করিন্থীয় মণ্ডলীর কাছে প্রেরিতের সতর্কবাণী সর্বকালের জন্য প্রযোজ্য আর বিশেষভাবে আমাদের সময়ের জন্য সঙ্গতিপূর্ণ। পৌত্তলিকতা বলতে তিনি কেবল মূর্ত্তিপূজা বুঝান নি, কিন্তু আত্ম—সেবা, আরামপ্রিয়তা, পেটুকতা ও লালসা চরিতার্থ করার কথাও বুঝিয়েছেন। কেবল খ্রীষ্টে বিশ্বাস ধারণ ও সত্যে গর্বিত জ্ঞান কোন মানুষকে খ্রীষ্টান করে না। যে ধর্ম কেবল চোখ, কান, ও স্বাদ চরিতার্থেও খোঁজ করে বা আত্মপ্রশ্রয়কে বৈধতা প্রদান করে, তা খ্রীষ্টের ধর্ম নয়। AABen 259.3
খ্রীষ্টের মণ্ডলীর সব সদস্যদের মধ্যে যে নিবিড় ও বৈরিতামুক্ত সম্পর্ক থাকা প্রয়োজন তা বর্ণনা করতে প্রেরিত যথাযথভাবে মণ্ডলীকে মানুষের শরীরের সঙ্গে তুলনা করেছেন। তিনি লিখেছেন, “কেননা যেমন দেহ এক, আর তাহার অঙ্গ প্রত্যঙ্গ অনেক, এবং দেহের সমুদয় অঙ্গ, অনেক হইলেও, এক দেহ হয়, খ্রীষ্টও সেইরূপ। ফলতঃ আমরা কি যিহূদী কি গ্রীক, কি দাস কি স্বাধীন, সকলেই এক দেহ হইবার জন্য একই আত্মাতে বাপ্তাইজিত হইয়াছি, এবং সকলেই এক আত্মা হইতে পায়িত হইয়াছি। আর বাস্তবিক দেহ একটি অঙ্গ নয়, অনেক। পা যদি বলে, আমি ত হাত নই, তজ্জন্য দেহের অংশ নই, তবে তাহা যে দেহের অংশ নহে, এমন নয়। আর কর্ণ যদি বলে, আমি ত চক্ষু নই, তজ্জন্য দেহের অংশ নই, তবে তাহা যে দেহের অংশ নহে, এমন নয়। সমস্ত দেহ যদি চক্ষু হইত, তবে শ্রবণ কোথায় থাকিত ? এবং সমস্তই যদি শ্রবণ হইত, তবে ঘ্রাণ কোথায় থাকিত? কিন্তু এখন ঈশ্বর অঙ্গ সকল এক এক করিয়া দেহের মধ্যে যেমন ইচ্ছা করিয়াছেন, সেইরূপ বসাইয়াছেন। নতুবা সমস্তই যদি একটী অঙ্গ হইত তবে দেহ কোথায় থাকিত ? কিন্তু এখন অঙ্গ অনেক বটে, কিন্তু দেহ এক। আর চক্ষু হস্তকে বলিতে পারে না, তোমাতে আমার প্রয়োজন নাই; আবার মাথাও পা দুখানিকে বলিতে পারে না, তোমাদিগেতে আমার প্রয়োজন নাই; বরং দেহের যে সকল অঙ্গকে অপেক্ষাকৃত দুর্ব্বল বলিয়া বোধ হয়, সেইগুলি অধিক প্রয়োজনীয়। আর আমরা দেহের যে সকল অঙ্গকে অপেক্ষাকৃত অনাদরণীয় বলিয়া জ্ঞান করি, সেইগুলিকে অধিক আদরে ভূষিত করি, এবং আমাদের যে অঙ্গগুলি শ্রীহীন, সেইগুলি অধিকতর সুশ্রী প্রাপ্ত হয়; কিন্তু আমাদের যে সকল অঙ্গ সুশ্রী, সেগুলির সে প্রয়োজন নাই। বাস্তবিক, ঈশ্বর দেহ সংগঠিত করিয়াছেন, অসম্পূর্ণকে অধিক আদর করিয়াছেন, যেন দেহের মধ্যে বিচ্ছেদ না হয়, বরং অঙ্গ সকল যেন পরস্পরের জন্য সমভাবে চিন্তা করে। আর এক অঙ্গ দুঃখ পাইলে তাহার সহিত সকল অঙ্গই দুঃখ পায়, এবং এক অঙ্গ গৌরব প্রাপ্ত হইলে তাহার সহিত সকল অঙ্গই আনন্দ করে। তোমরা খ্রীষ্টের দেহ, এবং এক এক জন এক একটী অঙ্গ।” AABen 260.1
তারপরে, যে সব কথা সে দিন থেকে আজ পর্যন্ত সব নরনারীর কাছে উৎসাহ ও অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে আসছে, যা খ্রীষ্টের অনুসারীরে অন্তরে সযত্নে লালিত হতে থাকবে, পৌল সেই প্রেমের উৎকৃষ্টতার কথা বলেছেন: “যদি আমি মনুষ্যদের, এবং দূতগণেরও ভাষা বলি, কিন্তু আমার প্রেম না থাকে, তবে আমি শব্দকারক পিত্তল ও ঝম্ঝম্কারী করতাল হহইয়া পড়িয়াছি। আর যদি ভাববাণী প্রাপ্ত হই, ও সমস্ত নিগূঢ়তত্তে¡ ও সমস্ত জ্ঞানে পারদর্শী হই, এবং যদি আমার সম্পূর্ণ বিশ্বাস থাকে যাহাতে আমি পর্ব্বত স্থানান্তর করিতে পারি, কিন্তু আমার প্রেম না থাকে, তবে আমি কিছুই নহি। অর যথাসর্ব্বস্ব যদি দরিদ্রদিগকে খাওয়াইয়া দিই, এবং পোড়াইবার জন্য আপন দেহ দান করি, কিন্তু আমার প্রেম না থাকে, তবে আমার কিছুই লাভ নাই।” AABen 260.2
যত উঁচু পদাধিকারী হোন না কেন, যার অন্তর ঈশ্বরের ও সহমানবের প্রতি প্রেমে পূর্ণ নয় সে খ্রীষ্টের প্রকৃত শিষ্য নয। যদিও সে মহা বিশ্বাসের অধিকারী হয় আর এমন কি আশ্চর্যকাজ করার ক্ষমতাও থাকে, তবুও প্রেম ছাড়া তার বিশ্বাস মূল্যহীন। সে হয়ত বিরাট উদার মনের প্রদর্শনী করতে পারে; কিন্তু যদি সে প্রকৃত প্রেম ছাড়া অন্য উদ্দেশ্য নিয়ে তার যথাসর্বস্ব গরীবলোকদের খাওয়ায়, তাহলে তার এই কাজ ঈশ্বরের সমর্থন লাভ করতে পারবে না। তার উৎসাহে সে হয়ত এক সাক্ষ্যমরের মত মরতে পারে, আর তা যদি প্রেমের দ্বারা ক্রিয়াশীল না হয়ে থাকে, তবে সে ঈশ্বরের দৃষ্টিতে একজন বিভ্রান্ত অতিউৎসাহী অথবা অতিউচ্চাভিলাষী ভণ্ড তপস্বী হিসাবে গণ্য হবে। AABen 261.1
“প্রেম চিরসহিষ্ণু, প্রেম মধুর, ঈর্ষা করে না, প্রেম আত্মশাঘা করে না, গর্ব্ব করে না।” অতিশয় নম্রতার ভেতর থেকে প্রকৃত আনন্দ উৎসারিত হয। ধৈর্য, প্রেম, ও ঈশ্বরের ইচ্ছার কাছে নিজেকে সঁপে দেয়ার ওপর ভিত্তি করে দৃঢ় ও উন্নত চরিত্র গড়ে ওঠে। AABen 261.2
প্রেম “অশিষ্টাচরণ করে না, স্বার্থ চেষ্টা করে না, রাগিয়া উঠে না, অপকার গণনা করে না।” খ্রীষ্টের মত প্রেম অন্যদের কাজ ও উদ্দেশ্যেও ওপর সর্বোচ্চ অনুকুল ভিত্তি স্থাপন করে। অযথা তাদের খুঁত প্রকাশ করে না, তাদের মন্দ সংবাদ গভীর আগ্রহ সহকারে শোনে না, কিন্তু তাদের স˜গুণগুলো মনে আনার চেষ্টা করে। AABen 261.3
প্রেম “অধার্ম্মিকতায় আনন্দ করে না, কিন্তু সত্যের সহিত আনন্দ করে; সকলই বহন করে, সকলই বিশ্বাস করে, সকলই প্রত্যাশা করে, সকলই ধৈর্য্যপূর্ব্বক সহ্য করে।” এই “প্রেম কখনও শেষ হয় না।” কখনও মূল্যহীন হতে পারে না; এটা একটা স্বর্গীয় গুণ। একটা বহুমূল্যবান সম্পদরূপে এর অধিকারী এটাকে বহন করে ঈশ্বরের নগরীর দ্বারসমূহের ভেতর দিয়ে প্রবেশ করবে। AABen 261.4
“আর এখন বিশ্বাস, প্রত্যাশা, প্রেম এই তিনটী আছে, আর ইহাদের মধ্যে প্রেমই শ্রেষ্ঠ।” করিন্থীয় বিশ্বাসীদের নৈতিক মান অবমূল্যায়ন করার পেছনে কতগুলো লোক ছিল যারা তাদের সত্যের কতগুলো মূল সত্যকে বর্জন করেছিল। তারা এত দূর গিয়েছিল যে তারা পূনরূত্থান তত্ত¡কেও অস্বীকার করেছিল। এই বিরূদ্ধ মতবাদের সম্মুখীন হতে গিয়ে পৌল খ্রীষ্টের পুনরূত্থানের অভ্রান্ত ঘটনা AABen 262.1
সম্পর্কে একটা খুব সহজ সাক্ষ্য দিয়েছেন। তিনি বলেছেন যে খ্রীষ্ট, তাঁর মৃত্যুর পরে, “শাস্ত্রানুসারে তিনি তৃতীয় দিবসে উত্থাপিত হইয়াছেন,” তারপরে “তিনি কৈফাকে, পওে সেই বারো জনকে দেখা দিলেন; তাহার পওে একেবারে পাঁচ শতের অধিক ভ্রাতাকে দেখা দিলেন, তাহাদের অধিকাংশ লোক অদ্যাপি বর্ত্তমান রহিয়াছে, কিন্তু কেহ কেহ নিদ্রাগত হইয়াছে। তাহার পওে তিনি যকোবকে, পওে সকল প্রেরিতকে দেখা দিলেন। সকলের শেষে অকালজাতের ন্যায় যে আমি, আমাকেও দেখা দিলেন।” AABen 262.2
প্রেরিত বিশ্বাস উৎপাদনকারী শক্তি দিয়ে পুনরূত্থানের মহাসত্যকে উপস্থাপন করলেন। “মৃতগণের পুনরূত্থান যদি না হয়, তবে খ্রীষ্টও ত উত্থাপিত হন নাই। আর খ্রীষ্ট যদি উত্থাপিত না হইয়া থাকেন, তাহা হইলেত আমাদের প্রচারও বৃথা, তোমাদেও বিশ্বাসও বৃথা। আবার আমরা যে ঈশ্বরের সম্বন্ধে মিথ্যা সাক্ষী, ইহাই প্রকাশ পাইতেছে; কারণ আমরা ঈশ্বরের বিষয়ে এই সাক্ষ্য দিয়াছি যে, তিনি খ্রীষ্টকে উত্থাপন করিয়াছেন; কিন্তু যদি মৃতগণের উত্থাপন না হয়, তাহা হইলে তিনি তাঁহাকে উত্থাপন করেন নাই। AABen 262.3
কেননা মৃতগণের উত্থাপন যদি না হয়, তবে খ্রীষ্টও উত্থাপিত হন নাই। আর খ্রীষ্ট যদি উত্থাপিত না হইয়া থাকেন, তাহা হইলে তোমাদের বিশ্বাস অলীক, এখনও তোমরা আপন আপন পাপে রহিয়াছ। সুতরাং যাহারা খ্রীষ্টে নিদ্রাগত হইয়াছে, তাহারাও বিনষ্ট হইয়াছে। সুধু এই জীবনে যদি খ্রীষ্টে প্রত্যাশা করিয়া থাকি, তবে আমরা সকল মনুষ্যেও মধ্যে অধিক দুর্ভাগা। কিন্তু বাস্তবিক খ্রীষ্ট মৃতঘণেরমধ্য হইতে উত্থাপিত হইয়াছেন, তিনি নিদ্রাগতদেও অগ্রিমাংশ।” প্রেরিত করিন্থীয় ভ্রাতৃগণের মন পুনর“ত্থানের সকালের বিজয়ের দিকে নিয়ে যান, যখন নিদ্রিত সাধুদের এরপর থেকে চিরকাল তাদেও প্রভুর সঙ্গে বাস করার জন্য উত্থাপন করা হবে। “দেখ,” প্রেরিত বললেন, “আমি তোমাদিগকে এক নিগূঢ়তত্ত¡ বলি; আমরা সকলে নিদ্রাগত হইব না, কিন্তু সকলে রূপান্তরীকৃত হইব; এক মুহূর্ত্তেও মধ্যে, চক্ষুর পলকে, শেষ তূরীধ্বনিতে হইব; কেননা ত’রী বাজিবে, তাহাতে মৃতেরা অক্ষয় হইয়া উত্থাপিত হইবে, এবং আমরা রূপান্তরীত হইব। কারণ এই ক্ষয়ণীয়কে অক্ষয়তা পরিধান করিতে হইবে, এবং এই মর্ত্ত্যকে অমরতা পরিধান করিতে হইবে। আর এই ক্ষয়ণীয়তা যখন অক্ষয়তা পরিহিত হইবে, এবং এই মর্ত্ত্য যখন অমরতা পরিহিত হইবে, তখন এই যে কথা লিখিত আছে, তাহা সফল হইবে, “মৃত্যু জয়ে কবলিত হইল”। “মৃত্যু তোমার জয় কোথায়? এৃত্যু তোমার হুল কোথায়?” কিন্তু ঈশ্বরের ধন্যবাদ হউক, তিনি আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্ট দ্বারা আমাদিগকে জয় প্রদান করেন।” AABen 262.4
বিশ্বস্তদের জন্য গৌরবময় বিজয় অপেক্ষা করছে। করিন্থীয় বিশ্বাসীদের সামনের সম্ভাবনা বুঝতে পেরে , প্রেরিত, তাদের সামনে এমন কিছু স্থাপন করলেন যা তাদের স্বার্থপরতা ও ইন্দ্রিয়পরবশতা থেকে টেনে তুলবে, আর অমরতার আশায় জীবনকে গৌরবান্বিত করে তুলবে। AABen 263.1
একান্তভাবে তিনি তাদের অনুরোধ করলেন যেন তারা খ্রীষ্টেতে তাদের “ঊর্দ্ধদিকস্থ আহ্বানের” প্রতি বিশ্বস্ত থাকে। “হে আমার ভ্রাতৃগণ,” তিনি অনুরোধ করলেন, “সুস্থিও হও, নিশ্চল হও, প্রভুর কার্য্যে সর্ব্বদা উপচিয়া পড়, কেননা তোমরা জান যে, প্রভুতে তোমাদের পরিশ্রম নিষ্ফল নয়।” AABen 263.2
এইভাবে প্রেরিত, অতি সুষ্পষ্ট ভাবে আর হৃদয়গ্রাহী মনোভাবে করিন্থীয় মণ্ডলীতে বিদ্যমান মিথ্যা ও বিপজ্জনক চিন্তাধারা ও অভ্যাসগুলোকে সংশোধন করার চেষ্টা করলেন। তিনি তাদের আত্মার প্রতি প্রেম প্রদর্শন করে সোজাসুজি তাদের কাছে কথা বললেন। তার তিরস্কার ও সতর্কবাণীতে, তাদের কলষিতকারী গোপন পাপ প্রকাশের জন্য তাদের ওপর ঈশ্বরের সিংহাসন থেকে আলো বিচ্ছুরিত হচ্ছিল। কীভাবে তা গৃহীত হবে? AABen 263.3
এই চিঠি পাঠিয়ে দেবার পরে, পৌল শঙ্কিত হলেন যে, তিনি যাদের উপকারের জন্য চিঠিটা লিখলেন, তারা হয়তো আরও গভীরভাবে ক্ষতগ্রস্ত হবে। তিনি ভয় করছিলেন যে, তা আরও বিচ্ছেদ সৃষ্টি করবে আর তিনি কখনও কখনও তার কথা ফিরিয়ে আনার বাসনা করতেন। পৌলের মত যারা, মণ্ডলীও প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি দায়িত্বশীলতা অনুভব করেছে, তারা তার আত্মার বিষাদগ্রস্ততা ও আত্ম—দোষারোপ ভালভাবে বুঝতে পারবে। ঈশ্বরের দাসগণ যারা বর্ত্তমানে তাঁর কাজের ভার বহন করছে তারা পৌলের ওপর চেপে পড়া শ্রম, বিবাদ ও উদ্বেগপূর্ণ সেবার অভিজ্ঞতার কিছু জানতে পারবে। মণ্ডলীতে বিভেদের ভারে ভারগ্রস্ত, যাদের কাছ থেকে তিনি সহানুভুতি ও সমর্থন পাবার আশা করেছিলেন, তাদের কাছ থেকে অকৃতজ্ঞতা ও বিশ্বাসঘাতকতা, আর মণ্ডলীগুলোর মধ্যে যে পাপবাসা বেঁধেছিল তা বুঝতে পেরে তিনি পাপের প্রতি তিরষ্কারপূর্ণ এই একান্ত, অনুসন্ধানী সাক্ষ্য বহন করতে বাধ্য হয়েছিলেন, একই সময় তিনি ভয়ে কাতর হয়ে পড়েছিলেন যে তিনি হয়তো খুব বেশী কঠোর ব্যবহার করেছেন। তার বার্ত্তা কীভাবে গৃহীত হল সে সংবাদ পাবার জন্য তিনি কম্পিত দুশ্চিন্তায় অপেক্ষা করেছিলেন। AABen 263.4
ইংরাজী পাণ্ডুলিপির ১৯৫ পৃষ্ঠা। AABen 264.1