মণ্ডলীর জন্য উপদেশ

30/327

৬ষ্ঠ অধ্যায়

প্রভু, এই আমি; আমাকে পাঠাও

পরিণাম নিকটবর্ত্তী-, রাত্রিকালে যেমন চোর, তেমনি উহা নীরবে, গপনে ও অজ্ঞাতসারে আমাদের উপরে আসিয়া পড়িতেছ। ঈশ্বর করুন, যেন আমরা অন্যের মত আর নিদ্রা না যাই; কিন্তু যেন জগ্রত থাকি ও মিতাচারী হই। শীঘ্রই সসম্মানে সত্যের জয় হইবে এবং এক্ষণে যাহারা ঈশ্বরের সহকার্য্যকারী হওয়া মনোনীত করিবে, তাহারও ইহার সহিত জয় লাভ করিবে। সময় সংক্ষিপ্ত, শীঘ্রই রাত্রি আসিতেছে, যখন কাহই কার্য্য করিতে পারে না। বর্ত্তমান সত্যের জ্যোতিতে যাহারা আনন্দ উপভোগ করিতেছে, তাহারা সকলে এক্ষণে ত্বরন্বিত হইয়া অন্যের নিকটে সত্য দান করুক। প্রভু জিজ্ঞাসা করিতেছেন, “আমি কাহাকে পাঠাইব?” যাহারা সত্যের জন্য ত্যাগস্বীকার করিতে চাহেন, তাঁহাদের এক্ষণে বলা আবশ্যক, “প্রভু, এই আমি; আমাকে পাঠাও।”1 CCh 121.1

আমাদের প্রতিবাসী ও বন্ধু-বান্ধবদের মধ্যে যে প্রচার কার্য্য চালান ঈশ্বর আমাদের নিকটে আকাঙ্ক্ষা করেন, আমরা তাহার কেবল অল্পই করিয়াছি। আমাদের দেশের প্রত্যেক নগরে এমন লোক আছে, যাহারা সত্য জানে না, সমুদ্রের পরপারে ও বিস্তীর্ণ জগতে এমন বহু নূতন নূতন ক্ষেত্র আছে, যে স্থানে যাইয়া, আমাদের চাষ দেওয়া এবং বীজ বপন করা আবশ্যক। CCh 121.2

যে সকল সঙ্কট ও উদ্বেগের বিষয় আমরা স্বপ্নেও ভাবি না, সে সকল আমাদের সম্মুখে উপস্থিত; আর আমরা ঐ সকলের একেবারে প্রান্তভাগে আসিয়া পড়িয়াছি। নিম্ন হইতে এক শক্তি স্বর্গের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করণার্থ লোকদিগকে পরিচালিত করিতেছে। ঈশ্বরের ব্যবস্থা বাতিল করিবার জন্য মানবগণ শয়তানের প্রতিনিধিগণের সহিত ষড়যন্ত্র করিয়াছে। নোহের সময়ে জগতের যে সকল অধিবাসী জলপ্লাবন দ্বারা বিনষ্ট হইয়াছিল, এবং সদোমের যে সকল অধিবাসি স্বর্গ হইতে আগত অগ্নি দ্বারা ভস্মীভূত হইয়াছিল, তাহারা যেমন ছিল, বর্ত্তমান জগতের অধিবাসিগণ, দ্রুত সেইরূপ স্বভাব বিশিষ্ট হইয়া পড়িতেছে। অনন্ত সত্য হইতে লোকদের মন বিপথগামী করিবার জন্য শয়তানের শক্তিপুঞ্জ কার্য্যে তৎপর। ঐ মহান্ শত্রু স্বীয় উদ্দেশ্য পরিপূরণের জন্য বিষয় সমূহ নিজের সুবিধামত সাজাইয়া লইয়াছে। জাগতিক ব্যবসা-বানিজ্য, খেলুধূলা, হাল্-ফ্যাসান (আধুনিক আদবকায়দা) — এই সকল, বর্ত্তমানকালের নরনারিগণের মন দখল করিয়া লইয়াছে। রঙ্গরস ও অনুপকারী গ্রন্থ-পাঠ বিচারশক্তি নষ্ট করিয়া দেয়। যে প্রশস্ত রাস্তা অনন্ত বিনাশে লইয়া যায়, অনেকে তাহা দিয়া গমনাগমন করে। অত্যাচার, বিলাস-উৎসব ও মত্ততা মণ্ডলীকে পরিবর্ত্তীত করিতেছে। ঈশ্বরের ব্যবস্থা বা ধার্ম্মিকতার ঐশ্বরিক মানদণ্ড নিষ্ফল বলিয়া ঘষিত হইয়াছে।2 CCh 121.3

শেষকালের ভবিষ্যদ্বাণীগুলি সম্বন্ধে লোকদিগকে কিছু বলিবার পূর্ব্বে, ঐ সকল ভবিষ্যদ্বাণী সফল না হওয়া পর্য্যন্ত আমাদের কি অপেক্ষায় থাকিতে হইবে? যদি তাহাই হয়, তবে আমাদের কথার কী মূল্য হইবে? কী উপায়ে বিচার দণ্ড এড়ান যাইবে, আজ্ঞালঙ্ঘীকে তাহা বলিবার পূর্ব্বে, যে পর্য্যন্ত না তাহার উপরে ঈশ্বরের দণ্ড পতিত হয়, তাবৎ আমরা অপেক্ষা করিব কি? ঈশ্বরের বাক্যে আমাদের বিশ্বাস কথায়, ? ঈশ্বর যাহা বলিয়াছেন, তাহা বিশ্বাস করিবার পুর্ব্বে আমরা কি ভবিষ্যতের বিষয়গুলি ঘটিতে দেখিব? সদাপ্রভুর মহাদিন নিকটবর্ত্তী- “এমন কি দ্বারে উপস্থিত,” ইহা দেখাইয়া দিয়া সুস্পষ্ট ও উজজ্বল জ্যোতি আমাদের নিকটে আসিয়াছে। আর বিলম্ব না করিয়া, আইসুন আমরা ইহা পাঠ করি ও বুঝি।3 CCh 122.1