মণ্ডলীর জন্য উপদেশ

125/327

প্রার্থনায় অধিকতর প্রশংসা

“শ্বাসবিশিষ্ট সকলে সদাপ্রভুর প্রশংসা করুক ।” আমাদের কত অধিক কৃতজ্ঞ থাকা উচিত, আমরা কেহ কখনও তাহা উপযুক্তরূপে চিন্তা করিয়া দেখিয়াছি কি ? আমরা কি স্মরণ করিয়া থাকি যে, সদাপ্রভুর অনুগ্রহ আমাদের পক্ষে প্রতি প্রভাতেই নূতন এবং তাঁহার বিশ্বস্ততা অফুরন্ত ? আমরা যে তাঁহারই উপরে নির্ভরশীল, ইহা কি আমরা স্বীকার করি এবং তাঁহার সর্ব্ববিধ অনুগ্রহের নিমিত্ত আমরা কি তাঁহার নিকট কৃতজ্ঞ ? না, আমরা বরং ইহার বিপরীতে প্রায়শঃই ভুলিয়া যাই যে, “সমস্ত উত্তম দান এবং সমস্ত সিদ্ধ রব উপর হইতে আইসে, জ্যোতির্গণের সেই পিতা হইতে নামিয়া আইসে ।” CCh 306.2

দিনের পর দিন, বৎসরের পর বৎসর, ঈশ্বরের কত যে আশ্চর্য্য অনুগ্রহ ও দয়া ভোগ করিয়া আসিতেছে, স্বাস্থ্যবান লোকেরা প্রায়ই তাহা ভুলিয়া যায় । ঈশ্বরের সর্ব্ববিধ উপকারের জন্য তাহারা তাঁহাকে কোনই ধন্যবাদ দেয় না, বা তাঁহার প্রশংসা কীর্ত্তন করে না । কিন্তু যখন কোন প্রকার অসুস্থতা আইসে, তখন তাহারা ঈশ্বরকে স্মরণ করে । সুস্থতা লাভের জন্য প্রবল আকাঙ্ক্ষিত হইয়া তাহারা ব্যগ্রভাবে প্রার্থনা করে, আর ইহা ঠিক্ই । স্বাস্থ্যে যেমন, অসুস্থতায়ও তেমনি ঈশ্বর আমাদের আশ্রয়দুর্গ । কিন্তু অনেকে তাঁহাতে নির্ভর না করিয়া নিজেরা চিন্তিত ও উদ্বিগ্ন হইয়া নিজেদের দুর্ব্বলতা ও অসুস্থতা আরও বাড়াইয়া তুলে । তাহারা যদি বিরক্ত হওয়া ত্যাগ করে এবং বিষাদ ও নৈরাশ্য মনে স্থান না দেয়, তবে তাহারা তাহাদের সুস্থতার বিষয় কৃতনিশ্চয় হইতে পারে । কত দিন তাহারা সুস্বাস্থ্যে জীবন যাপন করিয়াছে, কৃতজ্ঞতার সহিত তাহা তাহাদের স্মরণ করা কর্ত্তব্য । এই বহুমূল্য আশির্ব্বাদ তাহাদিগকে প্রত্যর্পণ করা হয় বলিয়া তাহাদের ইহা বিস্মৃত হওয়া কর্ত্তব্য নহে যে, তাহারা তাহাদের সৃষ্টিকর্ত্তার নিকটে নূতন বাধ্যবাধকতায় আবদ্ধ । দশ জন কুষ্ঠী শুচিকৃত হওয়ার পর, কেবল মাত্র একজন যীশুর নিকটে ফিরিয়া আসিয়া তাঁহাকে গৌরব প্রদান করিয়াছিল । যাহাদের হৃদয় ঈশ্বরের দয়ার স্পর্শ অনুভব করিতে পারে নাই, আমরা যেন সেই অকৃতজ্ঞ নয় জন কুষ্ঠীর মতন না হই ।3 CCh 307.1

উদ্বিগ্নচিত্তে ভাবী অমঙ্গলের চিন্তায় নিমগ্ন থাকার অভ্যাস অজ্ঞানতার ও নখ্রীষ্টীয়ানের কার্য্য । এইরূপ করিলে আমরা ঈশ্বরের আশির্ব্বাদ উপভোগ করিতে ও বর্ত্তমান সুযোগ-সুবিধাগুলির উন্নতি সাধন করিতে অসমর্থ হই । প্রভু চাহেন যেন আমরা আমাদের দৈনিক কর্ত্তব্য কর্ম্ম্যগুলি সুচারুরূপে সম্পন্ন করি এবং ইহার দুঃখ-কষ্ট সমূহ অম্লান বদনে সহ্য করি । আমরা যেন বাক্যে ও কার্য্যে উছোট না খাই, তজজন্য অদ্যই আমাদের জাগিয়া থাকিতে হইবে ।অদ্যই আমদের ঈশ্বরের সমাদর ও প্রশংসা করিতে হইবে । অদ্যই জীবন্ত বিশ্ব্বাস দেখাইয়া আমাদের শত্রুর উপর বিজয়ী হইতে হইবে । অদ্যই আমাদের ঈশ্বরের অন্বেষণ করিতে হইবে, এবং এই স্থির সিদ্ধান্তে উপনীত হইতে হইবে যে, যে পর্য্যন্ত না আমরা তাঁহার উপস্থিতি অনুভব করিতে পারিব, তাবৎ আমরা সন্তুষ্ট থাকিব না । এই দিনটী আমাদের জীবনের শেষ দিন মনে করিয়া আমাদের জাগিয়া থাকা, কার্য্য করা, ও প্রার্থনা করা কর্ত্তব্য । ইহা করিলে আমাদের জীবনে কতই না প্রগাঢ় ঔৎসুক্য দেখা যাইবে । আমাদের যাবতীয় বাক্যে ও কার্য্যে আমরা কতই না সুক্ষরুপে যীশুর অনুগমন করিব । CCh 307.2