মণ্ডলীর জন্য উপদেশ
ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিষয়ে ঈশ্বরের অনুরাগ
অতি অল্প লোকেই প্রার্থনার যথোচিত মূল্যাবধারণ করিতে ও ইহার বহুমূল্য সুযোগসুবিধাগুলির উন্নতি সাধন করিতে পারে । আমাদের যীশুর নিকটে যাওয়া ও আমাদের সকল অভাব অনাটনের বিষয় তাঁহার নিকটে বলা কর্ত্তব্য । আমাদের ভীষণতর সংকটগুলি যেমন, ক্ষুদ্রতর চিন্তা উদ্বেগগুলিও তেমনি যীশুর নিকটে উপস্থিত করিতে পারি । আমাদিগকে হয়রাণ করিবার ও গোলমালে ফেলিবার জন্য যাহাই কিছু ঘটুক না কেন, আমাদের কর্ত্তব্য, উহা প্রার্থনায় ঈশ্বরের নিকটে লইয়া যাওয়া । যখন আমরা অনুভব করিতে পারিব যে, প্রতি পাদবিক্ষেপেই আমাদের খ্রীস্টের উপস্থিতি প্রয়োজন, তখন শয়তান অতর্কিতভাবে তাহার পরীক্ষা আনয়ন করিতে অল্পই সুযোগ পাইবে । আমাদের সর্বোত্তম ও সর্ব্বশ্রেষ্ঠ সহানুভুতি সম্পন্ন বন্ধুর নিকত হইতে আমাদিগকে দূরে রাখাই তাহার সুচিন্তিত চেষ্টা । যীশু ব্যতীত আর কাহাকেও আমাদের অন্তরঙ্গ বন্ধু করা কর্ত্তব্য নহে । আমাদের অন্তরে যাহা কিছু আছে, আমরা নিরাপদে তাঁহাকে তাহা জানাইতে পারি । CCh 308.1
প্রিয় ভ্রাতা ও ভগ্নিগণ, আপনারা যখন সামাজিক উপাসনায় সমবেত হন, তখন বিশ্বাস করিবেন যে, যীশু আপনাদের সহিত সাক্ষাৎ করিতে আসিয়াছেন ; এবং তিনি আপনাদিগকে আশির্ব্বাদ করিতে ইচ্ছুক । নিজের উপর হইতে দৃষ্টি তুলিয়া লইয়া যীশুর প্রতি দৃষ্টিপাত করুন, তাঁহার অনুপম প্রেমের বিষয় আলাপ করুন । তাঁহার প্রতি দৃষ্টি রাখিয়া তাঁহার মূর্ত্তিতে স্বরূপান্তরীকৃত হউন । যখন প্রার্থনা করেন, তখন মূল বিষয় লইয়া সংক্ষেপে প্রার্থনা করিবেন । লম্বা প্রার্থনা করিয়া সদা প্রভুকে কোন লম্বা উপদেশ দিবেন না । কোন ক্ষুধার্ত সন্তান যেমন তাহার পার্থিব পিতার নিকত খাদ্য চাহে, তেমনি স্বর্গীয় পিতার নিকটে জীবন খাদ্য যাচ্ঞা করুন । তবে তিনি আমাদিগকে সমস্ত প্রয়োজনীয় আশীর্ব্বাদ পূর্ণরূপে দান করিবেন । CCh 309.1
প্রার্থনাকে আত্মার সর্ব্বাপেক্ষা পবিত্র অনুষ্ঠান কহে । ইহা অকপট, বিনীত ও ব্যগ্র হওয়া— পবিত্র ঈশ্বরের সাক্ষাতে নিশ্বসিত নূতন হৃদয়ের আকাঙ্ক্ষা হওয়া বিধেয় । প্রার্থনাকারী যখন অনুভব করিবে যে, সে ঐশ্বরিক উপস্থিতির সম্মুখে আছে, তখন সে আত্মহারা হইবে । মানবীয় প্রতিভা দেখাইবার লিপ্সা তাহার থাকিবে না । সে মানবের কর্ণ পরিতৃপ্তির চেষ্টা করিবে না, কিন্তু আত্মা যে আশির্ব্বাদের জন্য লালায়িত, সে তাহাই প্রাপ্ত হইবার জন্য চেষ্টা করিবে । CCh 309.2
প্রকাশ্য ও গুপ্ত এই উভয়বিধ আরাধনায় আমরা যখন আমাদের বিনতি সমূহ প্রভুর নিকট উপস্থিত করি, তখন তাঁহার সম্মুখে আমাদের নতজানু হওয়া কর্ত্তব্য । যীশু আমাদের দৃষ্টান্ত, “জানু পাতিয়া প্রার্থনা” করিতেন । (লূক ২২:৪১ ।) তাঁহার শিষ্যগণের সম্বন্ধে লিখিত আছে, তাঁহারাও “হাঁটু পাতিয়া প্রার্থনা করিলেন ।” (প্রেরিত ৯:৪০ ; ১০:৩৬ ; ২১:৫ ।) পৌল বলিয়াছিলেন, “আমাদের প্রভু যীশু খ্রীস্টের পিতার কাছে আমি জানু পাতিতেছি ।” (ইফিষীয় ৩:১৪ ।) ঈশ্বরের সম্মুখে ইস্রায়েলের পাপ সমূহ স্বীকার করিবার সময়ে ইঘ্রা নতজানু হইয়াছিলেন । (ইঘ্রা ৯:৫ ।) দানিয়েল দিনের মধ্যে তিন বার জানু পাতিয়া ঈশ্বরের সম্মুখে প্রার্তনা ও স্তবগান করিতেন । (দানিয়েল ৬:১০ ।) CCh 309.3