মণ্ডলীর জন্য উপদেশ
নিঃস্বার্থ জীবন দ্বারা ঈশ্বরকে প্রকাশ করা
যে পাপের সর্ব্বাপেক্ষা অধিক প্রসার দেখিতে পাওয়া যায় ও যাহা ঈশ্বর হইতে আমাদিগকে পৃথক্ রাখিয়া এবং বিধ আধ্যাত্মিক সংক্রামক গোলযোগের সৃষ্টি করে, তাহা স্বার্থপরতা । আপনাকে অস্বীকার করা ভিন্ন, অন্য কোন উপায়ে প্রভুর নিকটে ফিরিয়া আসা যাইবে না । নিজের শক্তিতে আমরা কিছুই করিতে পারি না ; কিন্ত, ঈশ্বরের দ্বারা শক্তি লাভ করিয়া আমরা অন্যের মঙ্গলার্থে জীবনযাপন করিতে পারি, এবং এইরূপে স্বার্থপরতার অমঙ্গল বজর্জন করিতে পারি । নিঃস্বার্থ ও কর্ম্মতৎপর জীবনে আমরা যেন আমাদের সমস্তই ঈশ্বরের উৎসর্গ করিবার আকাঙ্ক্ষা দেখাইতে পারি, তজজন্য পরজাতিগণের দেশে যাইবার আমাদের প্রয়োজন হইবে না । আমাদের বাড়ীর নিকটে, মণ্ডলীর মধ্যে, যাহাদের সহিত আমরা মেলামেশা ও ব্যবসাবানিজ্য করি বা ক্রয়বিক্রয় করি, তাহাদেরই সহিত উহা করা যাইতে পারে । সাধারণ জীবনযাত্রার মধ্যেই আপনাকে অস্বীকার করিয়া বশীভূত রাখিতে হইবে । পৌল বলিয়াছিলেন : “আমি প্রতিদিন মরিতেছি ।” জীবনের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কার্য্যের মধ্য দিয়া আমিত্ব সম্বন্ধে প্রতিদিন মরিলেই শয়তানের উপরে বিজয়ী হওয়া যায় । অন্যের মঙ্গল করিতে যাইয়া আপনাকে একেবারে ভুলিয়া যাইতে হইবে । অনেকের মধ্যে অন্যের প্রতি প্রেমের বড়ই অভাব দেখা দেয় । তাহারা তাহাদের কর্ত্তব্য বিশ্বস্তভাবে সম্পাদন না করিয়া বরং নিজেদের সুখের চেষ্টাই করিয়া থাকে । CCh 263.2
স্বর্গে কেহ স্বার্থ চিন্তা করিবে না, অথবা নিজেদের অভিলাষ চেষ্টা করিবে না ; কিন্ত সকলেই বিশুদ্ধ ও খাঁটি প্রেমে অনুপ্রাণিত হইয়া তাহাদের চতুর্দ্দিকস্থ স্বর্গীয় প্রাণিগণের সুখের চেষ্টা করিবে । আমরা যদি নূতন পৃথিবীর স্বর্গীয় সমাজের সহিত বাস করিতে চাহি, তাহা হইলে এই জগতেই স্বর্গীয় বিধান সমূহ পালন করিতে হইবে ।7 CCh 264.1
আমাকে দেখান হইয়াছিল যে, আমাদের এক দৃঢ় ও অভ্রান্ত আদর্শ থাকা সত্ত্বেও, ভ্রান্ত মর্ত্ত্য মানবকে আদর্শ ধরিয়া আমরা অতিমাত্রায় আমাদের মধ্যে আমাদের তুলনা করিয়া থাকি । জগতের পরিমাণ দণ্ডে বা অপরের মতামত অনুযায়ী, অথবা সত্য গ্রহণ করিবার পূর্ব্বে আমরা কিরূপ ছিলাম, তাহা ধরিয়া আমাদের পরিমাণ করা উচিত নহে । কিন্ত বর্ত্তমান জগতে আমাদের যেরূপ বিশ্বাস ও অবস্থা, তাহারই সহিত তুলনা করিয়া দেখিতে হইবে যে, খ্রীষ্টের অনুগামী বলিয়া স্বীকার করিবার পর, আমাদের আধ্যাত্মিক জীবনের গতি ক্রমাগত যদি সম্মুখদিকে ও উর্দ্ধমুখে অগ্রসর হইতে থাকিত, তাহা হইলে এক্ষণে কিরূপ হইত । আর তুলনা করিবার পক্ষে, ইহাই একমাত্র নিরাপদ পন্থা । কারণ অন্য যাহা কিছু করা যাইবে, তাহাতেই প্রতারিত হইবে হইবে । ঈশ্বরের লোকেরা যে সকল, আশীর্বাদ, সুযোগ-সুবিধা ও জ্যোতি প্রাপ্ত হইয়াছে, তাহাদের নৈতিক চরিত্র ও আধ্যাত্মিক অবস্থা যদি সেই সকলের অনুরূপ না হয়, তবে তাহারা তুলাতে পরিমিত হইবে, আর দূতগণ তাহাদের সম্বন্ধে লিখিবেন, “লঘুরূপে নির্ণীত” ।8 CCh 264.2