খ্রীষ্টের দৃষ্টান্তমূলক শিক্ষা
“প্রথমে অঙ্কুর, পরে শীষ”
মার্ক ৪:২৬-২৯ পদের উপর ভিত্তি করে রচিত
বীজবাপকের দৃষ্টান্তটি ইতোমধ্যে প্রচুর প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। শ্রোতাদের অনেকে এই দৃষ্টান্ত শুনে বুঝতে পেরেছেন যে, খ্রীষ্ট কোন পার্থিব রাজ্য প্রতিষ্ঠা করতে আসেননি, এবং তাদের অনেকে আরও বেশি কৌতূহলী ও দ্বিধান্বিত হয়ে পড়েছে। তাদের এই দ্বিধা দেখে খ্রীষ্ট আরেকটি দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করলেন, যেন লোকেরা পার্থিব রাজ্যের প্রত্যাশা না করে বরং তাদের নিজেদের আত্মায় ঈশ্বরের অনুগ্রহের কাজের প্রতি দৃষ্টি দেয়। “তিনি আরও কহিলেন, ঈশ্বরের রাজ্য এইরূপ। কোন ব্যক্তি যেন ভূমিতে বীজ বুনে; পরে রাত দিন নিদ্রা যায় ও উঠে, ইতোমধ্যে ঐ বীজ অঙ্কুরিত হইয়া বাড়িয়া উঠে, কিন্তু কিরূপে তাহা বাড়িয়া উঠে তাহা সে জানে না। ভূমি আপনা আপনি ফল উৎপন্ন করে; প্রমে অঙ্কুর, পরে শীষ, তাহার পর শীষের মধ্যে পূর্ণ শস্য। কিন্তু ফল পাকিলে সে তৎক্ষণাৎ কাস্তে লাগায়, কেননা শস্য কাটিবার সময় উপস্থিত।” COLBen 48.1
শস্য কাটার সময় এসে গেছে বলে যে কৃষক হাতে কাস্তে তুলে নিয়েছেন, তিনি খ্রীষ্ট বৈ আর কেউ নন। তিনিই সেই শেষ মহান দিনে সারা পৃথিবীর ফসল কাটবেন। কিন্তু বীজ-বাপক বলতে বোঝানো হয়েছে তাদেরকে, যারা খ্রীষ্টের পক্ষে পরিশ্রম করেন। বলা হয়েছে বীজ “আপনা আপনি ফল উৎপন্ন করে, কিন্তু কিরূপে বেড়ে উঠে তা সে জানে না,” এই ব্যক্তি প্রকৃত অর্থে ঈশ্বরের পুত্র নয়। খ্রীষ্ট কখনো তাঁর দায়িত্ব মাথায় নিয়ে ঘুমিয়ে যান না, বরং তিনি দিন রাত তার তদারকি করেন। কীভাবে বীজগুলো বেড়ে অঙ্কুরোদগম হয় সে ব্যাপারে তিনি অজ্ঞ নন। COLBen 48.2
বীজের দৃষ্টান্তটি প্রকাশ করে যে, ঈশ্বর প্রকৃতির মাঝে কাজ করেন। বীজের মাঝে রয়েছে সহজাতভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার নীতি, যে নীতি স্বয়ং ঈশ্বর তাঁর মাঝে স্থাপন করেছেন; তথাপি সেই বীজটির একাকী অঙ্কুরে পরিণত হওয়ার কোন ক্ষমতাই নেই। শস্যের বৃদ্ধি পাওয়ার পেছনে মানুষের নিজস্ব দায়িত্বটুকু অবশ্যই পালন করতে হবে। তাকে অবশ্যই ভূমি প্রস্তুত করতে হবে এবং তা বীজ বপনের জন্য উর্বর করে তুলতে হবে। তাকে অবশ্যই জমি চাষ করতে হবে। কিন্তু একটি পর্যায়ে আসার পর তার আর করার কিছু থাকে না। মানুষের শক্তি বা জ্ঞান একটি বীজকে সুন্দর চারাগাছে রূপান্তরিত করতে পারে না। মানুষ যতই তার সর্বোচ্চ সীমা পর্যন্ত চেষ্টা করুক না কেন, তাকে সেই মহান সত্ত্বার উপরে নির্ভর করতেই হবে, যিনি তাঁর নিজ সর্বময় ক্ষমতার অভূতপূর্ব যোগসূত্র দ্বারা বপন ও কর্তনকে সংযুক্ত করেছেন। COLBen 49.1
বীজে প্রাণ রয়েছে, মাটিতে শক্তি রয়েছে; কিন্তু এ দুটোর মধ্যে দিনে ও রাতে এক অসীম ক্ষমতার সঞ্চার না ঘটলে সেই বীজ কখনোই ফল দেবে না। তৃষ্ণার্ত ভূমিকে আর্দ্র করে তোলার জন্য অবশ্যই বৃষ্টির প্রয়োজন হবে, সূর্য থেকে প্রয়োজন হবে উত্তাপের, যা ভূমিতে সুপ্ত বীজের কাছে পৌঁছে দেবে প্রাণের সঞ্চার। যে জীবন সৃষ্টিকর্তা নিহিত রেখেছেন, একমাত্র তিনিই তা দৃশ্যমান করে তুলতে পারেন। প্রতিটি বীজ বৃদ্ধি লাভ করে, প্রতিটি উদ্ভিদ বিকশিত হয় একমাত্র ঈশ্বরের ক্ষমতায়। COLBen 49.2
“বস্তুতঃ ভূমি যেমন আপন অঙ্কুর নির্গত করে, উদ্যান যেমন আপনার মধ্যে উপ্ত বীজ অঙ্কুরিত করে, তেমনি প্রভু সদাপ্রভু সমুদয় জাতির সাক্ষাতে ধার্মিকতা ও প্রশংসা অঙ্কুরিত করিবেন।” যিশাইয় ৬১:১১। আত্মিক বীজ বপনও প্রাকৃতিক বীজ বপনের মতই। একজন সত্যের শিক্ষককে অবশ্যই আগে হৃদয়ের ভূমি প্রস্তুত করতে হবে। তাকে অবশ্যই বীজ বপন করতে হবে; কিন্তু যে শক্তিতে জীবনের উদগম ঘটে তা একমাত্র ঈশ্বরের কাছ থেকেই আসে। একটি নির্দিষ্ট পর্যায়ের পরে মানবীয় সমস্ত প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যায়। আমরা যখন বাক্য প্রচার করি, তখন আত্মাকে উজ্জীবিত করে ও ধার্মিকতা ও প্রশংসার জন্য এগিয়ে নিয়ে আসে যে শক্তি তা আমরা নিজেরা কখনো সঞ্চার করতে পারি না। ঈশ্বরের বাক্য প্রচারে এমন এক প্রতিনিধি কাজ করে যা সমস্ত মানবীয় ক্ষমতার উর্ধ্বে। একমাত্র স্বর্গীয় আত্মার মধ্য দিয়েই বাক্য জীবন্ত ও শক্তিশালী হয়ে ওঠে, যা আত্মাকে অনন্ত জীবনে নতুনীকৃত করে তোলে। এই বিষয়টি দিয়েই খ্রীষ্ট তাঁর শিষ্যদেরকে প্রভাবিত করতে চেয়েছেন। তিনি শিক্ষা দিয়েছিলেন যে, তাদের নিজেদের কোন যোগ্যতাই তাদের পরিশ্রমের ক্ষেত্রে সাফল্য বয়ে নিয়ে আসতে পারে না, বরং ঈশ্বরের অলৌকিক কার্যকারী শক্তি তাঁর নিজ বাক্যের কার্যকারিতা সাধন করে। COLBen 49.3
বীজবাপকের কাজ হচ্ছে বিশ্বাসের কাজ। একটি বীজের অঙ্কুরোদগম ও বেড়ে ওঠার রহস্য বীজ-বাপক বুঝতে পারে না। কিন্তু যে শক্তি ও ক্ষমতার দ্বারা ঈশ্বর তরুলতাকে বৃদ্ধি দান করেন সেই শক্তির উপরে সে নির্ভর করতে পারে। জমিতে বীজ ছিটিয়ে দেয়ার মধ্য দিয়ে সে আপাতদৃষ্টিতে সেই মূল্যবান শস্যদানা ছড়িয়ে দিচ্ছে, যা তার পরিবারের খাদ্যের যোগান দিতে পারতো। কিন্তু সে অদূর ভবিষ্যতে আরও বেশি করে ফিরে পাওয়ার জন্যই বর্তমানের এই ক্ষুদ্র সঞ্চয় ত্যাগ করছে। সে তার বীজগুলো ছড়িয়ে দিচ্ছে এই আশায় যে, সে তার বহুগুণ ফসল আকারে ফিরে পাবে। কাজেই খ্রীষ্টের দাসদেরকে পরিশ্রম করে যেতে হবে এবং তারা যে বীজ বপন করছেন তা থেকে বহুগুণ ফসলের আকাঙ্ক্ষা পোষণ করতে হবে। COLBen 50.1
একটি ভালো বীজ হয়তো কোন শীতল, স্বার্থপর, পার্থিব হৃদয়ে একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত নিস্ক্রিয়ভাবে অবস্থান করতে পারে এবং তার কোন শিকড় গজিয়েছে কিনা তার কোন প্রমাণ পাওয়া নাও যেতে পারে। কিন্তু এরপর ঈশ্বরের আত্মা যখন সেই আত্মার উপরে নিঃশ্বাস ফেলবেন, তখন সেই সুপ্ত বীজ জেগে উঠবে এবং অবশেষে তা ঈশ্বরের গৌরব প্রকাশের জন্য ফল ধারণ করবে। আমরা আমাদের জীবদ্দশায় কখনো আগে থেকে জানতে পারি না যে, কোনটি সাফল্যের মুখ দেখবে এবং কোনটি দেখবে না। এটি নির্ধারণ করা আমাদের কাজও নয়। আমাদেরকে আমাদের কাজ করে যেতে হবে এবং এর ফলাফলের ভার ঈশ্বরের উপরে অর্পণ করতে হবে। “তুমি প্রাতঃকালে আপন বীজ বপন কর, এবং সায়ংকালেও হস্ত নিবৃত্ত করিও না। কেননা ইহা কিম্বা উহা, কোন্টা সফল হইবে, কিম্বা উভয় সমভাবে উৎকৃষ্ট হইবে, তাহা তুমি জান না,” উপদেশক ১১:৬। ঈশ্বরের মহান প্রতিজ্ঞা আমাদের কাছে এই ঘোষণা দেয় যে, “যাবৎ পৃথিবী থাকিবে, তাবৎ শস্য বপনের ও শস্য ছেদনের সময় . . . এই সকলের নিবৃত্তি হইবে না,” আদিপুস্তক ৮:২২। এই প্রতিজ্ঞার উপরে আস্থা রেখেই একজন কৃষক জমি চাষ করে ও বীজ বপন করে। আমরাও ঠিক একইভাবে তাঁর নিশ্চয়তার উপরে আস্থা রেখে আত্মিক বীজ বপন করার জন্য পরিশ্রম করি। “তাহা নিষ্ফল হইয়া আমার কাছে ফিরিয়া আসিবে না, কিন্তু আমি যাহা ইচ্ছা করি, তাহা সম্পন্ন করিবে, এবং যে জন্য তাহা প্রেরণ করি, সেই বিষয়ে সিদ্ধার্থ হইবে,” যিশাইয় ৫৫:১১। “যে ব্যক্তি রোদন করিতে করিতে বপনীয় বীজ লইয়া বাহিরে যায়, সে আনন্দগান-সহ আপন আটি লইয়া আসিবেই আসিবে,” গীত ১২৬:৬। COLBen 50.2
বীজের অঙ্কুরোদগম নির্দেশ করে আত্মিক জীবনের সূচনা এবং তৃণের বৃদ্ধিলাভ নির্দেশ করে খ্রীষ্টানদের বর্ধিষ্ণুতার এক চমৎকার প্রতিরূপ। প্রকৃতির মত ঈশ্বরের অনুগ্রহের ক্ষেত্রেও বৃদ্ধিলাভ ব্যতীত জীবনের বিকাশ ঘটতে পারে না। তৃণটি হয় বৃদ্ধি পাবে নতুবা মারা যাবে। তার বৃদ্ধি লাভের প্রক্রিয়াটি নীরব এবং তা দৃষ্টিগোচর নয়, কিন্তু তা একটি চলমান প্রক্রিয়া। খ্রীষ্টিয় জীবনের বৃদ্ধি লাভের প্রক্রিয়াও ঠিক তেমন। আমাদের জীবনের প্রত্যেকটি পর্যায়ের উত্তরণ নিখুঁত হতে পারে; তথাপি যদি এর মধ্য দিয়ে আমাদের জন্য ঈশ্বরের উদ্দেশ্য পরিপূর্ণ হয় তাহলে এই উত্তরণ একটি চলমান প্রক্রিয়ায় রূপ নেবে। পবিত্রীকরণ সারা জীবনব্যাপী চলমান একটি প্রক্রিয়া। আমাদের সুযোগ যেমন বৃদ্ধি পায়, আমাদের অভিজ্ঞতাও সুসমৃদ্ধ হয় এবং আমাদের জ্ঞানের পরিসর বৃদ্ধি পায়। দায়িত্ব গ্রহণের জন্য আমরা শক্তিশালী ও যোগ্য হয়ে উঠি এবং আমাদের প্রাপ্ত সুযোগ অনুসারে আমাদের পরিপক্বতা প্রকাশিত হয়। COLBen 51.1
তৃণের জীবন ধারণের জন্য ঈশ্বর তাকে যতটুকু শক্তি যোগান দেন তাই নিয়ে সে বেড়ে ওঠে। তৃণ তার মূল ভূমির গহীনে বিস্তার করে। সে সূর্যের রশ্মি, শিশির এবং বৃষ্টি থেকে শক্তি লাভ করে। সে বায়ু থেকে জীবনদায়ী উপাদান আহরণ করে। কাজেই ঈশ্বরীয় ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের সাথে সহভাগিতা রক্ষার মধ্য দিয়ে খ্রীষ্টিয়ানরা বৃদ্ধি লাভ করবে। আমাদের উচিত নিজেদের অসহায়ত্ব অনুভব করে ঈশ্বরের অনুগ্রহ জীবনে আহরণ করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করা। তৃণ যেমন ভূমিতে শেকড় বিস্তার করে, তেমনি আমাদেরও খ্রীষ্টেতে শেকড় বিস্তার করতে হবে। তৃণ যেভাবে সূর্যের রশ্মি, শিশির ও বৃষ্টি গ্রহণ করে, তেমনি আমাদেরও পবিত্র আত্মাকে গ্রহণ করার জন্য নিজেদের হৃদয় উন্মুক্ত করে দিতে হবে। এই কার্য সম্পাদন হবে “‘পরাক্রম দ্বারা নয়, বল দ্বারাও নয়, কিন্তু আমার আত্মা দ্বারা,’ এই কথা বাহিনীগণের সদাপ্রভু বলেন,” সখরিয় ৪:৬। যদি আমরা খ্রীষ্টেতে আমাদের অন্তর স্থির রাখি, তাহলে তিনি আমাদের উপরে “বৃষ্টির ন্যায় আসিবেন, ভূমি-সেচনকারী শেষ বর্ষার ন্যায় আসিবেন,” হোশেয় ৬:৩। ধার্মিকতার সূর্যের মত তিনি আমাদের উপরে উদিত হবেন, “তাঁহার পক্ষপুট আরোগ্যদায়ক,” মালাখি ৪:২। আমরা “শোশন পুষ্পের ন্যায় ফুটিব।” আমরা “শস্যবৎ সঞ্জীবিত হইব, দ্রাক্ষালতার ন্যায় ফুটিব, হোশেয় ১৪:৫, ৭। খ্রীষ্টকে যদি আমরা আমাদের ব্যক্তিগত ত্রাণকর্তা হিসেবে সব সময় নির্ভর করতে থাকি, তাহলে তাঁকে আমাদের মস্তক হিসেবে পেয়ে তাঁকে নিয়েই আমরা বৃদ্ধি লাভ করব। COLBen 51.2
শস্যের বৃদ্ধির প্রক্রিয়া আমরা এখানে দেখি: “প্রমে তৃণ পত্র, পরে শীষ, তাহার পর শীষের মধ্যে পূর্ণ শস্য।” বীজ বপন ও তৃণের বেড়ে ওঠার পরিচর্যা করার পেছনে কৃষকের উদ্দেশ্য হচ্ছে শস্য উৎপাদন করা। যে ক্ষুধা নিবারণের জন্য খাবার ও ভবিষ্যতের জন্য শস্য সংগ্রহ করে। একই ভাবে স্বর্গীয় বীজ-বাপক তাঁর পরিশ্রম ও আত্মোৎসর্গের জন্য পুরস্কার হিসেবে ফসল আশা করেন। খ্রীষ্ট মানুষের হৃদয়ে নিজের প্রতিরূপ সৃষ্টি করতে চান, যারা তাঁকে বিশ্বাস করে, তাদের হৃদয়ে তিনি এই কাজ করবেন। খ্রীষ্টিয় জীবনের উদ্দেশ্য হচ্ছে ফল ধারণ করা ওবিশ্বাসীদের জীবনে খ্রীষ্টের চরিত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা, যেন অন্য সকলের মাঝে তা সঞ্চারিত হয়। COLBen 52.1
এই উদ্ভিদ তার নিজের জন্য অঙ্কুরোদগম, বৃদ্ধি লাভ বা ফল ধারণ করে না, কিন্তু “বপনকারীকে বীজ ও ভক্ষককে ভক্ষ্য” দেওয়া, যিশাইয় ৫৫:১০। তাই কোন মানুষই তার নিজের জন্য জীবন ধারণ করে না। একজন খ্রীষ্টান এই পৃথিবীতে খ্রীষ্টের একজন প্রতিনিধি, যেন সে অপরের আত্মার জন্য পরিত্রাণ নিয়ে আসতে পারে। COLBen 52.2
আত্মকেন্দ্রিকতাপূর্ণ জীবনে কোন বৃদ্ধি বা ফলবন্ততা দেখা দিতে পারে না। যদি আপনি খ্রীষ্টকে আপনার ব্যক্তিগত ত্রাণকর্তা হিসেবে গ্রহণ করতে চান, তাহলে আপনার নিজের কথা ভুলে যেতে হবে এবং অন্যদেরকে সাহায্য করতে হবে। অন্যদের কাছে খ্রীষ্টের ভালবাসার কথা বলুন, তাঁর মঙ্গলময়তার কথা বলুন। তাঁর উপস্থিতি প্রকাশ করে এমন সমস্ত কর্তব্য নিষ্ঠার সাথে পালন করুন। আপনার হৃদয়ে আত্মার ভার বহন করুন এবং আপনার সমস্ত শক্তি দিয়ে যারা হারিয়ে গেছে তাদেরকে উদ্ধার করার জন্য চেষ্টা করে যান। যখন আপনি আপনার মাঝে খ্রীষ্টের আত্মা ধারণ করবেন, অপরের জন্য নিঃস্বার্থ ভালবাসা ও পরিশ্রমের সেই আত্মা ধারণ করবেন, তখন আপনি বৃদ্ধি লাভ করবেন, এবং ফল ধারণ করবেন। আপনার চরিত্রে আত্মার সমস্ত অনুগ্রহ পরিপক্কতা লাভ করবে। আপনার বিশ্বাস বৃদ্ধি পাবে, আপনার চেতনা গভীরতর হবে, এবং আপনার ভালবাসা নিখুঁত হয়ে উঠবে। আপনার মাঝে ঈশ্বরীয় চরিত্র ক্রমেই আরও পবিত্র, মহৎ ও প্রেমময় হয়ে প্রকাশিত হবে। COLBen 52.3
“কিন্তু আত্মার ফল প্রেম, আনন্দ, শান্তি, দীর্ঘসহিষ্ণুতা, মাধুর্য, মঙ্গলভাব, বিশ্বস্ততা, মৃদুতা, ইন্দ্রিয়দমন,” গালাতীয় ৫:২২, ২৩। এই ফল কখনো বিনষ্ট হতে পারে না, বরং তা আমাদের জন্য অনন্ত জীবন ফল হিসেবে উৎপন্ন করে। COLBen 53.1
“ফল পাকিলে সে তৎক্ষণাৎ কাস্তে লাগায়, কেননা শস্য কাটিবার সময় উপস্থিত।” খ্রীষ্ট নিজেকে মণ্ডলীর সামনে স্বমহিমায় প্রকাশ করার জন্য দীর্ঘ প্রতীক্ষায় রয়েছেন। যখন খ্রীষ্টের চরিত্র তাঁর লোকদের মাঝে নিখুঁত ও পূর্ণাঙ্গভাবে দেখা দেবে, ঠিক তখনই তিনি তাদেরকে তাঁর নিজের লোক হিসেবে গ্রহণ করার জন্য এই পৃথিবীতে অবতীর্ণ হবেন। COLBen 53.2
আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের আগমনের জন্য নিজেদেরকে প্রস্তুত করা ও ব্যাগ্রভাবে প্রতীক্ষায় থাকা প্রত্যেক খ্রীষ্টানের জন্য এক অভূতপূর্ব সুযোগ (২ পিতর ৩:১২)। পৃথিবীর প্রত্যেকটি মানুষ যদি তাঁর গৌরব প্রকাশ করার জন্য তাঁর নামে ফল ধারণ করে, তাহলে না কত দ্রুত সমগ্র পৃথিবীতে সুসমাচারের বীজ বপন করা সম্ভব হবে। খুব শীঘ্র শেষ মহান ফসল কর্তনের জন্য পরিপক্ব হবে এবং খ্রীষ্ট সেই মহামূল্যবান শস্য উত্তোলন সংগ্রহ করবেন। COLBen 53.3