মণ্ডলীর জন্য উপদেশ

22/327

বিশ্রামবারে স্কুলে যোগদান

যে কেহ চতুর্থ আজ্ঞা পালন করে, সে দেখিতে পাইবে যে, তাহার জগতের মধ্যে একটী রেখাপাত করিয়া জগত হইতে তাহাকে পৃথক্ করা হইয়াছে। বিশ্রামবার একটী কষ্টিপাথর, কোন মানবীয় দাবী দাওয়া নহে, কিন্তু স্বয়ং ঈশ্বরেরই কষ্টি-পাথর। যাহারা ঈশ্বরের সেবা করে ও ও যাহারা ঈশ্বরের সেবা করে না, ইহা তাহাদের মধ্যে পার্থক্য নির্দ্দেশ করে; আর এই বিষয়টি লইয়া শেষকালে সত্যের ও মিথ্যার মধ্যে মহা সংগ্রাম উপস্থিত হইবে। CCh 99.2

আমাদের কোন কোন লোক তাঁহাদের সন্তানসন্ততিকে বিশ্রামবারে স্কুলে পাঠাইয়া থাকেন। তাঁহারা যে ইহা করিতে বাধ্য হন, এমন নহে; ছয় দিন স্কুলে যোগদান না করিলে স্কুল-কর্ত্তৃপক্ষগন তাঁহাদের সন্তানগণকে স্কুলে গ্রহণ করিতে আপত্তি করেন, এই জন্যই তাঁহারা তাঁহাদের সন্তানগণকে বিশ্রারামবারে স্কুলে পাঠাইয়া থাকেন। কোন কোন স্কুলে ছাত্রছাত্রীদিগকে কেবল যে নিয়মিত পাঠ্য সম্বন্ধে শিক্ষা দেওয়া হয়, এমন নহে, অধিকন্তু নানা প্রকার হস্ত-কর্ম্মও শিক্ষা দেওয়া হয়; আর এইরূপ স্থানে নামধারী আজ্ঞাপালনকারিগণের সন্তান-সন্ততিকে বিশ্রামবারে স্কুলে পাঠান হয়। বিশ্রামবারে সৎকর্ম্ম করা বিধেয়, খ্রীষ্টের এই বাক্যের পুনরুক্তি করিয়া কোন কোন মাতাপিতা নিজেদিগের দোষক্ষালন করিতে চেষ্টা করেন। কিন্তু যদিও ঐ যুক্তিই মানিয়া লইতে হয়, তবে ইহা প্রমাণিত হইবে যে, সন্তানসন্ততির আহার যোগাইতে হইবে বলিয়া বিশ্রামবারে কার্য্য করা যাইতে পারে; আর এইজন্যই বিশ্রামবারে কি করিতে হইবে এবং কি করিতে হইবে না, তাহারও কোন সীমা রেখা থাকিবে না। CCh 100.1

যে স্থানে বিশ্রামবার পালন করা অসম্ভব, সেই স্থানে সন্তানসন্ততিকে পাঠাইলে, ঈশ্বর তাহাতে অনুমোদন করিবেন, এইরূপ আশা করা যায় না। সন্তানেরা যেন সপ্তমদিনে স্কুলে যোগদান হইতে আব্যহতি পায়, তজজন্য স্কুলের কর্ত্ত্পক্ষগণের সহিত বন্দোবস্ত করা সম্ভব না হয়, তবে যাহাই কিছু ঘটুক না কেন, ঈশ্বরের দাবী দাওয়া পালন করা, তাহাদের অবশ্য কর্ত্তব্য বলিয়া বিবেচিত হইবে। CCh 100.2

কেহ কেহ হয়তো এই কথায় জর দিবেন যে, সদাপ্রভু তাঁহার দাবী দাওার বিষয় তত কড়া নহেন। সুতরাং এত মহাক্ষতি স্বীকার করিয়া, অথবা দেশের আইনের বিরুদ্ধাচারী হইয়া সূক্ষ্মভাবে বিশ্রামবার পালন করা আবশ্যক নহে। কিন্তু মনুষ্যের আজ্ঞা অপেক্ষা ঈশ্বরের আজ্ঞার সমাদর করিব, কিনা, - এই স্থানেই তাহার পরীক্ষা। যাহারা ঈশ্বরের সমাদর করে এবং যাহারা ঈশ্বরের সমাদর করে না, এই উভয়ের মধ্যে কী পার্থক্য, এতদ্দ্বারা তাহা জানা যাইবে। এই স্থানেই আমাদের বিশ্বস্ততার প্রমান হইবে। সমূদয় যুগে ঈশ্বরের লোকদের সহিত তাঁহার ব্যবহারে ইহাই প্রতিপন্ন হয় যে, তিনি নিখুঁত আজ্ঞাবহতা চাহেন। CCh 101.1

মাতাপিতাগণ তাহাদের সন্তানগণকে জগতের সহিত শিক্ষা গ্রহণ করিতে অনুমতি দিলে এবং বিশ্রামদিনকে একটী সাধারণ দিনে পরিণত করিলে, তাহদের উপরে ঈশ্বরের মুদ্রাঙ্ক দিতে পারা যাইবে না। সুতরাং তাহারা জগতের সহিত বিনষ্ট হইবে; আর তাহা হইলে তাহাদের রক্ত কি তাহাদের মাতাপিতার উপরে পতিত হইবে না? কিন্তু আমরা যদি আমাদের সন্তানসন্ততিকে ঈশ্বরের আজ্ঞাসকল পালন করিতে বিশ্বস্তভাবে শিক্ষা দেই এবং তাহাদিগকে মাতাপতার শাসনের বশে আনয়ন করি, এবং তাহাদিগকে বিশ্বাস ও প্রার্থনা পূর্ব্বক ঈশ্বরের হস্তে সমর্পণ করি, তাহা হইলে তিনি আমাদের চেষ্টায় আশীর্ব্বাদ করিবেন, কারণ ইহা তাঁহার প্রতিজ্ঞা। আর দেশের উপরে যখন আঘাত সকল অপর্য্যাপ্তরূপে পতিত হইতে থাকিবে, তখন সদাপ্রভু তাহাদিগকে আমাদের সহিত তাঁহার তাম্বুল অন্তরালে লুকাইয়া রাখিবেন।14 CCh 101.2