মণ্ডলীর জন্য উপদেশ

116/327

খ্রীষ্টীয় সাধুতা

প্রত্যেক কাজ-কারবারে অনাবিল সততা রক্ষা করা কর্ত্তব্য । যতই পরীক্ষা আইসুক না কেন, কখনও কাহাকেও কণামাত্রও ঠকাইবেন না, কিংবা সত্যের অপলাপ করিবেন না । সততার সরল পথ হইতে বিচ্যুত করিবার নিমিত্ত কখন-কখন পরীক্ষা প্রলোভন আসা স্বাভাবিক, কিন্ত তাহাতে কখনও এক চুলও এদিক ওদিক হইবেন না । কোন বিষয়ে কিছু করিবেন বলিয়া আপনি যখন পরে যদি আপনাকে প্রতিশ্রুতি দেন, এবং ঐ প্রতিশ্রতি রক্ষার জন্য পরে যদি আপনাকে ক্ষতিগ্রস্ত হইতে হয়, তথাপি আপনি আপনার নীতি হইতে এক চুলও এদিক ওদিক হইবে না । আপনার প্রতিশ্রুতি বা চুক্তি অবশ্যই রক্ষা করিবেন ।2 CCh 292.2

সর্ব্বপ্রকার মিথ্যা বাক্যকে, মিথ্যা ব্যভারকে ও প্রবঞ্চনাকে বাইবেল তিব্র ভাবে দোষী করে । ইহাতে ন্যায় ও অন্যায় সুস্পষ্টরূপে বর্ণিত আছে । কিন্ত আমাকে দেখান হইয়াছিল যে, ঈশ্বরের লোকেরা নিজেদিগকে শত্রুর দলভুক্ত করিয়াছে ; তাহারা যে পর্য্যন্ত না ভয়াবহরূপে সংজ্ঞাহীন হয়, তাবৎ তাহারা তাহার পরীক্ষায় পততি হইয়া তারা অভিসন্ধি অনুযায়ী কার্য্য করিয়াছে । যখন কোন আর্থিক লাভ-লোকসান জড়িত থাকে, তখন সত্য হইতে সামান্য একটু সরিয়া যাওয়া, ঈশ্বরের দাবী-দাওয়ার একটু এদিক ওদিক করা, মোটের উপরে তত বেশী মারাত্ম পাপ বলিয়া মনে হয় না । কিন্ত লাখ পতির হউক, কিংবা রাস্তার ভিখারীর হউক, যাহা পাপ, তাহা পাপই । যাহারা মিথ্যা বর্ণনা দ্বারা সম্পত্তি লাভ করে, তাহারা তাহাদের উপরে নিজেদের দন্দাজ্ঞা আনয়ন করে । ছল চাতুরী দ্বারা যাহা কিছু লাভ করা হইবে, তাহা গ্রহীতার পক্ষে অভিশাপ স্বরূপ হইবে ।3 CCh 293.1

(যে কেহ মিথ্যা কথা বলে বা প্রতারণা করে) সে আত্ম-সম্মান হারায় । ঈশ্বর তাহাকে দেখিতে পান ও তাহার প্রত্যেক কাজ-কারবার সম্বন্ধে তিনি জানেন, পবিত্র দূতগণ তাহার উদ্দেশ্য তৌল করিতেছেন ও তাহার কথাবার্ত্তা মনোযোগ সহকারে শুনিতেছেন এবং সে তাহার ক্রিয়া অনুযায়ী ফল লাভ করিবে, এই সকল কথা সে নাও জানিতে পারে : কিন্ত মনুষ্যের ও ঈশ্বরের তদন্তের হস্ত হইতে তাহার জানিত অসৎকার্য্য লুক্কায়িত রাখা যদি সম্ভবপর হইত, তথাপি সে নিজে ইহা জানে, এই সত্যটীই তাহার মনের ও স্বভাবের মর্য্যাদার হানিকর হইত । একটী কার্য্য দ্বারা চরিত্র নির্ধারিত হয় না, কিন্ত ইহা দ্বারা বেষ্টনী ভাঙ্গিয়া যায়, লোকে পরবর্ত্তী পরীক্ষায় সহজেই পতিত হয়, তাহাতে অবশেষে তাহার কাজ-কারবারে প্রবঞ্চনার ও মিথাকথনের এমন একটী স্বভাব গঠিত হইয়া উঠে যে, তাহাকে আর বিশ্বাস করা যায় না ।4 CCh 293.2

ঈশ্বর চাহেন, যেন তাঁহার ধ্বজাতলের কার্য্যকারিগণ সততায় নিখুঁত, ও চরিত্রে অনিন্দনীয় হয়, তাহাদের জিহ্বায় যেন কোন অসত্য কথা উচ্চারিত না হয় । জিহ্বা ও চক্ষু সত্য হওয়া ও কার্য্যাদি ঈশ্বর যেরূপ চাহেন, ঠিক্ তদ্রূপই হওয়া আবশ্যক । আমরা এমন এক পবিত্র ঈশ্বরের সমক্ষে জীবন যাপন করিতেছি, যিনি অতি গম্ভীরভাবে বলিতেছেন, “আমি জানি তোমার কার্য্য সকল” ঈশ্বরের চক্ষু সর্ব্বদাই আমাদের উপরে বিদ্যমান । আমরা একটী অন্যায় কার্য্যও ঈশ্বর হইতে লুক্কায়িত রাখিতে পারি না । আমাদের প্রত্যেক কার্য্যে ঈশ্বরের সাক্ষ্য সত্য, কিন্ত অতি অল্প লোকেই ইহা হৃদয়ঙ্গম করে ।5 CCh 294.1