মণ্ডলীর জন্য উপদেশ

94/327

স্বীয় সন্তানসন্ততিগণের প্রতি ঈশ্বরের ব্যক্তিগত অনুরাগ

ঈশ্বর ও খ্রীষ্টের মধ্যে যে কি ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধ, শাস্রে তাহা সুস্পষ্টরূপে বর্ণিত আছে এবং এতদ্বারা উভয়ের ব্যক্তিত্ব ও স্বাতন্ত্র্য সুস্পষ্টরূপে প্রকাশিত হইয়াছে । CCh 257.1

ঈশ্বর খ্রীষ্টের পিতা; খ্রীষ্ট ঈশ্বরের পুত্র । খ্রীষ্ট গৌরবান্বিত পদ দান করা হইয়াছে । তাঁহাকে পিতার সমকক্ষ করা হইয়াছে । ঈশ্বরের সমস্ত মন্ত্রনা তাঁহার পুত্রের নিকটে প্রকাশ করা হইয়াছে। CCh 257.2

যোহন লিখিত সুসমাচারে ১৭শ অধ্যায়ে খ্রীষ্ট স্বীয় শিষ্যগণের নিমিত্ত যে প্রার্থনা উৎসর্গ করিয়াছেন, তাহাতেও এই একতার বিষয় বিবৃত আছে : — CCh 257.3

“আর আমি কেবল ইহাদেরই নিমিত্ত নিবেদন করিতেছি, তাহা নয়, কিন্ত ইহাদের বাক্য দ্বারা যাহারা আমাতে বিশ্বাস করে, তাহাদের নিমিত্তেও করিতেছি; যেন তাহারা সকলে এক হয় ; পিতঃ যেমন তুমি আমাতে ও আমি তোমাতে, তেমনি তাহারাও যেন আমাদিগেতে থাকে ; যেন জগৎ বিশ্বাস করে যে, তুমি আমাকে প্রেরণ করিয়াছে । আর তুমি আমাকে যে মহিমা দিয়াছ, তাহা আমি তাহাদিগকে দিয়াছি ; যেন তাহারা এক হয়, যেমন আমরা এক ; আমি তাহাদিগকে ও তুমি আমাতে, যেন তাহারা সিদ্ধ হইয়া এক হয় ; যেন জগৎ জানিতে পায় যে, তুমি আমাকে প্রেরণ করিয়াছ, এবং আমাকে যেমন প্রেম করিয়াছ, তেমনি তাহাদিগকেও প্রেম করিয়াছ ।” (যোহন ১৭ : ২০-২৩) । CCh 257.4

কি অত্যাশ্চর্য্য বর্ণনা ! খ্রীষ্ট ও তাঁহার শিষ্যগণের মধ্যে যে একতা বিদ্যমান তাহা এই দুইয়ের কাহারও ব্যক্তিত্ব নষ্ট করে না । তাহারা উদ্দেশ্য, মনে ও স্বভাবে এক, কিন্ত ব্যক্তিত্বে বা শরীরে এক নহেন । এইরূপে ঈশ্বর এবং খ্রীষ্ট এক । CCh 257.5

স্বর্গ ও পৃথিবী আমাদের ঈশ্বরের আজ্ঞাধীন ; এবং আমাদের অভাব অভিযোগ কী তাহাও তিনি সঠিকরূপে অবগত আছেন । আমাদের সম্মুখের পথ আমরা কেবল অল্প দূর পর্য্যন্তই দেখিতে পাই; কিন্ত “তাঁহার চক্ষুর্গোচরে সকলই নগ্ন ও অনাবৃত রহিয়াছে, যাঁহার কাছে আমাদিগকে নিকাশ দিতে হইবে ।” (ইব্রীয় ৪ : ১৩) । পৃথিবীর সকল বিভ্রান্তির উর্দ্ধে তিনি সিংহসনোপবিষ্ট ; সকলই তাঁহার ঐশ্বরিক দৃষ্টির সম্মুখে অনাবৃত ; তাঁহার ঐশ্বরিক পরিমাণদর্শিতা ও বিধান অনুযায়ী তিনি যাহা সর্ব্বোত্তম দেখেন, তাঁহার মহান্ ও শান্ত উর্দ্ধলোক হইতে তাহাই তিনি আদেশ দিয়া থাকেন । CCh 258.1

এমন কি একটী চটক অগোচরে ভূমিতে পতিত হয় না । ঈশ্বরের বিরুদ্ধে শয়তানের ঈর্ষ্যা এত প্রবল যে, এমন কি মূকবধির প্রানিগণকেও ধ্বংস করিতে সে আনন্দ উপভোগ করিয়া থাকে । ঈশ্বরের একমাত্র রক্ষাকারী তত্ত্বাবধানের ফলে পাক্ষিগণ সুরক্ষিত হইয়া তাহাদের সুমধুর আনন্দ সঙ্গীতের দ্বারা আমাদিগকে উল্লাসিত করিয়া থাকে । কিন্ত তিনি এমন কি চটক পক্ষীকেও ভুলেন না । এই জন্যই শাস্রে লিখিত আছে, “ভয় করিও না, তোমরা অনেক চড়াই পাখী হইতে শ্রেষ্ঠ ।” (মথি ১০ : ৩১) । CCh 258.2