মণ্ডলীর জন্য উপদেশ
খ্রীষ্ট মানবগণকে ঈশ্বরের পুত্র হইবার ক্ষমতা দান করেন
ক্রুশারোপণের পূর্ব্ব-রাত্রিতে খ্রীষ্ট উপরিস্থ কুঠরিতে যে সকল বাক্য বলিয়াছিলেন, আইসুন আমরা তাহা অধ্যয়ন করি । তিনি তাঁহার পরীক্ষাকালের নিকটবর্ত্তী হইতেছিলেন বলিয়া তাঁহার যে শিষ্যগণের গুরুতর পরীক্ষার মধ্য দিয়া যাইতে হইবে, তাঁহদিগকে তিনি সান্ত্বনা দান করিতে চেষ্টা করিলেন । CCh 255.2
ঈশ্বরের সহিত খ্রীষ্টের যে কি সম্বন্ধ, তৎসম্পর্কে তিনি তাঁহার শিষ্যগণকে যাহা বলিয়াছিলেন তাঁহারা তখনও তাহা বুঝিতে পারেন নাই । তাঁহার এমন অনেক প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করিয়াছিলেন, যদ্দারা তাঁহারা প্রকাশ করিয়াছিলেন, ঈশ্বরের সহিত তাঁহাদের বর্ত্তমান ও ভবিষ্যৎ আশাই বা কি তৎসম্পর্কে তাঁহারা সম্পূর্ণ অজ্ঞ । খ্রীষ্ট চাহিয়াছিলেন, যেন ঈশ্বর সম্বন্ধে তাঁহাদের আরও অধিকতর সুস্পষ্ট ও সুনির্দ্দিষ্ট জ্ঞান জন্মে । CCh 255.3
খ্রীষ্ট দৃষ্টান্ত দ্বারা যে সকল সত্য ব্যক্ত করিয়াছিলেন, পঞ্চাশওমীর দিনে শিষ্যগণের উপরে পবিত্র আত্মা পতিত হইলে, তাঁহারা সে সকল সুস্পষ্টরূপে বুঝিতে পারিলেন । যে সকল শিক্ষা তাঁহাদের নিকট নিগূঢ় ছিল, সে গুলি সুস্পষ্ট হইল । পবিত্র আত্মা প্রাপ্ত হইয়া তাঁহারা যে জ্ঞান লাভ করিলেন, তাহার ফলে, তাঁহাদের কাল্পনিক মতবাদ সম্বন্ধে তাঁহারা লজ্জিত হইলেন । স্বর্গীয় বিষয়সমূহ সম্বন্ধে এক্ষণে তাঁহারা যে জ্ঞানলাভ করিলেন, তাঁহার তুলনায় তাঁহাদের অনুমান ও ব্যাখ্যাদি মূর্খতাস্বরূপ ছিল । তাঁহারা পবিত্র আত্মা দ্বারা পরিচালিত হইয়াছিলেন, আর ইহার ফলে, তাঁহাদের অজ্ঞান অন্ধকারাছন্ন মনে জ্ঞানদীপ্তি উদ্ভাসিত হইয়াছিল । CCh 255.4
কিন্ত শিষ্যগণ তখনও খ্রীষ্টের প্রতিজ্ঞার পূর্ণতা লাভ করিতে পারেন নাই । ঈশ্বর সম্বন্ধে যতটা জ্ঞান লাভ করা তাহাদের পক্ষে সম্বভ ছিল, তাঁহারা কেবল ততটা জ্ঞান লাভ করিলেন, কিন্ত প্রতিজ্ঞার ষোলআনা পূর্ণতা, যাহা খ্রীষ্ট, পিতার সম্বন্ধে সুস্পষ্টরূপে দেখাইবেন, তাহা তখনও বাকী ছিল । অদ্যও ঠিক্ ঐরূপ । ঈশ্বর সম্বন্ধে আমাদের যে জ্ঞান আছে, তাহা আংশিক এবং অসম্পূর্ণ। যখন সংগ্রাম শেষ হইয়া যাইবে এবং মানবরূপী খ্রীষ্ট যীশু স্বীয় বিশ্বস্ত কার্য্যকারিগণকে— যাঁহারা পাপজগতে তাঁহারই জন্য সত্য সাক্ষ্য প্রদান করিয়াছেন, তাঁহাদিগকে— পিতার সম্মুখে স্বীকার করিবেন, তখন তাঁহারা বর্ত্তমান নিগূঢ়-তত্ত্বসমূহ সুস্পষ্টরূপে বুঝিতে পারিবেন । CCh 256.1
খ্রীষ্ট স্বীয় গৌরবান্বিত মানবত্ব লইয়া স্বর্গীয় রাজদরবারে গিয়াছেন । যাহারা খ্রীষ্টকে গ্রহণ করে, তিনি যেন তাহাদিগকে গ্রহণ করিয়া অনন্তকাল তাহাদের সহিত বসবাস করিতে পারেন, তজজন্য তিনি তাহাদিগকে ঈশ্বরের পুত্র হইবার ক্ষমতা দান করেন । এই জীবনে তাহারা যদি ঈশ্বর-ভক্ত হয়, তাহা হইলে অবশেষে তাহারা “তাঁহার মুখ দর্শন করিবে, এবং তাঁহার নাম তাহাদের ললাটে থাকিবে ।” (প্রকাশিত ২২ : ৪) । যদি ঈশ্বরেরই মুখ দর্শন করিতে না পারা যায়, তবে স্বর্গের সুখ-ই বা কী? ঈশ্বরের মুখ দর্শন করা এবং তাঁহাকে পিতা বলিয়া জানা ভিন্ন অন্য কিসে খ্রীষ্টের অনুগ্রহে রক্ষাপ্রাপ্ত পাপীর মহত্তর আনন্দ জন্মিতে পারে? CCh 256.2