পিতৃকুলপতিগণ ও ভাববাদীগণ
৫১—অর্থনৈতিক দুর্গতিতে পরিণতদের বিষয়ে ঈশ্বরের যত্ন
ধর্মীয় সেবাকাজের জন্য লোকদের একত্রিত হতে উৎসাহ দানের জন্য এবং দরিদ্রদের বিশেষ বন্দোবস্তের কারণে সকল প্রকার উন্নতির উপর একটি দ্বিতীয় দশমাংশ দেয়া প্রয়োজন ছিল। প্রথম দশমাংশ সম্বন্ধে সদাপ্রভু বলেছিলেন, “লেবির সন্তানগণ যে সেবাকর্ম করিতেছে, সমাগম-তাম্বু সম্বন্ধীয় তাহাদের সেই সেবাকর্মের বেতনরূপে আমি তাহাদের অধিকারার্থে ইস্রায়েলের সমস্ত দশমাংশ দিলাম।” গণনা ১৮:২১। দ্বিতীয় দশমাংশ প্রতি দু’ বৎসর তাদের যেখানে ধর্মধাম স্থাপিত ছিল, সেখানে আনতে হত। ঈশ্বরের নিকট ধন্যবাদ উপহার ও যাজককে একটি নির্দিষ্ট অংশ দেবার পর দাতারা তাদের বাকী সবটুকুই একটি ধর্মীয় ভোজের জন্য ব্যবহার করত, যে ভোজে লেবীয়েরা, ভ্রমণকারীরা, এতিমরা ও বিধবারা অংশ গ্রহণ করত । PPBeng 380.1
প্রতি তৃতীয় বৎসর দ্বিতীয় দানটি নিজ বাড়ীতে লেবীয়দের ও দরিদ্রদের নিমন্ত্রণ করে আতিথ্য করার জন্য ব্যবহৃত হত। এই দশমাংশের অর্থ দ্বারা দয়া-দাক্ষিণ্য ও আতিথ্য করা হত । PPBeng 380.2
দরিদ্রদের জন্য এর পরও আরো বন্দোবস্ত ছিল। মোশিকে দেয়া ব্যবস্থাগুলির প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল যে ঈশ্বরের দাবীকে স্বীকার করার পর এগুলি দরিদ্রদের প্রতি উদার, নম্র ও আতিথ্যপূর্ণ মনোভাব পোষণের জন্য নির্দেষ প্রদান করেছে। যদিও ঈশ্বর লোকদের অনুগ্রহ আশীর্বাদ দেবার প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, তথাপি তিনি ঘোষণা করেছিলেন যে দেশের মধ্যে দরিদ্র লোকেরা থাকবেই । বর্তমান কালে যেমন ঘটে থাকে সে কালেও তেমনি লোকদের উপর দুর্ভাগ্য, রোগ, সম্পত্তির ধ্বংস ইত্যাদি দুর্ঘটনা উপস্থিত হত; তা সত্বেও যদি তারা ঈশ্বরের নির্দেষ অনুসারে জীবন যাপন করত, তবে তাদের মধ্যে কোন ভিখারী থাকত না .অথবা কেউই অনাহারে দিন যাপন করত না । PPBeng 380.3
ঈশ্বরের ব্যবস্থা ভূমির উৎপন্ন দ্রব্যের মধ্যে গরীবের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করে রেখেছিলেন। যে কোন ক্ষুধার্ত ব্যক্তি তার প্রতিবেশির মাঠে, বাগানে অথবা আঙ্গুরক্ষেতে গিয়ে তার ক্ষুধা নিবারণের জন্য প্রয়োজনীয় খাবার খেতে পারত । PPBeng 380.4
মাঠের বাগানের বা আঙ্গুরক্ষেতের ফসল তোলার পর যা মাঠে পড়ে থাকত তা কুড়িয়ে নেয়ার অধিকার ছিল দরিদ্র লোকদের। মোশি বলেছিলেন “তুমি ক্ষেত্রে আপন শস্য ছেদন কালে যদি এক আটি ক্ষেত্রে ফেলিয়া রাখিয়া আসিয়া থাক, তবে তাহা লইয়া আসিতে ফিরিয়া যাইও না;...যখন তোমার জিতবৃক্ষের ফল পাড়, তখন শাখাতে আবার অবশিষ্টের অন্বেষণ করিবে না,...যখন তোমার দ্রাক্ষাক্ষেত্রের দ্রাক্ষাফল চয়ন কর, তখন চয়নের পরে আবার কুড়াইও না; তাহা বিদেশীর, পিতৃহীনের ও বিধবার জন্য থাকিবে।” দ্বিতীয় বিবরণ ২৪:১৯-২২। PPBeng 381.1