স্বাস্থ্য এবং সুখ
ঈশ্বরের উপস্থিতির পবিত্রতা
জ্বলন্ত ঝোপের কাছে, মোশি ঈশ্বরের উপস্থিতি উপলব্ধি করতে পারলেন না, যখন তিনি এক পার্শ্বে গিয়ে এই মহাশ্চর্য বিষয় দেখতে চাইলেন তখন এই আদেশ হল: MHBen 417.1
“এই স্থানের নিকটবর্তী হইও না; তোমার পদ হইতে জুতা খুলিয়া ফেল, কেননা ইহা পবিত্র ভূমি।... তখন মোশি আপন মুখ আছাদন করিলেন, কেননা তিনি ঈশ্বরের প্রতি দৃষ্টিপাত করিতে ভীত হইয়াছিলেন।”(যাত্রা ৩:৫, ৬)। MHBen 417.2
“আর যাকোব বের-শেবা হইতে বাহির হইয়া হারণের দিকে যাত্রা করিলেন, এবং কোন স্থানে পৌছিল সূর্য অস্তগত হওয়াতে তথায় রাত্রিযাপন করিলেন। আর তিনি তথাকার প্রস্তর লইয়া বালিশ করিয়া সেই স্থানে নিদ্রা যাইবার জন্য শয়ন করিলেন।” MHBen 417.3
“পরে তিনি স্বপ্ন দেখিলেন, আর দেখ, পৃথিবীর উপরে এক সিঁড়ি স্থাপিত, তাহার মস্তক গগনস্পর্শী, আর দেখ, তাহা দিয়া ঈশ্বরের দূতগণ উঠিতেছেন ও নামিতেছেন। আর দেখ, সদাপ্রভু তাহার উপরে দণ্ডায়মান, তিনি কহিলেন: MHBen 417.4
“আমি সদাপ্রভু, তোমার পিতা আব্রাহামের ঈশ্বর ও ইস্হাকের ঈশ্বর; আর এই যে ভূমিতে তুমি শয়ন করিয়া আছ, ইহা আমি তোমাকে ও তোমার বংশকে দিব।...আর দেখ, আমি তোমার সহবর্তী, যে যে স্থানে তুমি যাইবে, সেই সেই স্থানে তোমাকে রক্ষা করিব, ও পুনর্বার এই দেশে আনিব; কেননা আমি তোমাকে যাহা যাহা বলিলাম, তাহা যাবৎ সফল না করি, তাবৎ তোমাকে ত্যাগ করিব না। MHBen 417.5
“পরে নিদ্রাভঙ্গ হইলে যাকোব কহিলেন, অবশ্য এই স্থানে সদাপ্রভু আছেন, আর আমি তাহা জ্ঞাত ছিলাম না। আর তিনি ভীত হইয়া কহিলেন, এ কেমন ভয়াবহ স্থান। এ নিতান্তই ঈশ্বরের গৃহ, এ স্বর্গের দ্বার।”(আদি ২৮:১০-১৭)। MHBen 417.6
প্রান্তরের আবাস গৃহের ধর্মধাম এবং মন্দির ছিল ঈশ্বরের আবাস স্থলের প্রতীক। একটা কক্ষছিল তাঁর উপস্থিতিতে পবিত্র। এর প্রবেশ দ্বারে করূপ দ্বারা কারুকার্য শোভিত; যা কোন হস্ত দ্বারা উত্তোলন করা যাইত না। ঐ পর্দা উত্তোলন করে মহাপবিত্র স্থানের পবিত্র গূঢ়তার স্থানে প্রবেশ ছিল অনিবার্য মৃত্যু। অনুগ্রহ সিংহাসনের ঊর্ধ্বে ছিল পবিত্রতমের প্রতাপ- প্রতাপ, যার ওপরে দৃষ্টিপাত করে কোন মনুষ্য বাঁচতে পারত না। বছরের একদিনে মহাপবিত্র স্থানের মহা-যাজক কম্পিত অবস্থায় ঈশ্বরের সান্নিধ্যে প্রবেশ করতেন, আর সুগন্ধি ধূপের ধূম ঈশ্বরের উপস্থিতি তাকে আড়াল করে রাখত। প্রাঙ্গণের মধ্য দিয়ে নীরবতা বিরাজ করত। বেদীর ওপরে কোন যাজক পরিচর্যা কার্য করতেন না। আরাধনাকারীরা, শ্রদ্ধাভক্তি মিশ্রিত নীরবতায় নতজানু হয়ে ঈশ্বরের অনুগ্রহের নিমিত্ত তাদের আবেদন জানাতেন। MHBen 418.1
“এই সকল তাহাদের প্রতি দৃষ্টান্তস্বরূপে ঘটিয়াছিল,
এবং আমাদেরই চেতনার জন্য লিখিত হইল;
আমাদের, যাহাদের উপর যুগকলাপের অন্ত আসিয়া পড়িয়াছে।”
MHBen 418.2
- (১করি ১০:১১)।
“সদাপ্রভু আপন পবিত্র মন্দিরে আছেন;
সমস্ত পৃথিবী তাঁহার সম্মুখে নীরব থাক।”
MHBen 418.3
- (হব্ককূক ২:২০)।
“সদাপ্রভু রাজত্ব করেন, জাতিগণ কাঁপিতেছে;
তিনি করূপদ্বয়ে আসীন, পৃথিবী টলিতেছে।
সদাপ্রভু সিয়োনে মহান
তিনি সমস্ত জাতির উপরে উন্নত।
তাহারা তোমার মহৎ ও ভয়াবহ নামের স্তব করুক;
তিনি পবিত্র।”
MHBen 418.4
- (গীত ৯৯:১-৩)।
“সদাপ্রভু, তাঁহার সিংহাসন স্বর্গে,
তাঁহার চক্ষু নিরীক্ষণ করিতেছে,
তাঁহার চক্ষুর পাতা মনুষ্য সন্তানদের পরীক্ষা করিতেছে।”
MHBen 419.1
- (গীত ১১:৪)।
“কেননা তিনি আপন উচ্চ ধর্মধাম হইতে,
অবলোকন করিতেছেন।”
MHBen 419.2
- (গীত ১০২:১৯)।
“তিনি আপন বাসস্থান হইতে দৃষ্টিপাত করেন,
পৃথিবীর সমস্ত নিবাসীর উপরে।
তিনি একে একে তাহাদের হৃদয় গঠন করেন,
তিনি তাহাদের সমস্ত কার্যালোচনা করেন।”
MHBen 419.3
- (গীত ৩৩:১৪, ১৫)।
“সমস্ত পৃথিবী সদাপ্রভুকে ভয় করুক;
জগন্নিবাসী সকলে তাঁহা হইতে ভীত হউক।”
MHBen 419.4
- (গীত ৩৩:৮)।
মনুষ্য অন্বেষণ করে ঈশ্বরকে পেতে পারে না। কেউ তাঁর প্রতাপ আছাদন পর্দা দাম্ভিক হস্তে তুলবার চেষ্টা না করুক। “তাহার বিচার সকল কেমন বোধাতীত। তাঁহার পথ সকল কেমন অননুসন্ধেয়!” (রোমীয় ১১:৩৩)। এটা তাঁর অনুগ্রহের একটা প্রমাণ যে, তাঁর শক্তি লুকাবার স্থান রয়েছে; কেননা ঐশ্বরিক উপস্থিতির পর্দা উত্তোলন মৃত্যুর শামিল। মরণশীল কোন মন মহা শক্তিধরের আবাস্থল এবং কার্যের মধ্যে প্রবেশ করতে পারে না। তিনি যা প্রকাশ করবার উপযুক্ত বলে মনে করেন, আমরা কেবল সেটুকুই বুঝতে পারি। যুক্তি এর ঊর্ধ্বতন ক্ষমতা উপলব্ধি করতে পারে। অন্তঃকরণ এবং জ্ঞান মহান, “আছির” নিকটে মস্তক অবনত করবে। MHBen 419.5
*****