স্বাস্থ্য এবং সুখ

8/269

৪ - বিশ্বাসের ছোঁয়া

বিশ্বাসে সেই হাত যা অনন্ত
অসীমকে স্পর্শ করে।

“আমি যদি কেবল উঁহার বস্ত্র স্পর্শ করিতে পাই, তবেই সুস্থ হইব।” বেচারি স্ত্রীলোকটি এ কথাগুলো বলেছিল, যে বারো বছর যাবৎ এমন এক রোগে ভুগছিল যা তার জীবনকে বোঝাস্বরূপ করে তুলেছিল। চিকিৎসক ও ওষুধের জন্য সে তার যথাসর্বস্ব ব্যয় করে ফেলেছিল। বিনিময়ে শুনেছিল রোগটা দুরারোগ্য। কিন্তু যখন সে এই মহান আরোগ্যকারীর কথা শুনল, তার আশা সঞ্জীবিত হল। সে ভাবল, “আমি যদি কেবল তাঁর কাছাকাছি গিয়ে তাঁকে স্পর্শ করতে পারি, তবেই আমি ভাল হয়ে যাব।” MHBen 40.1

যীশু যিহূদী নেতা যায়ীরের বাড়ী যা‪চ্ছিলেন কেননা তিনি তাঁকে অনুনয়-বিনয় করে বলেছিলেন যেন তিনি তার বাড়ী এসে তার মেয়েকে সুস্থ করেন। “আমার মেয়েটী মারা যায়, আপনি আসিয়া তাহার উপরে হর্স্তাপন করুন, যেন সে সুস্থ হইয়া বাঁচে।” (মার্ক ৫:২৩)। এই অন্তর ভাঙ্গা আবেদন যীশুর কোমল দরদী মন স্পর্শ করল আর সঙ্গে সঙ্গে তিনি শাসনকর্তার সঙ্গে তার বাড়ী রওনা হলেন।‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬ MHBen 40.2

বিশাল জনতা যীশুকে সব দিক থেকে চাপাচাপি করছিল, ফলে তারা খুব ধীর গতিতে এগু‪চ্ছিলেন। জনতার মধ্য দিয়ে তাঁর পথ করে নিতে ত্রাণকর্তা নিদারুণ যাতনাগ্রস্ত স্ত্রীলোকটি যেখানে দাঁড়ান ছিল সেখানে এলেন। বারবার তাঁর কাছে আসবার তার প্রচেষ্টা বিফল হল। এখন তার সুযোগ এল। তাঁর সঙ্গে কথা বলার কোন উপায় সে খুঁজে পেল না। তাঁর ধীর গতিতে বাঁধা সৃষ্টি করতে সে চাইল না। কিন্তু সে শুনতে পেয়েছিল যে তাঁর জামা-কাপড় স্পর্শ করলেই সুস্থ হওয়া যায়।‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬ অতএব মুক্তিলাভের একটা সুযোগ হারাবার ভয়ে সে তাঁর দিকে চাপাচাপি করতে করতে বলল, “আমি যদি কেবল উঁহার বস্ত্র স্পর্শ করিতে পাই, তবেই সুস্থ হইব।” MHBen 40.3

যীশু তার মনের প্রতিটি চিন্তাধারা জানতেন, আর এই জন্যই তিনি তার দিকে পথ করে নিলেন। তিনি তার প্রচন্ড চাহিদা উপলব্ধি করতে পারলেন আর তাই তিনি তার বিশ্বাস কাজে লাগাতে সাহায্য করলেন। MHBen 41.1

তিনি যেন পাশ কাটিয়ে চলে যা‪চ্ছিলেন, স্ত্রীলোকটি সামনে এগিয়ে তাঁর জামার শেষ প্রান্ত কোনমতে স্পর্শ করতে কৃতকার্য হল। ঐ মুহূর্তেই সে বুঝতে পারল যে সে ভাল হয়ে গেছে। ঐ এক স্পর্শের সাথে তার জীবনের বিশ্বাস মিশ্রিত ছিল, আর সঙ্গে সঙ্গেই তার ব্যথা ও দুর্বলতা দূর হয়ে গেছে। তৎক্ষণাৎ তার দেহের প্রতিটি শিরায় শিরায় বিদ্যুৎ প্রবাহের মত শিহরণ অনুভব করল। সম্পূর্ণ সুস্থতার অনুভূতি তার মধ্যে এল। “আর আপনি যে ঐ রোগ হইতে মুক্ত হইয়াছে, ইহা শরীরে টের পাইল।”(মার্ক ৫:২৯)। ‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬ MHBen 41.2

কৃতজ্ঞ স্ত্রীলোকটি মহান চিকিৎসকের কাছে তার ধন্যবাদ জানাতে বাসনা করল, কেননা বারো বছর যাবৎ ডাক্তার-কবিরাজেরা যা করতে পারেনি, তার থেকে বেশি তিনি করলেন তার একটি মাত্র ছোঁয়ায়। কিন্তু সাহস পেল না। কৃতজ্ঞ চিত্তে স্ত্রীলোকটি জনতার ভিড় থেকে সরে যেতে চেষ্টা করল। হঠাৎ প্রভু যীশু থেমে গেলেন এবং চারদিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলেন: “কে আমার বস্ত্র স্পর্শ করিল?” MHBen 41.3

বিস্ময়ের সাথে পিতর তাঁর দিকে তাকিয়ে বললেন, “নাথ, লোকসমূহ চাপাচাপি করিয়া আপনার উপরে পড়িতেছে।”(লূক ৮:৪৫)। যীশু বললেন, “আমাকে কেহ স্পর্শ করিয়াছে, কেননা আমি টের পাইয়াছি আমা হইতে শক্তি বাহির হইয়াছে।” (লূক ৮:৪৬)। অসতর্ক জনতার ছোঁয়া আর বিশ্বাসীদের ছোঁয়ার প্রভেদ তিনি বুঝতে পারতেন। কেউ গভীর প্রত্যাশা নিয়ে তাঁকে ছুঁয়েছিল এবং তার উত্তরও সে সঙ্গে সঙ্গে পেয়েছিল। MHBen 41.4

নিজের জন্য তথ্য সংগ্রহ করতে তিনি প্রশ্ন করেননি। লোকদের জন্য, তাঁর শিষ্যদের জন্য এবং ঐ স্ত্রীলোকটির জন্য তাঁর একটা শিক্ষা ছিল। তিনি যাতনাগ্রস্তদের অনুপ্রেরণা যোগাতে চেয়েছিলেন। তিনি দেখাতে চেয়েছিলেন যে কেবল বিশ্বাসই তাকে ভাল হবার শক্তি যুগিয়েছে। স্ত্রীলোকটার আস্থার ব্যাপারে মন্তব্য না করে চেপে যাওয়া অবশ্যই উচিত হবে না। তার কৃতজ্ঞতাপূর্ণ স্বীকারোক্তির মাধ্যমে ঈশ্বর মহিমান্বিত হবেন। যীশু চেয়েছিলেন, যেন সে উপলব্ধি করে যে, তিনি তার বিশ্বাসের কাজকে অনুমোদন করেছেন। আধা-আধি আশীর্বাদ নিয়ে সে চলে যাক তিনি তা চান নি।তার ভোগান্তি সম্পর্কে যে তিনি অবগত ছিলেন এটা তাকে বুঝানোর জন্যই অথবা তাঁর দরদী প্রেম এবং তাঁর রক্ষাকারী ক্ষমতার প্রতি যেমন তার বিশ্বাস প্রযুক্ত সে রক্ষা পেয়েছে, তদ্রূপ চরম হতাশাগ্রস্তও যদি তাঁর কাছে আসে তিনি তাকে ভাল করতে পারেন। MHBen 42.1

স্ত্রীলোকটির দিকে লক্ষ্য করে যীশু জানবার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করলেন কে তাঁকে ছুঁয়েছিল। গোপন রাখা অসম্ভব জেনে স্ত্রীলোকটি কাঁপতে কাঁপতে তাঁর সামনে এসে তাঁর পায়ে লুটিয়ে পড়ল। কৃতজ্ঞতাপূর্ণ কান্না ভরা কণ্ঠে লোকদের সাক্ষাতে সে বলল, কেন সে তাঁর পরনের কাপড়ের আঁচল ছুঁয়েছিল এবং কিভাবে সে সঙ্গে সঙ্গে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে গেল। সে ভয় পা‪িছল যে তাঁর কাপড়ের আচল ধরার কাজটা অসঙ্গত আচরণ ছিল; কিন্তু যীশুর মুখ হতে নিন্দা ব্যাঞ্জক কোন শব্দই বের হল না। তিনি কেবল অনুমোদন সূচক কথা বললেন। মানুষের দুঃখ কষ্টের প্রতি সহানুভূতিপূর্ণ প্রেমের অন্তর থেকে সেগুলো বেরিয়ে এলো। তিনি বিনয়ের সাথে বললেন, “বৎসে তোমার বিশ্বাস তোমাকে সুস্থ্য করিল; শান্তিতে চলিয়া যাও।” (লূক ৮:৪৮)। এই কথাগুলো কত উৎসাহ ব্যাঞ্জক ছিল। যে ভয়ভীতি তার আনন্দকে তিক্ততায় পরিণত করছিল, তা আর রইল না। ‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬ MHBen 42.2

উৎসুক জনতা যীশুর ওপর এসে চাপাচাপি করে পড়ছিল কিন্তু তাতে তাঁর মধ্য থেকে কোন উপকারী শক্তি বের হয়ে যায়নি। কিন্তু রোগাক্রান্ত স্ত্রীলোকটি বিশ্বাসের সাথে স্পর্শ করাতেই সে আরোগ্য লাভ করল। একইভাবে আধ্যাত্মিক বিষয়েও নিয়মিত যোগাযোগ থেকে বিশ্বাসের সাথে ছোঁয়ার প্রভেদ পরিলক্ষিত হয়। যীশুকে কেবল পৃথিবীর পরিত্রাণকর্তা বলে বিশ্বাস করলেই তাতে আত্মার আরোগ্য লাভ হবে না। পরিত্রাণ লাভের যে বিশ্বাস তা কেবল সুসংবাদের সত্যে সম্মতি দান নয়। আসল বিশ্বাস যীশুকে ব্যক্তিগত পরিত্রাণকর্তারূপে গ্রহণ করা। ‘‘ঈশ্বর তাঁহার একমাত্র পুত্রকে দান করিলেন যেন যে কেহ তাঁহাতে বিশ্বাস করে, সে বিনষ্ট না হয় কিন্তু অনন্তজীবন পায়।” (যোহন ৩:১৬)। যখন আমি তাঁর বাক্য অনুসারে যীশুর কাছে আসি, তখন আমার বিশ্বাস আনতে হবে যে, আমি তাঁর আশীর্বাদ লাভ করেছি। “যে জীবন আছে, তাহা আমি বিশ্বাসে, ঈশ্বরের পুত্রে বিশ্বাসেই যাপন করিতেছি; তিনিই আমাকে প্রেম করিলেন, এবং আমার নিমিত্তে আপনাকে প্রদান করিলেন।” (গালাতীয় ২:২০)। MHBen 42.3

অনেকের বিশ্বাস মতামতের ন্যায়। পরিত্রাণকারী বিশ্বাস একটি সম্পাদিত চুক্তি যার দ্বারা যারা যীশুকে গ্রহণ করে তারা ঈশ্বরের সাথে এক নিয়মের চুক্তিতে আবদ্ধ হয়। জীবন্ত বিশ্বাসের অর্থ বর্ধনশীল বলিষ্ঠতা, এক আস্থাশীল নির্ভরতা, যার দ্বারা যীশুর আশীর্বাদের মাধ্যমে আত্মা বিজয়ী শক্তিতে পরিণত হয়। MHBen 43.1

বিশ্বাস মরণ অপেক্ষা শক্তিশালী বিজয়কারী। যদি অসুস্থদেরকে বিশ্বাসের সাথে মহান চিকিৎসকের দিকে তাদের দৃষ্টি নিবদ্ধ করার জন্য পরিচালিত করা যায়, তাহলে বিস্ময়কর ফলাফল দেখা যাবে। শরীর ও আত্মায় জীবন সঞ্চারিত হবে। MHBen 43.2

যারা মন্দ অভ্যাসের শিকার, তাদের সাথে কাজ করতে গিয়ে তারা যে হতাশা ও বিনাশের দিকে দ্রুত এগু‪চ্ছে তার প্রতি নির্দেশ না করে যীশুর প্রতি তাদের দৃষ্টি ফেরান। স্বর্গীয় মহিমার ওপরে তাদের দৃষ্টি নিবদ্ধ করান। তাহলে অসহায় প্রায় আশাহীনদের সামনে মৃত্যুর ভয় তাদের দেহ ও আত্মার ওপর যে প্রভাব ফেলবে তার থেকে এটা আরো বেশী ফলদায়ক হবে। ‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬ MHBen 43.3

“কোন সৎ কাজের জন্য তিনি আমাদের
পরিত্রাণ দেননি ঈশ্বর আমাদের প্রতি
তার মমতার জন্যই তা দিলেন।”
MHBen 43.4

একজন শতপতির চাকর বাত-ব্যাধিতে শয্যাশায়ী ছিল। রোমীয়দের মাঝে চাকররা কেনা বন্দি ছিল। তাদেরকে বাজারে বেচা‬‬- কেনা করতো আর তাদের সঙ্গে প্রায়ই গালি-গালাজ ও নির্দয় ব্যবহার করত, কিন্তু এই শতপতি তার চাকরদের প্রতি সদয় ব্যবহার করতেন। এবং ভীষণভাবে চেয়েছিলেন যেন সে ভাল হয়। তিনি বিশ্বাস করতেন যে যীশু তাকে ভাল করতে পারেন। তিনি পরিত্রাণকর্তাকে দেখেন নি। কিন্তু যে রিপোর্ট তিনি তাঁর সম্পর্কে পেয়েছেন তার দ্বারা তিনি তাঁর প্রতি বিশ্বাস আনতে অনুপ্রাণিত হলেন। যিহূদীদের কতগুলো বাধ্যবাধকতা থাকা সত্ত্বেও এই শতপতি বিশ্বাস করেছিলেন, যে তার ধর্ম অপেক্ষা তাদের ধর্ম আরো ভাল। ইতোপূর্বেই তিনি বিজয়ী ও বিজীতদের মধ্যে প্রভেদ সৃষ্টিকারী জাতীয় কুসংস্কার ও ঘৃণার প্রতিবন্ধকতা ভেঙ্গে ফেলেছিলেন। তিনি ঈশ্বরের কাজকর্মের প্রতি সম্মান দেখাতেন এবং তাঁর সেবাকারী রূপে যিহূদীদের প্রতি দয়া দেখাতেন। তার কাছে যে বর্ণনা দেয়া হয়েছে তাতে তিনি বুঝতে পেরেছেন যে আত্মার চাহিদা পূরণে যীশুর শিক্ষাই সময়োপযোগী। তার মধ্যে যতটা আধ্যাত্মিকতা ছিল তা পরিত্রাণকর্তার বাক্যের প্রতি সায় প্রদান করল। কিন্তু তিনি প্রভু যীশুর কাছে আসার অযোগ্য মনে করলেন, আর এই জন্য তিনি যিহূদী প্রাচীনদের কাছে অনুরোধ করলেন, যেন তিনি তার চাকরকে সুস্থ করেন। MHBen 43.5

প্রাচীনেরা যীশুর কাছে আবেদনটি পেশ করে এইরূপ অনুরোধ করলেন, “আপনি যে তাঁহার জন্য এই কার্য করেন, তিনি তাহার যোগ্য; কেননা তিনি আমাদের জাতিকে প্রেম করেন, আর আমাদের সমাজ-গৃহ তিনি নিজে নির্মাণ করিয়া দিয়াছেন।” (লূক ৭:৪, ৫)। MHBen 44.1

কিন্তু শতপতির বাড়ীর দিকে যাবার পথে প্রভু যীশু সেনাপতির কাছ থেকে এই বার্তা পেলেন, “প্রভু, আপনাকে কষ্ট দিবেন না; কেননা আমি এমন যোগ্য নই যে, আপনি আমার ছাদের নিচে আইসেন।” (লূক ৭:৬)। MHBen 44.2

তারপরও পরিত্রাণকর্তা যেতে থাকলেন। আর শতপতি ব্যক্তিগতভাবে কথাটি পুরোপুরি বলতে এসে হাজির হলেন, বললেন- “সেই জন্য আমাকেও আপনার নিকটে আসিবার যোগ্য বুঝিলাম না; আপনি বাক্যে বলুন, তাহাতেই আমার দাস সুস্থ হইবে।” (লূক ৭:৭)। MHBen 44.3

“কেননা যে কেহ যাচ‪ঞা করে, সে গ্রহণ করে; এবং যে অন্বেষণ করে, সে পায়; আর যে আঘাত করে, তাহার জন্য খুলিয়া দেওয়া যাইবে। তোমাদের মধ্যে এমন লোক কে যে, আপনার পুত্র রুটি চাহিলে তাহাকে র্সপ দিবে?” (মথি ৮:৮,৯)।‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬ MHBen 45.1

“আমি রোমের ক্ষমতার প্রতীক এবং আমার সেনারা আমাকে সর্বো‪চ ক্ষমতার অধিকারী বলিয়া স্বীকার করে। এইভাবে আপনিও অসীম ঈশ্বরের শক্তির প্রতীক এবং সমস্ত সৃষ্ট বস্তু আপনার আজ্ঞার বাধ্য। আপনি রোগকে ছাড়িয়া যাইতে আদেশ করিলে, তাহা আপনার আজ্ঞা পালন করিবে। কেবল মুখে বলুন, তাহাতে আমার দাস ভাল হইয়া যাইবে।” ‬ MHBen 45.2

যীশু বললেন, “চলিয়া যাও, যেমন বিশ্বাস করিলে, তেমনি তোমার প্রতি হউক। আর সেই দণ্ডেই তাহার দাস সুস্থ হইল।” (মথি ৮:১৩)। MHBen 45.3

যিহূদী প্রাচীনেরা যীশুর কাছে শতপতির জন্য সুপারিশ করেছিলেন কেননা তিনি, “আমাদের লোকদের প্রতি দয়া দেখিয়েছেন।” তারা বললেন, “তিনি এর উপযুক্ত” কারণ “আমাদের সমাজগৃহ তিনিই ক্সতরী করিয়া দিয়াছেন।” কিন্তু শতপতি নিজের বিষয় বললেন, “আমি যোগ্য নই।” তবুও তিনি যীশুর কাছে সাহায্য চাইতে ভয় পাননি। তিনি তাঁর নিজস্ব উত্তমতার ওপর নির্ভর করেন নি বরং পরিত্রাণকর্তার আশীর্বাদ চেয়েছিলেন। তাঁর একমাত্র বিতর্ক ছিল তাঁর ভীষণ প্রয়োজনীয়তা। MHBen 45.4

একইভাবে প্রত্যেক আদম-সন্তান যীশুর কাছে আসতে পারে। ” কোন সৎ কাজের জন্য তিনি আমাদের পরিত্রাণ দেন নাই। তাঁহার মমতার জন্যই তাহা দিলেন।” (তীত ৩:৫)। আপনি কি অনুভব করেন, যে যেহেতু আপনি পাপী। তাই আপনি ঈশ্বরের আশীর্বাদ আশা করতে পারেন না? মনে রাখবেন, যীশু এ পৃথিবীতে এসেছিলেন পাপীদেরকে পরিত্রাণ দিতে। ঈশ্বরের কাছে সুপারিশ করার মত আমাদের কিছুই নেই। যে আবেদন আমরা তাঁর কাছে এখন ও সর্বকালের জন্য পেশ করতে পারি তা হলো আমাদের সম্পূর্ণ অসহায় অবস্থা যে কারণে তাঁর মুক্তিকারী শক্তি আমাদের একান্ত প্রয়োজন। সকল আত্মনির্ভরশীলতা পরিহার করে আমরা কালভেরীর ক্রুশ পানে চেয়ে বলতে পারি: MHBen 45.5

“আমি কোন মূল্য আনি নি;
কেবল তোমার ক্রুশে আসক্ত হই।”
MHBen 46.1

“যদি পারেন! ...যে বিশ্বাস করে তাহার পক্ষে সকলই সাধ্য” (মার্ক ৯:২৩)। বিশ্বাস আমাদেরকে স্বর্গের সাথে যুক্ত করে এবং শয়তানের শক্তির সাথে মোকাবিলা করতে শক্তি যোগায়। যীশুর মাধ্যমে ঈশ্বর উপায় করে দিয়েছেন যেন সর্বপ্রকার মন্দ ক্সবশিষ্ট্য বা অভ্যাসকে দমন করতে ও যত শক্তিশালী হোক না কেন সর্বপ্রকার প্রলোভনকে প্রতিহত করতে পারি। কিন্তু অনেকে বিশ্বাসের অভাব অনুভব করে আর এই জন্যই তারা যীশুর কাছ থেকে দূরে দূরে থাকে। এই সকল আত্মারা তাদের অসহায় অযোগ্যতা সহ তাদের দরদী পরিত্রাণকর্তার আশীর্বাদের ওপরে নিজেদেরকে সমর্পণ করুক। নিজের প্রতি নজর না রেখে যীশুর প্রতি লক্ষ্য রাখুক। তিনি এই পৃথিবীতে লোকদের মধ্যে চলাকালে যেমন রুগ্নকে সুস্থ করতেন, ভূতগ্রস্তকে মুক্ত করতেন, তিনি এখনও সেই শক্তিশালী মুক্তিকর্তাই আছেন। অতএব তাঁর অঙ্গীকার সবাইকে জীবন বৃক্ষের পাতার মত আকড়ে ধরুন: “যে আমার নিকটে আসিবে তাহাকে আমি কোন ক্রমেই বাহিরে ফেলিয়া দিব না।” ( যোহন ৬:৩৭)। যেমন আপনি তাঁর কাছে আসেন, বিশ্বাস করুন যে, তিনি আপনাকে গ্রহণ করেছেন কেননা তিনি প্রতিজ্ঞা করেছেন, আপনি কখনও বিনষ্ট হবেন না, কখনও না। MHBen 46.2

“ঈশ্বর যে আমাদের প্রেম করেন, তার প্রমাণ এই যে, আমরা যখন পাপী ছিলাম তখনও খ্রীষ্ট আমাদের নিমিত্ত প্রাণ দিলেন।” (রোমীয় ৫:৮)। MHBen 46.3

আর “ঈশ্বর যখন আমাদের সপক্ষ, তখন আমাদের বিপক্ষ কে? ঈশ্বর নিজের পুত্রের প্রতি মমতা করিলেন না, কিন্তু আমাদের সকলের নিমিত্ত তাঁহাকে সমর্পণ করিলেন, তিনি কি তাঁহার সহিত সমস্তই আমাদিগকে অনুগ্রহ-পূর্ব্বক দান করিবেন না?” (রোমীয় ৮:৩১, ৩২)। MHBen 46.4

“কেননা আমি নিশ্চয় জানি, কি মৃত্যু, কি জীবন, কি দূতগণ, কি আধিপত্য সকল, কি উপস্থিত বিষয় সকল, কি ভাবী বিষয় সকল, কি পরাক্রম সকল, কি ঊর্ধ্ব স্থান, কি গভীর স্থান, কি অন্য কোন সৃষ্ট বস্তু, কিছুই আমাদের প্রভু খ্রীষ্ট যীশু তে অবস্থিত ঈশ্বরের প্রেম হইতে আমাদিগ কে পৃথক করিতে পারিবে না।” (রোমীয় ৮:৩৮, ৩৯)। MHBen 46.5

“প্রভু, আপনি ই‪ছা করিলে,‬
‬‬‬ আমাকে সুস্থ করিতে পারেন।”
MHBen 47.1

পূর্ব দেশে যে সব রোগ ছিল, তার মধ্যে কুষ্ঠ ছিল ভয়াবহ। রোগটি দুরারোগ্য ও ছোঁয়াচে হওয়ায়, এবং আক্রান্ত ব্যক্তির ওপরে এর ভয়াবহ প্রভাবের ফলে সর্বাপেক্ষা সাহসী লোকটিও ভীত হয়ে পড়ত। যিহূদীদের মধ্যে এ রোগটিকে পাপের ফল বলে পরিচিত ছিল এবং বলা হত, “আঘাত ঈশ্বরের হস্তক্ষেপ।”স্থায়ীভাবে গ্রথিত, নির্মূল করা অসম্ভব, মৃত্যুজনক এ রোগটি পাপের সংকেত বা চিহ্ন বলে প্রচলিত ছিল। MHBen 47.2

ধর্মীয় আইনে এই কুষ্ঠ আক্রান্ত রোগীকে অশুচি বলা হত। সে যা কিছু স্পর্শ করত তা-ই অশুচি হত। তার শ্বাস প্রশ্বাসে বাতাস দুষিত হত। মৃত ব্যক্তির মত, রোগাক্রান্তব্যক্তিকে মানুষের সমাজ থেকে দূরে রাখা হত। যদি কোন লোককে এই রোগে আক্রান্ত হয়েছে বলে সন্দেহ করা হত। তবে, তাকে ধর্মগুরুদের কাছে গিয়ে দেখাতে হত, আর তিনি পরীক্ষা করে তার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দিতেন। যদি তাকে কুষ্ঠরোগী বলে ঘোষণা করা হত, তবে তাকে পরিবারের কাছ থেকে আলাদা করে রাখা হত, সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন করা হত, আর শাস্তিস্বরূপ একই রোগে আক্রান্তদের সঙ্গেই কেবল মেলামেশা করতে পারত। এমন কি রাজাবাদশাহ, বিচারক কাকেও রেহাই দেয়া হত না। একজন রাজা ঐ ভয়াবহ রোগে আক্রান্ত হলে তাকে শাস্তিদানকারী, ধর্মগুরুর কাছে গিয়ে দেখাতে হত এবং সমাজ থেকে দূরে পলাতে হত। MHBen 47.3

একজন কুষ্ঠ রোগীকে তার বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয় স্বজন ত্যাগ করে দূরে থেকে তার রোগের অভিশাপ বহন করতে হত। আপন বস্ত্র চিরে নিজস্ব দুর্দশার সংবাদ প্রকাশ ও প্রচার করতে সে বাধ্য ছিল এবং সতর্কবাণী ঘোষণা করে তার এই সংক্রামণ জনিত রোগের উপস্থিতির কাছ থেকে পথচারীকে দূরে সরে যেতে সাবধান করতে হত। নির্জনে নির্বাসনে থেকে শোকার্ত কণ্ঠের ভেসে আসা করুণ চিৎকার “অশুচি! অশুচি!” ছিল ভয় ও ঘৃণার একটি সংকেত। যে অঞ্চলে যীশু সেবা কাজ করতেন সেখানে রোগে আক্রান্ত অনেক রোগী ছিল। আর তাঁর অলে․কিক ক্ষমতা বিষয়ক খবর যখন ছড়িয়ে পড়ল, সেখানকার একজনের মনে বিশ্বাস সঞ্চারিত হল। যদি সে যীশুর কাছ পর্যন্ত যেতে পারত, তবে সে ভাল হতে পারত। কিন্তু কিভাবে সে যীশুকে খুঁজে পাবে? সে তো আজীবনের তরে সমাজ থেকে বঞ্চিত নির্বাসন শাস্তিতে দন্ডিত, সে কিভাবে আরোগ্যকারীর সম্মুখে নিজেকে উপস্থিত করবে? আর যীশু কি তাকে সুস্থ করবেন? তিনি কি ফরীশী এবং ডাক্তারদের মত তাকে অভিশাপ দিয়ে মনুষ্য সমাজে আনাগোনা না করে সতর্ক করে দিয়ে পালাতে বলবেন না? MHBen 47.4

যীশু সম্পর্কে যে সব কথা তাকে বলা হয়েছিল সে সব বিষয়ই সে চিন্তাভাবনা করল। যে কেউ তাঁর সাহায্য চেয়েছে, কেউই বিমুখ হয়নি। হতভাগ্য লোকটি পরিত্রাণকর্তাকে খুঁজে বের করতে মনঃস্থ করল। নগরে ঢুকা তার জন্য যদিও নিষিদ্ধ ছিল, তবুও এমন হতে পারে তিনি যখন পাহাড়ী রাস্তা বেয়ে চলবেন বা শহরের বাইরে শিক্ষা দিতে দিতে চলবেন তখন হয়তো চলার পথে তার পক্ষে দেখা করা সম্ভব হতেও পারে। সমস্যাটি সাংঘাটিক কিন্তু ওটাই একমাত্র ভরসা। MHBen 48.1

অনেক দূরে দাঁড়িয়ে কুষ্ঠ রোগীটি পরিত্রাণকর্তার কিছু কিছু কথা শুনতে পেল। দেখতে পেল তিনি অসুস্থ রোগাক্রান্তব্যক্তিদের ওপরে হস্তার্পণ করছেন। সে দেখতে পেল- খোঁড়া, অন্ধ, অবশ রোগী এবং নানাপ্রকার দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত মৃতপ্রায় লোকেরা ভাল হয়ে ঈশ্বরের দেয়া এই মুক্তির জন্য তাঁর প্রশংসা করছে। তার বিশ্বাস সবল হল। সে শ্রোতা মণ্ডলীর কাছে আরো কাছে এসে উপনীত হল। লোকদের নিরাপত্তার জন্য, তার ব্যাপারে অন্য সব লোকদের ভয় প্রযুক্ত তার প্রতি যে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল সে তা প্রায়ই ভুলে গেল। সে কেবল ভাল হবার পরমধন্য আশার ব্যাপারেই ভাবতে লাগল। তাকে দেখতে জঘণ্য, বিশ্রী। এই রোগ তাকে ভয়াবহরূপে আক্রমণ করেছে এবং তার ক্ষয় প্রাপ্ত পঁচা-গলা দেহ দেখতে, কেমন ভয় লাগে। তাকে দেখা মাত্র লোকেরা পিছে ছিটকে পড়ে। ভীত সন্ত্রস্ত লোকেরা যাতে তার সংস্পর্শে না আসে, এই জন্য পলাতে গিয়ে একে অপরের ওপরে হুমড়ি খেয়ে পড়ল। কেউ কেউ যীশুর কাছে যেন সে না আসতে MHBen 48.2

পারে এই জন্য প্রতিহত করতে চেষ্টা করল, কিন্তু সফল হল না। সে কারো দিকে নজরও দিল না, কারও কথা শুনলও না। তার সম্পর্কে তাদের ঘৃণা প্রকাশে কোন ফল হল না। সে কেবল প্রভু যীশুকে দেখল, কেবল সেই স্বর শুনল যা মৃত প্রায় ব্যক্তির কাছে জীবনের কথা বলে। MHBen 49.1

যীশুর দিকে ছুটে এসে তাঁর পায়ে উবুড় হয়ে পড়ে কেঁদে বলল, “হে প্রভু, যদি আপনার ই‪ছা হয়, আমাকে শুচি করিতে পারেন।” (মথি ৮:২)। ‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬ MHBen 49.2

উত্তরে যীশু বললেন, “আমার ই‪ছা তুমি শুচীকৃত হও;” (মথি ৮:৩)। আর তিনি তাকে হাত দিয়ে ছুলেন। ‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬ MHBen 49.3

সঙ্গে সঙ্গে কুষ্ঠ রোগীর দেহে পরিবর্তন আসল। তার রক্ত সঞ্জীবিত হল, তার স্নায়ুগুলো অনুভূতিশীল হল, মাংসপেশী সবল হল। অস্বাভাবিক সাদা, কুষ্ঠীর বৈশিষ্ট্য- আঁশযুক্ত দেহের উপরিভাগ থেকে নিমিষেই দূর হল; এবং তার শরীর শিশুদের শরীরের মত হলো। ধর্মগুরু যদি জানতে পারে যে তাকে যীশু সুস্থ করেছেন সে ক্ষেত্রে যেহেতু তাঁর প্রতি তাদের ঘৃণাভাব রয়েছে তাই হয়তো কোন খারাপ ভাষা ব্যবহার করবে। যীশু আশা করেছিলেন, যেন তার ব্যাপারে নিরপেক্ষ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়; তাই তিনি লোকটিকে বললেন, যেন সে তার এই সুস্থ হওনের বৃত্তান্ত কাকেও না বলে বরং বিলম্ব না করে এই অলৌকিক কাজ সম্পর্কে গুজব ছড়াবার আগেই গির্জা ঘরে বলির পশু নিয়ে গিয়ে বলি দেয়। MHBen 49.4

এই ধরনের বলি মঞ্জুর করবার আগে ধর্মগুরু বলিদাতাকে পরীক্ষা করে তার সম্পূর্ণ সুস্থতার বিষয়ে সাক্ষ্য প্রদানের নিয়ম ছিল। MHBen 49.5

পরীক্ষার কাজ সম্পন্ন হল। যে ধর্মগুরুরা এই কুষ্ঠরোগীকে সমাজ থেকে বিতাড়িত করেছিল তারাই তাকে সম্পূর্ণ ভাল হয়েছে বলে সনাক্ত করল। সুস্থকৃত লোকটি তার পরিবারে ও সমাজে ফিরে গেল। সে অনুভব করতে পারল যে সু-স্বাস্থ্য অতি মূল্যবান। সে যৌবনের প্রাণবন্ততায় এবং পরিবারের সঙ্গে মিলিত হতে পেরে আনন্দ করতে লাগল। প্রভু যীশুর সতর্কবাণী সত্ত্বেও, তার সুস্থ হবার বাস্তবতাকে গোপন রাখতে পারল না, এবং যাঁর ক্ষমতায় সে ভাল হয়েছে, তাঁর বিষয় সে সানন্দে ঘোষণা করতে থাকল। MHBen 49.6

এই লোকটি যখন যীশুর কাছে এসেছিল তখন সে ছিল, “কুষ্ঠ রোগে পূর্ণ,” এর মৃত্যুজনক বিষ তার শরীরের প্রতিটি ছিদ্র দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করেছিল। তার শিষ্যেরা চেষ্টা করেছিল যেন তাদের প্রভু তাকে স্পর্শ না করে, কেননা যে কেউ কুষ্ঠীকে স্পর্শ করে সেই অশুচি হয়। কিন্তু চর্মরোগীর ওপরে তাঁর হাত বিস্তারের দ্বারা প্রভু যীশু অশুচি হন নি। বরং কুষ্ঠরোগী শুচি হল। এইরূপে গভীরভাবে বদ্ধমূল, মরণঘাতি, মানবীয় ক্ষমতায় শুচি লাভ করা অসম্ভব পাপরূপ কুষ্ঠ তাঁর স্পর্শে শুচি হয়। “সমুদয় মস্তক ব্যথিত ও সমুদয় হৃদয় দুর্ব্বল হইয়াছে। পায়ের তালু অবধি মস্তক পর্যন্ত কোন স্থানে স্বাস্থ্য নাই; কেবল আঘাত ও প্রহার চিহ্ন ও নূতন ক্ষত;” (যিশাইয় ১:৫,৬)। কিন্তু মানবরূপে বাস করতে এসে যীশু কোন অপবিত্রতা বা পাপের দ্বারা কলুষিত হন নি। তাঁর উপস্থিতি পাপীর জন্য ছিল আরোগ্যকারী শক্তি স্বরূপ। যে কেউ বিশ্বাস সহকারে তাঁর পায়ে পড়ে বলেছে, “প্রভু, আপনি ই‪ছা করিলে আমাকে শুচি করিতে পারেন” সে এই উত্তর শুনেছে, “আমার ই‪ছা তুমি শুচীকৃত হও।”‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬ MHBen 50.1

সুস্থ করার কোন কোন ঘটনায় প্রভু যীশু সঙ্গে সঙ্গে কাঙ্ক্ষিত আশির্বাদ মঞ্জুর করেন নি। কিন্তু কুষ্ঠ রোগের বেলায় আবেদনের সঙ্গে সঙ্গেই তা মঞ্জুর করেছেন। MHBen 50.2

প্রার্থনার সময় আমরা জাগতিক বিষয়ে প্রার্থনা চাইলে তার উত্তর পেতে বিলম্ব হতে পারে, বা ঈশ্বর আমরা যে প্রার্থনা চেয়েছি তার পরিবর্তে অন্য কোন আশীর্বাদ দিতে পারেন, কিন্তু পাপ থেকে মুক্তি পেতে চাইলে, তা সঙ্গে সঙ্গে মঞ্জুর করে থাকেন। পাপ থেকে শুচি করা এবং আমাদেরকে তাঁর সন্তান করা যেন আমরা পবিত্র জীবন যাপন করি এটাই তাঁর ই‪ছা। “ইনি আমাদের পাপসমূহের জন্য আপনাকে প্রদান করিলেন, যেন আমাদের ঈশ্বর ও পিতার ই‪ছানুসারে আমাদিগকে এই উপস্থিত মন্দ যুগ হইতে উদ্ধার করেন।” “আর তাঁহার উদ্দেশ্যে আমরা এই সাহস প্রাপ্ত হইয়াছি যে, যদি তাঁহার ই‪ছানুসারে কিছু যাচ্ঞা করি, তবে তিনি আমাদের যাচ্ঞা শুনেন। আর যদি জানি যে আমরা যাহা যা‪ঞা করি, তিনি তাহা শুনেন, তবে ইহাও জানি যে, আমরা তাঁহার কাছে যাহা যাচ্ঞা করিয়াছি, সে সকল পাইয়াছি।” (গালাতীয় ১:৪; ১যোহন ৫:১৪, ১৫)। ‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬‬ MHBen 50.3