স্বাস্থ্য এবং সুখ
মনের ওপর মনের নিয়ন্ত্রণ
শয়তানের একটি সক্রিয় শক্তি হচ্ছে মনের আরোগ্য লাভের পন্থা। এটিকে বৈজ্ঞানিক পন্থাও বলা হয়ে থাকে, যার দ্বারা একটি মনের ওপর অন্য মনের নিয়ন্ত্রণ আনয়ন করা হয়। যার ফলে দুর্বল মনের নিয়ন্ত্রণ অধিক সবল মনের ওপর অর্পিত হয়। একজন ব্যক্তি অন্য একজন ব্যক্তির ইছামত কাজ করে। ফলে, দাবি করা হয় যে, চিন্তার স্থিতিকাল পরিবর্তিত হয়েছে যা শরীরে শক্তি সঞ্চয় করবে এবং রোগী হয়তো রোগ প্রতিরোধ করতে সমর্থ হবে। MHBen 225.5
এর পন্থাটি তারাই প্রয়োগ করে, যারা প্রকৃতি, স্বভাব ও মনোভাব বিষয়ে অজ্ঞ এবং বিশ্বাস করে যে কোন উপায়ে রোগের নিরাময় হয়। কিন্তু এ কথা কথিত বিজ্ঞান একটা ভ্রান্ত নীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত। এটা প্রকৃতি ও যীশু খ্রীষ্টের ইছার পরিপন্থী। এ শিক্ষা যীশু খ্রীষ্টের প্রতি পরিচালিত করে না, যিনি আমাদের জীবন এবং পরিত্রাণ। যে অন্য মনকে তার প্রতি আকৃষ্ট করে সে তাদের জীবন শক্তির প্রকৃত উৎস থেকে পৃথক করে। MHBen 226.1
ঈশ্বরের উদ্দেশ্য এ নয়, যে কোন ব্যক্তি তার ইছা শক্তি হারিয়ে অন্যের নিয়ন্ত্রণাধীন হোক এবং অন্যের হাতিয়ার হয়ে নেতিজনকভাবে ব্যবহৃত হোক। কোন লোকের ব্যক্তিসত্ত্বা অন্যের মধ্যে হারিয়ে যেতে পারে না। মানুষের মধ্যে সুস্থ হবার শক্তির উৎস অন্বেষণ করা উচিত নয়। ঈশ্বরের ওপর তার নির্ভর থাকা আবশ্যক। ঈশ্বর মানুষকে মর্যাদাসহকারে সৃষ্টি করেছেন, সে স্বয়ং ঈশ্বর কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত হবে, কোন মানুষের বুদ্ধিতে নয়। MHBen 226.2
ঈশ্বরের ইছা মানুষ সরাসরি তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করুক। মানুষের সঙ্গে তাঁর ব্যবহারের মাধ্যমে তিনি ব্যক্তিগত সম্পর্কের নীতিকে স্বীকৃত করেছেন। তিনি ব্যক্তিগত নির্ভরশীলতা এবং ব্যক্তিগত পরিচালনার প্রয়োজনীয়তার অনুভূতিকে উৎসাহিত করেন। ঈশ্বরের ইছা মানব জাতিকে ঈশ্বরের সংস্পর্শে আনা, যেন মানুষ পবিত্র আত্মায় রূপান্তরিত হয়। শয়তানের কাজ হচ্ছে তাঁর উদ্দেশ্য ব্যাহত করা। সে মানুষের ওপর নির্ভরশীলতাকে উৎসাহিত করে। মানুষের মন যখন ঈশ্বর থেকে দূরে সরে যায় তখন শয়তান তার ওপর রাজত্ব স্থাপন করে এবং মানবতাকে নিয়ন্ত্রণ করে। MHBen 226.3
মন নিয়ন্ত্রণের মতবাদ শয়তান কর্তৃক উদ্ভাবিত হয়েছে, যেন সে নিজেকে শ্রেষ্ঠ বলে দাবি করতে পারে। ঈশ্বরের দর্শনের পরিবর্তে তার মতবাদ প্রতিষ্ঠিত করে। নামধারী খ্রীষ্টানদের মধ্যে যে ভুল পাওয়া যায় এর মধ্যে মানুষকে ঈশ্বর থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে যাবার জন্য এর চেয়ে ভয়াবহ প্রতারণা আর নেই। আপাতঃ দৃষ্টিতে মনে হয় এটা অত্যন্ত সরল, এর ব্যবহারে রোগীদের কোন ধ্বংসের সম্ভাবনা নেই। তবে এটা শয়তানকে ভেতরে প্রবেশ করতে দরজা খুলে দেয় যেন তার নিয়ন্ত্রিত মন দ্বারা অন্যের মন বশীভূত করা যায়। MHBen 227.1
মন্দ আত্মা নিয়ন্ত্রিত নারী পুরুষের মধ্যে ভয়ের প্রভাব দেয়া হয়েছে। অন্যের দুর্বলতা অথবা অজ্ঞতার কারণে কি এক সুযোগ তারা করে নেয়! লাভের লালসায় লোকেরা তাদের দুর্বল বা রুগ্ন মনকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে! MHBen 227.2
মানুষ মানুষ কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত হবার চেয়ে আমাদের জন্য আরো উত্তম কিছু করার আছে। চিকিৎসকদের প্রয়োজন মানুষের ওপর নির্ভর করার চেয়ে ঈশ্বরের শক্তির ওপর আস্থা স্থাপন করতে শিক্ষা প্রদান করা। রোগীদের মানুষের ওপর নির্ভর করতে শিক্ষা দানের পরিবর্তে সে শক্তির দিকে পরিচালিত করা আবশ্যক যিনি আত্মা ও শরীর রক্ষা করতে সমর্থ। যিনি মানুষের মন সৃষ্টি করেছেন এবং কি প্রয়োজন তা তিনি জানেন। শুধুমাত্র ঈশ্বরই সুস্থ করতে পারেন। যাদের মন ও শরীর রোগে আক্রান্ত তারা সুস্থকারী যীশু খ্রীষ্টের প্রতি দৃষ্টিপাত করুক। কারণ তিনি বলেছেন, “কারণ আমি আছি; এই জন্য তোমরাও থাকিবে।”(যোহন ১৪:১৯)। এ জীবনের বিষয় রোগীদের কাছে আমাদের বলতে হবে যে, যদি তারা যীশু খ্রীষ্টকে ত্রাণকর্তা বলে বিশ্বাস করে, যদি তাঁর সঙ্গে সহযোগিতা করে, তাঁর স্বাস্থ্যনীতি মেনে চলে, এবং তাঁকে ভয়পূর্বক সিদ্ধ জীবন যাপনের জন্য চেষ্টা করে তবে তিনি তাঁর জীবন তাদেরকে দেবেন। আমরা যখন যীশু খ্রীষ্টকে এভাবে তাদের কাছে উপস্থাপন করি, তখন আমরা এক ক্ষমতা ও শক্তিদান করি যে মূল্যবোধ স্বর্গ থেকে আসে। আর এটা হচ্ছে মন ও শরীর সুস্থ হবার প্রকৃত বিজ্ঞান। MHBen 227.3