মণ্ডলীর জন্য উপদেশ

61/327

মণ্ডলীকে ক্ষমতা দান

খ্রীষ্ট, মণ্ডলীকে ক্ষমতা দান করিয়াছিলেন । “আমি তোমাদিগকে সত্য কহিতেছি, তোমরা পৃথিবীতে যাহা কিছু বদ্ধ করিবে, তাহা স্বর্গে বদ্ধ হইবে; এবং পৃথিবীতে যাহা কিছু মুক্ত করিবে, তাহা স্বর্গে মুক্ত হইবে ।” মথি ১৮ : ১৮ । মণ্ডলীর নিরপেক্ষ বিচার ভিন্ন, কোন ব্যক্তিবিশেষের মতামতের সমর্থন করা যায় না। এজন্য ঈশ্বর স্বর্গের নিম্নে তাঁহার মণ্ডলীকে সর্বাপেক্ষা শ্রেষ্ঠ ক্ষমতা দান করিয়াছেন । ঈশ্বরের যে সকল লোক মণ্ডলীরুপে একতাবদ্ধ তাহাদের বাক্যকে ঈশ্বরের বাক্য বলিয়া সমাদার করিতে হইবে ।5 CCh 198.1

মণ্ডলীর বিচারের বিরুদ্ধে ব্যাক্তি বিশেষের বিচারে মানিয়া লওয়া শাস্র-বিরুদ্ধ, এজন্য মণ্ডলীর মতামতের বিরুদ্ধে ব্যাক্তি বিশেষের বিচার মতামত মানিয়া লইতে নিষেধ করা হইয়াছে । মণ্ডলীর কোন শৃঙ্খলা এবং শাসন না থাকিলে, মণ্ডলী খণ্ডবিখণ্ড হইয়া যাইত ; এক দেহরুপে ইহা দণ্ডায়মান থাকিতে পারিত না । সর্ব্বযুগেই এরূপ স্বাধীনচেতা লোক দেখিতে পাওয়া যায়, যাহারা দাবী করে যে, তাহারা ঠিক পথে চলিতেছে, ঈশ্বর তাহাদিগকে বিশেষ ভাবে শিক্ষা দিতেছেন, তাহাদের মনের উপরে প্রভাব বিস্তার করিতেছেন ও তাহাদিগকে চালিত করিতেছেন । প্রত্যেকেরই নিজ নিজ মতবাদ আছে, উহা অদ্ভুত হইলেও প্রত্যেকে দাবী করে যে, ঈশ্বরের বাক্যের সহিত তাহার মতবাদের পূর্ণ সামঞ্জস্য রহিয়াছে । প্রত্যেকের মত ও বিশ্বাস বিভিন্ন প্রকার হইলেও প্রত্যেকেই দাবী করে যে, সে ঈশ্বরের নিকট হইতে বিশেষ দীপ্তি প্রাপ্ত হইয়াছে । এই সকল কারণে এক দেহ হইতে পৃথক্‌ হইয়া প্রত্যেকে এক একটি মণ্ডলী হইয়া দাঁড়ায় । ইহারা সকলেই খাঁটি হইতে পারে না, তথাপি তাহারা সকলেই সদাপ্রভুর দ্বারা চালিত বলিয়া দাবী করে । CCh 198.2

আমাদের ত্রাণকর্তা তাঁহার উপদেশবাণীতে প্রতিজ্ঞা করেন যে, দুই কিংবা তিন জন একমত হইয়া ঈশ্বরের নিকটে কিছু যাচ্ঞা করিলে তাহাদিগকে তাহা দত্ত হইবে । এ স্থানে খ্রীষ্ট প্রদর্শন করেন যে, অন্যের সহিত আমাদের, এমন কি, আকাঙ্ক্ষিত বস্তু সম্বন্ধেও একমত হইতে হইবে । যেহেতু এক উদ্দেশ্যে প্রণোদিত হইয়া সম্মিলিত ভাবে প্রার্থনার শ্রবণ করিয়া থাকেন ; কিন্তু এই উপলক্ষে যীশু যে বিশেষ অত্যাবশ্যক শিক্ষা দিয়াছেলেন, তাহা পৃথিবীস্থ নবগঠিত মণ্ডলীর উপরে বিশেষ ভাবে প্রযোজ্য ছিল । তাহারা যাহার জন্য লালায়িত ও যাহার জন্য তাহারা প্রার্থনা করে, তব্দিঘয়ে তাহাদের মতের মিল থাকা আবশ্যক । ইহা কেবল প্রতারণা-প্রবণ এক মনের চিন্তা ও কার্য্য নহে, কিন্তু সেই একই বিষয় লইয়া কতিপয় মনের ব্যাকুল আকাঙ্ক্ষা হইয়া কর্ত্তব্য ।6 CCh 199.1

মণ্ডলী, মানবের মুক্তির নিমিত্ত ইশর-নিয়োজিত প্রতিনিধি । ইহার প্রতিষ্ঠা হইয়াছিল সেবাকার্য্যের নিমিত্ত, এবং ইহার উদ্দেশ্য ছিল, সমুদয় জগতে সুসমাচার লইয়া যাওয়া । মণ্ডলীর মাধ্যমে ঈশ্বরের পূর্ণতা ও প্রাচুর্য্য প্রতিবিম্বিত হইবে, আদি হইতে ইহাই ছিল ঈশ্বরের পরিকল্পনা । মণ্ডলীর যে সকল সভ্যকে তিনি অন্ধকার হইতে তাঁহার আশ্চার্য্য জ্যোতির মধ্যে আহ্বান করিয়াছেন, তাহাদিগেতে তাঁহার গৌরব প্রকাশিত হওয়া আবশ্যক । মণ্ডলী খ্রীষ্টের অনুগ্রহরুপ ধনের ভাণ্ডার ; অবশেষে মণ্ডলীর মাধ্যমে, এমন কি স্বর্গীয় স্থানস্থ আদিপত্য ও কর্ত্তৃত্ব পর্য্যন্ত,—ঈশ্বরের প্রেমের চরম ও পূর্ণ পরাকাষ্ঠা প্রকাশিত হইবে ।7 CCh 199.2