মণ্ডলীর জন্য উপদেশ

44/327

ঈশ্বরের নিকট অঙ্গীকার অবশ্য পালনীয় এবং পবিত্র

কে কত দান করিবে, তাহা তাঁহার নিজেরই নির্দ্ধারন করিয়া লইতে এবং হৃদয়ের ইচ্ছানুযায়ী দান করিতে হইবে। কিন্তু অনেকে আছে, অননিয় সাফিরার ন্যায় একই দোষে দোষী। তাঁহারা মনে করে, দশমাংশ দানের বিধান অনুযায়ী ঈশ্বর যাহা কিছু দাবী করেন, তাঁহার একটি অংশ রাখিয়া দিলেও ভ্রাতৃগণ কখনই উহা জানিতে পারিবেনা। অপরাধী — দম্পতি এইরূপই চিন্তা করিয়াছিল; আর তাঁহাদের দৃষ্টান্ত আমাদের চেতনার জন্য লিখিত হইয়াছে। এই ঘটনায় ইহাই প্রমানিত হয় যে, ঈশ্বর হৃদয়ের অনুসন্ধানকারী। মানবের মনস্কল্পনা ও উদ্দেশ্য ঈশ্বরের নিকট হইতে লুকান যায় না। মানবের হৃদয় যে পরিমাণ পাপের দিকে ক্রমাগত প্রধাবিত হয়, সর্ব্বযুগের খ্রীষ্টীয়ান দিগকে সেই পাপের বিষয়ে সতর্ক থাকিতে অবিরত চেতনা দেওয়া হইয়াছে। CCh 156.1

কোন নির্দ্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দান করিব বলিয়া ভ্রাতৃগণের সমক্ষে মৌখিক কিংবা লিখিত যে প্রতিশ্রুতি দেই, তাহা ঈশ্বরের ও আমাদের মধ্যে এক চুক্তির দৃশ্য সাক্ষী। এই প্রতিজ্ঞা মানবের নিকট নহে, কিন্তু ঈশ্বরের নিকটে করা হয়; এবং প্রতিবাসীর নিকট যেমন লিখিত — পত্র দেওয়া হয়, ইহাও সেই ভাবে দেওয়া হয়। ঈশ্বরের নিকটে যে প্রতিজ্ঞা করা হয়, ইহাও তাহা যেমন অবশ্য পালনীয়, টাকা পরিশোধের জন্য কোন সরকার অনুমোদিত তমসুক বা প্রতিজ্ঞাপত্র খ্রীষ্টীয়ানের পক্ষে তদপেক্ষা অধিকতর পালনীয় নহে। CCh 156.2

এইরূপে যাঁহারা তাঁহাদের সহমানবের সহিত প্রতিজ্ঞাপাশে আবদ্ধ হয়, তাঁহারা তাঁহাদের প্রতিজ্ঞা হইতে মুক্ত হইবার জন্য সচরাচর কোন নিবেদনের চিন্তাই করে না । যিনি সকল অনুকম্পার আধার সেই ঈশ্বরের নিকটে আমরা যে প্রতিজ্ঞা করিয়াছি, তাহা হইতে কেন মুক্ত হইবার চেষ্টা করিব? ঈশ্বরের নিকটে অঙ্গীকার করা হইয়াছে বলিয়া বিবেচনা করিবে? ধর্ম্মাধিকরণে তাঁহার প্রতিজ্ঞার বিচার হইবে না বলিয়া, ইহা কি কম বলবৎ ? যীশু খ্রীষ্টের অনন্ত বলির রক্তে মুক্ত বলিয়া যে ব্যক্তি স্বীকার করে, সে কি “ঈশ্বরকে ঠকাইবে?” স্বর্গীয় বিচারালয়ে ন্যায্য দাঁড়িপাল্লায় তাঁহার প্রতিজ্ঞা ও কার্য্যাদি কি তৌল হইতেছে না? CCh 157.1

মণ্ডলীর সভ্যগণের ব্যক্তিগত প্রতিজ্ঞাপত্রের জন্য মন্ডলীই দায়ী। মন্ডলীর সভ্যগণ যদি দেখিতে পান যে, কোন ভ্রাতা তাঁহার প্রতিজ্ঞা পূর্ণ করিতে অভহেলা করিতেছেন, তবে সদয় ও সরল ভাবে তাঁহার ত্রুটী তাহাকে দেখাইয়া দিতে হইবে। ঘটনাচক্রে পড়িয়া তাঁহার প্রতিজ্ঞা রক্ষা করা তাঁহার পক্ষে যদি অসম্ভব হয়, এবং তিনি যদি সুযোগ্য সভ্য হন, এবং প্রতিজ্ঞা রক্ষার জন্য মন্ডলীর সভ্যগণের কর্ত্তব্য দয়াপরবশ হইয়া তাহাকে সাহায্য করা। মণ্ডলীর সভ্যগণ এইরূপ অসুবিধা ভঞ্জন করিয়া নিজেরাও আশীর্ব্বাদের ভাগী হইতে পারেন।22 CCh 157.2