পিতৃকুলপতিগণ ও ভাববাদীগণ
অপরিচিত দেশে
পিতার কবর হতে ঈশ্বরের স্বর তাকে এগিয়ে যাবার জন্য নির্দেশ দিল। অব্রাহামের স্ত্রী সারা ব্যতিত একমাত্র লোট তার গোষ্ঠির মুরুব্বীর যাত্রার জীবনের সাথী হল । অব্রাহামের প্রচুর পশু ও অনেক চাকর-বাকর ছিল। যেহেতু তিনি আর কখনই ফিরবেন না, তাই তার যা কিছু ছিল সবই সঙ্গে নিলেন, “হারণে তাহারা যে ধন উপার্জন ও যে প্রাণীগণকে লাভ করিয়াছিলেন” সমস্তই সঙ্গে নিলেন । অব্রাহাম ও স্ত্রী সারা উভয়েই হারণে কিছু লোককে সত্য ঈশ্বরের আরাধনা করতে পরিচালিত করেছিলেন। এরাও তার সাথে সেই প্রতিজ্ঞাত দেশের দিকে চললেন, “কনানীয়রা সেই দেশে বাস করিত।” PPBeng 78.1
যে স্থানে তারা প্রথম উপস্থিত হলেন এর নাম ছিল শিখিম। একটি প্রশস্ত, তৃণময়, জলপাই গাছ ও উচ্ছসিত জলের উনুই পূর্ণ উপত্যকায় অব্রাহাম তার তাম্বু স্থাপন করলেন। এটি একটি সুন্দর ও উর্বর দেশ ছিল, “সেই দেশে উপত্যকা ও পর্ব্বত হইতে নির্গত জলস্রোত, উনুই...গোধূম, যব, দ্রাক্ষালতা, ডুমুর গাছ ও দাড়িম্ব এবং তৈলদায়ক জিতবৃক্ষ ও মধু উৎপন্ন হয়।” দ্বিতীয় বিবরণ ৮:৭, ৮। কিন্তু এর বৃক্ষময় পর্বত ও ফলপূর্ণ সমভূমিতে একটি গভীর কালো ছায়া ছিল। কুঞ্জে কুঞ্জে মিথ্যা দেব-দেবীর বেদী ছিল, এবং নিকটস্থ উঁচু জায়গাতে নরবলি দেয়া হত। “পরে সদাপ্রভু অব্রাহামকে দর্শন দিয়া বলিলেন, “আমি তোমার বংশকে এই দেশ দিব।” এই নিশ্চয়তা পাওয়ায় তার বিশ্বাস আরো শক্তিশালী হলো । “আর সেই জায়গায় অব্রাহাম সদাপ্রভুর উদ্দেশে একটি যজ্ঞবেদী নির্মাণ করিলেন, যিনি তাঁহাকে দর্শন দিয়াছিলেন।” তখনও একজন ভ্রমণকারী, তিনি আবার বৈথেলের নিকটবর্তী আর একটি স্থানে সরে গেলেন এবং আবার একটি যজ্ঞবেদী প্রস্তুত করে সদাপ্রভুর আরাধনা করলেন। PPBeng 78.2
অব্রাহাম আমাদের জন্য একটি উপযুক্ত দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তার জীবন ছিল একটি প্রার্থনাশীল জীবন। যেখানেই তিনি তাম্বু স্থাপন করতেন তার নিকটবর্তী স্থানে একটি যজ্ঞবেদী তৈরী করতেন। আর তার তাম্বুর অভ্যন্তরে প্রত্যেককে সকাল ও সন্ধ্যার যজ্ঞতে অংশ গ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানাতেন । তার তাম্বু স্থানান্তরিত হত, কিন্তু যজ্ঞবেদী থেকে যেত। ভ্রাম্যমান কনানবাসীরা আব্রাহামের নিকট হতে উপদেশ পেতেন, আর তাদের মধ্যের কেউই যদি ঐ যজ্ঞবেদীর কাছে আসত তখন সেখানে সে জীবন্ত ঈশ্বরের আরাধনা করত । PPBeng 78.3