পিতৃকুলপতিগণ ও ভাববাদীগণ

327/333

যে যুদ্ধ বিদ্রোহ দমন করে

মহনয়িমের দেয়াল হতে বিদ্রোহী সেনাদলের দীর্ঘ সারি স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছিল । অনধিকার উচ্ছেদকারী এক বিশাল বাহিনীসহ এগিয়ে আসছিল, আর এদের তুলনায় দায়ূদের সৈন্যদল অত্যন্ত নগন্য মনে হচ্ছিল। যখন সৈন্যরা নগরের সদর দরজা দিয়ে সারিবদ্ধ ভাবে বেরিয়ে যাচ্ছিল, তখন দায়ূদ তার বিশ্বস্ত সৈন্যদের উসাহিত করছিলেন যে ইস্রায়েলের ঈশ্বর তাদের বিজয় দান করবেন এই ভরসা রেখে তারা যেন এগিয়ে যায়। কিন্তু যখন যোয়াব তার সেন্যদলকে নিয়ে রাজার সামনের দিয়ে এগিয়ে চলছিলেন, তখন শত শত যুদ্ধে জয়ী বীর তার উন্নত মস্তককে নত করে রাজার শেষ বাণী শ্রবণ করলেন, “তোমরা আমার অনুরোধে সেই যুবকের প্রতি, অবশালোমের প্রতি, কোমল ব্যবহার করিও। অবীশয় ও ইওয়ও একই বাণী শুনলেন। কিন্তু রাজার সে অনুরোধের ফলে মনে হল যে তিনি তার প্রতি বাধ্য প্রজাদের চাইতে অবশালোমকে বেশী প্রেম করেন, সেই অনুরোধ তার এই অস্বাভাবিক ছেলের প্রতি সৈন্যদের ক্রোধ আরো বাড়িয়ে তুলল । PPBeng 540.5

যুদ্ধক্ষেত্রটি ছিল যৰ্দ্দন নদীর তীরের এক ভূমি। বনের ঝোপ-ঝাড়ের মধ্যে ও তুল তুলে কাঁদার মধ্যে অবশালোমের বিশাল বাহিনী হতবম্ভ ও বিশৃঙ্খল হয়ে পড়ল। এবং “সে স্থানে ইস্রায়েল লোকেরা দায়ূদের দাসদের সম্মুখে আহত হইল, আর সেই দিন সেখানে মহাসংহার হইল, বিংশতি সহস্র লোক মারা পড়িল ।” PPBeng 540.6

অবশালোম যখন দেখতে পেলেন যে যুদ্ধে পরাজয় ঘটেছে, তখন তিনি পালাতে গেলেন, আর তার মস্তক একটি প্রসারিত গাছের দুই শাখার মধ্যে আটকা পড়ল, আর তার খচ্চর তার নীচ থেকে চলে যাওয়ায় তিনি গাছে ঝুলতে থাকলেন, ও শত্রুদলের সহজ শিকারে পরিণত হলেন। একজন সৈন্য তাকে দেখতে পেল, কিন্তু সে তার জীবন হরণ না করে সে যা দেখেছে তা যোয়াবকে জানাল । PPBeng 541.1

যোয়াবের কোন বিবেকের বাধা ছিল না। দায়ূদের সাথে দু'বার আপোষ করানোর মাধ্যমে তিনি অবশালোমের বন্ধুত্ব লাভ করেছিলেন, কিন্তু তার সাথে নির্লজ্জ ভাবে বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছিল। যোয়াবের নিকট হতে অবশালোম এ ধরণের সুযোগ লাভ না করলে এই বিদ্রোহ কখনও সংঘটিত হত না। “পরে তিনি হস্তে তিনটি খোঁচা লইয়া অবশালোমের বক্ষ বিদ্ধ করিলেন।...আর তাহারা অবশালোমকে লইয়া অরণ্যের এক বৃহৎ গর্তে ফেলিয়া দিয়া তাহার উপরে প্রস্তরের অতি প্রকান্ড এক রাশি করিল।” PPBeng 541.2