সুষম শিক্ষা

19/67

৮ - ঈশ্বরের প্রেরিত শিক্ষক

“তাহার বিষয় বিবেচনা কর।”

তার নাম হবে- “আশ্চর্য মন্ত্রী, বিক্রমশালী ঈশ্বর, সনাতন পিতা, শান্তিরাজ।” যিশাইয় ৯:৬। EdBen 66.1

ঈশ্বরের পাঠানাে শিক্ষকের মাধ্যমে স্বর্গ মানুষের কাছে তার সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সবচেয়ে ভালাে বিষয়টি দান করেছিলেন । যিনি পরাৎপরের মন্ত্রণা সভায় উপস্থিত ছিলেন, যিনি নিত্যজীবির অন্তরতর মন্দিরে বাস করতেন, তিনি মানব সমাজে ঈশ্বর-জ্ঞান প্রকাশ করার জন্য মনােনীত হলেন। EdBen 66.2

খ্রীষ্টের মাধ্যমে ঐশ্বরিক জ্যোতির প্রতিটি রশ্যি প্রকাশিত হয়েছে যা আগে কখনাে পাপময় বিশ্বে আসে নি। ইনিই ছিলেন সেই ব্যক্তি যিনি প্রত্যেকের মাধ্যমে কথা বলেছেন, যিনি যুগ যুগ ব্যাপি মানুষের কাছে ঈশ্বরের বাক্য গবেষণা করেছেন। তা হতে সমস্ত উৎকৃষ্টতা পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ এবং মহৎ ব্যক্তিগণের জীবনে প্রকাশিত হয়েছে। যােষেফের পবিত্রতা এবং বদান্যতা, মােশির বিশ্বাস, মৃদুতা এবং দীর্ঘ সহিষ্ণুতা, ইলীশায়ের দৃঢ়তা, দানিয়েলের ন্যায়পরায়ণতা এবং দৃঢ়তা, পৌলের উদ্দীপনা এবং আত্মত্যাগ এ সব মানবের মধ্যে মানসিক এবং আধ্যাত্মিক শক্তি প্রকাশিত হয়েছে, এবং অন্যান্য সকলে যারা পৃথিবীতে বসবাস করেছেন, তারা ছিলেন তাঁর মহিমার আলােকছটা। তার মধ্যে নিখুঁৎ আদর্শ নিহিত ছিল। EdBen 66.3

একমাত্র প্রকৃত মানবরূপে এই সর্বোচ্চ আদর্শ প্রকাশ করতে; প্রত্যেকটি মানব সত্তার পক্ষে কি হওয়া সম্ভব তা দেখাবার জন্য মানুষের মধ্যে ঈশ্বরত্ব বিরাজ লাভের মাধ্যমে, যারা তাকে গ্রহণ করে, তারা কি হতে পারে- এ জন্য খ্রীষ্ট পৃথিবীতে এসেছিলেন। তিনি দেখাতে এসেছিলেন কিভাবে মানব জাতি ঈশ্বরের সন্তানদের মত হতে পারে; কিভাবে তার নীতিমালা অনুসরণ করে চলতে পারে এবং স্বর্গের জীবন যাপন করতে পারে। EdBen 66.4

মানব জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ অভাবটি মােচনের জন্য ঈশ্বরের সর্বশ্রেষ্ঠ দানটি প্রদান করা হয়েছিল। যখন পৃথিবী গভীর অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল, ঠিক তখনই প্রকাশিত হল। ভ্রান্ত শিক্ষার মাধ্যমে দীর্ঘকাল যাবৎ মানব মন ঈশ্বর হতে দূরে ছিল। এই শিক্ষাপদ্ধতি বিরাজমান অবস্থায় মানব চিন্তাধারা ঐশ্বরিক প্রকাশ প্রাপ্তির স্থান অধিকার করেছিল। স্বর্গ থেকে দেয়া সত্যের মানদণ্ডের পরিবর্তে, মানব জাতি তাদের কৌশলকল্পিত একটি মানদণ্ড গ্রহণ করেছিল। জীবনের দীপ্তির নিকট থেকে সরে গিয়ে, তারা নিজেরা যে ক্ষুদ্র অগ্নি প্রস্তুত করেছিল, সেদিকে ফিরল। EdBen 67.1

তারা ঈশ্বর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়ে দুর্বল মানব শক্তির ওপর নির্ভর করল। তারা যে মানদণ্ড স্থাপন করেছিল, তা দিয়ে তারা তাদের লক্ষ্যে পৌছতে অক্ষম হল। বাহ্যিক প্রকাশ এবং দক্ষতার দাবি, এ সব দ্বারা প্রকৃত পরম কৃতিত্বের যােগান দেয়া হয়েছিল। অনুরূপতা বাস্তবতার স্থান অধিকার করল। EdBen 67.2

পর্যায়ক্রমে এমন শিক্ষকের আবির্ভাব ঘটেছে; যারা মানবদের সত্যের উৎসের নির্দেশ দিয়েছেন। প্রকৃত নীতিমালা তুলে ধরা হল, এবং মানব জীবন তার শক্তির সাক্ষ্য বহন করল। কিন্তু এ সব প্রচেষ্টা স্থায়ী প্রভাব ফেলল না। সাম্প্রতিক মন্দতার ওপরে একটি সংক্ষিপ্ত নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা যদিও আরােপ করা হয়েছিল, তথাপি তা দমনে রাখা সম্ভব হয় নি। সংস্কারক আলােক স্বরূপ ছিলেন যা অন্ধকারে আলাে দিয়েছিল, কিন্তু তারা তা ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হয় নি। জগৎ “জ্যোতি অপেক্ষা অন্ধকার অধিক ভালবাসিল।” যােহন ৩:১৯। EdBen 67.3

খ্রীষ্ট যখন জগতে এসেছিলেন, তখন মানব সমাজ যেন অধঃপতনের চরম সীমায় নেমে গিয়েছিল। সমাজের সেই মূল ভিত্তি যেন। ধ্বংস প্রাপ্ত হয়েছিল। জীবন হয়েছিল মিথ্যা এবং কৃত্রিম । যিহুদীরা ঈশ্বরের বাক্যের ক্ষমতা ত্যাগ করেছিল, জগৎকে মন-খর্বকারী, আত্মহানীকর কুসংস্কার এবং দূরকল্পনা প্রদান করেছিল। “আত্মায় ও সত্যে” ঈশ্বর-আরাধনা, মানব কল্পিত অনুষ্ঠানসূচির আবর্তে মানব চমক্তারিত্ব দ্বারা স্থানচ্যুত হয়েছিল। সমগ্র বিশ্বে সকল ধর্মীয় পদ্ধতি মন ও আত্মার আস্থা হারিয়ে ফেলেছিল। পৌরাণিক কাহিনী এবং মিথ্যা, প্রলুব্ধ চিন্তারাশির অন্বেষণে মানব জাতি বিশ্বাসঘাতকতা এবং বাস্তববাদের দিকে ফিরল। অমরত্বকে তাদের বাইরে রেখে দিয়ে তারা নশ্বর এবং বর্তমানকে নিয়ে বেঁচেছিল। EdBen 67.4

যেভাবে তারা ঈশ্বরকে উপলব্ধি করা থেকে বিরত হল, তারা মানবের প্রতিও শ্রদ্ধা প্রদর্শন হতে বিরত রইল। সত্য, সমাদর, ন্যায় পরায়ণতা, বিশ্বাস, করুণা, সবই পৃথিবী হতে বিদায় নিল। নিরন্তর লােভ এবং শােষণকারী উচ্চাকাঙ্ক্ষা নিখিল বিশ্বে অবিশ্বাস আনয়ন করল। কর্তব্য বােধ দুর্বলতার প্রতি কর্মশক্তি, মানব মূল্যবােধ এবং মানব অধিকারের ধারণা স্বপ্ন এবং উপকথার ন্যায় বিলিন হয়ে গেল। সাধারণ লােক যেন বােঝা বহনকারী পশু স্বরূপ বিবেচিত হল এবং উচ্চাকাঙ্ক্ষার জন্য যেন অপরের হাতিয়ার স্বরূপ হল । ঐশ্বর্য ও ক্ষমতা, আরাম আয়েশ এবং ভােগ পরায়ণতাই ছিল সর্বোত্তম লক্ষ্য বস্তু। দৈহিক অধঃপতন, মানসিক অসারতা, আত্মিক মৃত্যু বয়সের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করল। EdBen 68.1

মানুষের মন্দ আবেগ এবং উদ্দেশ্য তাদের চিন্তাধারা থেকে ঈশ্বরকে দূর করেছিল, তার প্রতি অমনােযােগিতা তাদেরকে মন্দতার প্রতি আরও ঠেলে দিল। পাপপূর্ণ হৃদয় পাপের নিজস্ব গুণাবলী দ্বারা তাঁকে ঘিরে ধরল, আর এই ধারণা পাপের ক্ষমতাকে আরও জোরদার করল। আত্ম পরিতৃপ্তির প্রতি মানুষ ঝুঁকে পড়ল, আর তারা মনে করল ঈশ্বর বুঝি তাদেরই মত একজন সত্ত্বা যার লক্ষ্য ছিল আত্ম-গৌরব, যার কাজ ছিল তার নিজের সুখ ভােগের জন্য; একজন সত্ত্বা বা যিনি তাঁর মনের ইচ্ছা মত মানুষকে চালাচ্ছেন। নিম্নস্তরের মানুষ ঈশ্বরকে তাদের নিষ্পেশনকারীগণ অপেক্ষা সামান্য জ্ঞান করল, যিনি তাদের উপরে ক্ষমতা বিস্তার করে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখেন। এই ধারণা দ্বারা প্রতিটি ধর্মীয় কাঠামাে গঠিত হয়। এর প্রতিটিই ছিল একটি অন্যায় দাবী। উপহার এবং অনুষ্ঠানাদি দ্বারা উপাসকগণ তাদের দেবতাদেরকে সন্তুষ্ট করত, যেন তারা নিজেদের কাজের মাধ্যমে তাঁর অনুগ্রহ লাভের চেষ্টা করছে। এমন ধর্ম, যা অন্তঃকরণ এবং বিবেকে কোন ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার করে না, যা কেবল একটি বাহ্যিক রীতি-নীতি, মুক্তিলাভের ব্যর্থ চেষ্টা মাত্র। মন্দতা চরম বৃদ্ধি পেল, এতে উত্তমতার জন্য প্রশংসাবাদ বিলিন হয়ে গেল। মানুষ ঈশ্বরের প্রতিপত্তি হারিয়ে ফেলল, মন্দ শক্তির ছাপ ধারণ করল, এবং এর মাধ্যমে তারা নিয়ন্ত্রিত হল। গােটা বিশ্ব ভ্রষ্টতার কূপে ডুবে যেতে লাগল । EdBen 68.2

কিন্তু মানব জাতির জন্য মাত্র একটি আশা ছিল এই বিরােধ এবং ভ্রষ্টতার মধ্যে এক নতুন তাড়ি ছুড়ে মারা; যেন মানব জাতির কাছে এক নতুন জীবনী শক্তি আনীত হতে পারে; যেন ধরণীতে ঈশ্বর জ্ঞান পুনরুদ্ধার করা যেতে পারে । EdBen 69.1

খ্রীষ্ট এসেছিলেন এই জ্ঞান পুনরুদ্ধার করতে, খ্রীষ্ট এসেছিলেন ভ্রান্ত শিক্ষাকে বাতিল করে দিতে, যদ্বারা যারা দাবি করেছিল যে, তারা ঈশ্বরকে জানে, তারা তার মিথ্যা পরিচয় দিয়েছিল। তিনি এসেছিলেন তাঁর ব্যবস্থার প্রকৃতি প্রকাশ করতে, তার নিজের চরিত্রের পবিত্রতার মাধুর্য ব্যক্ত করতে। EdBen 69.2

খ্রীষ্ট পুঞ্জীভূত চিরন্তন প্রেম নিয়ে জগতে এসেছিলেন। অন্যায় দাবি যা ঈশ্বরের ব্যবস্থাকে বিভ্রান্ত করেছিল তা দূর করে দিয়ে, ঈশ্বরের ব্যবস্থা, প্রেমের ব্যবস্থা, এবং ঈশ্বরের ধার্মিকতার প্রকাশ দেখালেন। তিনি দেখালেন যে এর নীতিমালার ওপর নির্ভরই মানব জাতির সুখ, এবং দৃঢ়তা মানব সমাজের ভিত্তি এবং কাঠামাে গঠন। EdBen 69.3

এ পর্যন্ত খামখেয়ালির মত কিছু না করে, ঈশ্বরের ব্যবস্থা মানুষকে একটি বেড়া, একটা ঢাল স্বরূপ দেয়া হয়েছে। যে কেউ এ নীতিমালা গ্রহণ করবে সে মন্দ হতে রক্ষা পাবে। আমরা মানুষের আনুগত্য স্বীকার করার আগে ঈশ্বরের আনুগত্য স্বীকার করব। এভাবে ব্যবস্থা, ব্যক্তিগত বৈশিষ্ট্য, এবং প্রত্যেক মানব সত্ত্বাকে রক্ষা করে। এটা উৎপীড়ন হতে উর্ধ্বতন ব্যক্তিকে এবং অবাধ্যতা হতে অধীন ব্যক্তিকে দূরে রাখে। যা ইহকাল এবং পরকালের জন্য মানুষের মঙ্গল নিশ্চিত করে। আজ্ঞা পালনকারীর জন্য। এটি অনন্ত জীবনের অঙ্গীকার, কেননা ইহা চিরস্থায়ী নীতি প্রকাশ করে। EdBen 69.4

খ্রীষ্ট এসেছেন, মানব জাতির জন্য, ঐশ্বরিক নীতিমালার শক্তি প্রকাশের মাধ্যমে ঐ সবের মূল্য দেখিয়ে দেবার জন্য। তিনি এসেছিলেন। নীতিমালা সম্প্রসারণ এবং তার প্রয়ােগ শিক্ষা দেয়ার জন্য। EdBen 69.5

ঐ যুগের লােকদের কাছে সমস্ত কিছুর মূল্য নিরূপিত হত বাহ্যিক বিন্যাস দ্বারা। ধর্মীয় শক্তি হারিয়ে গেল এবং মিথ্যা জাকজমক বৃদ্ধি পেল। তৎকালিন শিক্ষাগুরুগণ তাদের বাহ্যিক বেশভূষা এবং কৃত্রিম আচরণ দ্বারা সম্মান আদায় করত। এ সবের সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যায় যে, যীশুর জীবন এর সম্পূর্ণ বিপরীত। মানুষ যা জীবনের শ্রেষ্ঠ এবং অপরিহার্য বলে বিবেচনা করত, সে তুলনায় তাঁর জীবন ছিল বাজে এবং মূল্যহীন। দুর্বিনীত পরিবেশে তাঁর জন্ম, কৃষক, শ্রমিক, সূতার মিত্রীর পেশা, বৈশিষ্ট্যহীন এক জীবন, পৃথিবীর অজ্ঞাতনামা কঠিন পরিশ্রমীদের সঙ্গে গণ্য, এই তার পরিচয়, এই সকল অবস্থা এবং পরিবেশের মধ্যেও যীশু ঐশ্বরিক শিক্ষা পরিকল্পনার অনুসরণ করেছেন। তিনি তাঁর সময়ের বিদ্যালয়ে শিক্ষালাভের অন্বেষণ করেন নি। তিনি সরাসরি স্বর্গ-নিযুক্ত উৎস হতে শিক্ষা লাভ করেছেন; ব্যবহারিক কাজ, শাস্ত্র অধ্যয়ন এবং প্রকৃতি পাঠ, এবং জীবনের অভিজ্ঞতা-ঈশ্বরের পাঠ্য পুস্তক, যারা স্বেচ্ছায় তা ধারণ করে, তার প্রতি দৃষ্টিপাত করে, বােধ শক্তি সম্পন্ন হৃদয় দিয়ে। বুঝবার চেষ্টা করে তাদের কাছে তা শিক্ষায় ভরপুর । EdBen 69.6

“পরে বালকটি বাড়িয়া উঠিতে ও বলবান হইতে লাগিলেন, জ্ঞানে পূর্ণ হইতে থাকিলেন, আর ঈশ্বরের অনুগ্রহ তাহার উপরে ছিল।” লুক। ২:৪০ EdBen 70.1

এভাবে প্রস্তুতি নেয়ার সময়, তিনি তাঁর কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করলেন। তিনি যাদের সঙ্গে দেখা করতেন, তাদের ওপর আশীর্বাদের প্রভাব রাখতেন এবং একটি পরিবর্তনকারী শক্তি প্রয়ােগ করতেন, যা পৃথিবী কখনাে দেখে নি। EdBen 70.2

যে ব্যক্তি মানব জাতিকে পরিবর্তিত করতে চায়, তার মানব প্রকৃতি বুঝতে হবে। একমাত্র সহানুভূতি, বিশ্বাস ও প্রেমের মাধ্যমে মানব সমাজের মধ্যে প্রবেশ করা যায়, এবং ঐ সমাজকে উন্নীত করা যায়। এই স্থানে গুরুশ্রেষ্ঠ খ্রীষ্ট দাঁড়িয়ে আছেন; যার তুল্য পৃথিবীতে কেহ কখনাে। বসবাস করে নি, একমাত্র তাঁরই মানব আত্মা সম্পর্কে নির্ভুল ধারণা রয়েছে। EdBen 70.3

“আমরা এমন মহাযাজক পাই নাই”— শ্রেষ্ঠ, কেননা যাজকগণই ছিলেন গুরু আমরা এমন মহাযাজককে পাই নাই, যিনি আমাদের দুর্বলতা ঘটিত দুঃখে দুঃখিত হইতে পারেন না, কিন্তু তিনি সর্ব বিষয়ে আমাদের ন্যায় পরীক্ষিত হইয়াছেন।” ইব্রীয় ৪:১৫। EdBen 70.4

“কেননা তিনি আপনি পরীক্ষিত হইয়া দুঃখভােগ করিয়াছেন বলিয়া পরীক্ষিতগণের সাহায্য করিতে পারেন।” ইব্রীয় ২:১৮। EdBen 70.5

মানুষের কাছে যে সকল দুঃখ, কষ্ট, এবং পরীক্ষা আসে, খ্রীষ্ট একাকী তার সবগুলাের অভিজ্ঞতার সহভাগী হয়েছেন। অন্য আর কেহ কখনাে কোন ব্যক্তি স্ত্রীলােক হতে জাত হয় নি যিনি ভয়াবহ পরীক্ষার মধ্যে পড়েছিলেন; অন্য আর কেউ কখনও, বিশ্বের পাপের এতবড় দুর্বহ বােঝা বহন করেন নি এবং বেদনা সহ্য করেন নি। পৃথিবীতে এমন আর কেউই ছিলেন না, যিনি এত অবাধ সহানুভূতি এবং করুণা দেখিয়েছেন। যিনি মানবজাতির সমস্ত অভিজ্ঞতার সহভাগি হয়েছেন, আমরা যে সব বােঝা বহন করি, প্রলােভনে পড়ি, এবং সংগ্রাম করি, তার প্রত্যেকটি তিনি উপলব্ধি করেছেন। EdBen 70.6

তিনি যা কিছু শিক্ষা দিতেন, তা তিনি নিজেও পালন করতেন । তিনি তাঁর শিষ্যদের বলেছেন, “কেননা আমি তােমাদিগকে দৃষ্টান্ত দেখাইলাম, যেন তােমাদের প্রতি আমি যেমন করিয়াছি, তােমরাও তদ্রুপ কর।” “আমিও আমার পিতার আজ্ঞাসকল পালন করিয়াছি।” যােহন ১৩:১৫; ১৫:১০। এভাবে তার জীবনে খ্রীষ্টের বাক্যের নিখুঁৎ দৃষ্টান্ত এবং দৃঢ় সমর্থন ছিল। আরও বলা হয়েছে যে, তিনি যা শিক্ষা দিতেন, তিনি তাই-ই ছিলেন। তাঁর বাক্য কেবল তাঁর নিজের জীবনের অভিজ্ঞতারই প্রকাশ নয়, কিন্তু তার নিজের চরিত্রেরও প্রকাশ। তিনি কেবল সত্য শিক্ষাই দেন নি, কিন্তু নিজেও ছিলেন সত্য। আর তা তাঁর শিক্ষাকে শক্তিশালী করে তুলেছিল EdBen 71.1

খ্রীষ্ট ছিলেন একজন বিশ্বস্ত ভৎর্সনাকারী। এমন আর কেউ ছিলেন না যে পাপকে এত অধিক ঘৃণা করেছেন, যিনি নির্ভয়ে পাপের নিন্দা করেছেন। যা অসৎ ও অসত্য, তার প্রতি তাঁর প্রতিটি উপস্থিতি ছিল একটি ভৎসনা স্বরূপ। তাঁর পবিত্রতার আলােকে লােকেরা দেখতে পেত যে, তারা অশুচি এবং তাদের জীবনের লক্ষ্য অতিশয় হীন এবং মিথ্যা। তথাপি তিনি তাদের তাঁর কাছে তুলে নিয়েছেন। যিনি মানব জাতিকে সৃষ্টি করেছেন, তিনি মনবজাতির মূল্যও উপলব্ধি করেছেন। তিনি যাদের আশীর্বাদ এবং পরিত্রাণ করার জন্য অন্বেষণ করেছেন, তাদের মন্দতাকে তাদের শত্রু বলে প্রকাশ্যে অভিযােগ করেছেন। প্রতিটি মানব সত্তা যদিও পতিত হয়ে থাকে তাদের মধ্যে তিনি ঈশ্বরের একজন সন্তানকে দেখতে পেয়েছেন, যাকে হয়তাে পুনরুদ্ধার করা সম্ভব, যেন তিনি তাদের সাথে স্বর্গীয় সম্পর্ক লাভের সহভাগী হতে পারেন। EdBen 71.2

“কেননা ঈশ্বর জগতের বিচার করিতে পুত্রকে জগতে প্রেরণ করেন নাই, কিন্তু জগৎ যেন তাঁহার দ্বারা পরিত্রাণ পায়।” যােহন ৩:১৭। মানব জাতির বিপর্যয় এবং ধ্বংস কবলিত দুঃখকষ্ট এবং অবনতির দিকে দৃষ্টিপাত করে খ্রীষ্ট সেখানেও আশার ভূমি দেখলেন। যেখানেই একটি অভাব দেখা গেছে, সেখানেই তিনি লক্ষ করেছেন যে, লােকদের তুলে ধরা সম্ভব। আত্মাগণ পরীক্ষিত, পরাজিত, মনে হয় যেন তারা হারিয়ে গেছে, যেন এখনই বিনষ্ট হবে, তিনি সেখানে গিয়েছেন, দোষারােপ করার জন্য নহে, কিন্তু আশীর্বাদ করার জন্য। EdBen 71.3

‘পর্বতে দত্ত’ যীশুর উপদেশ ছিল, সমগ্র মানব পরিবারের জন্য তাঁর শুভেচ্ছাবাণী। পর্বতে দত্ত উপদেশ শােনার জন্য যে বিশাল জনতা উপস্থিত হয়েছিল, তাদের দিকে তাকিয়ে তার মনে হচ্ছিল যেন তিনি এখন। স্বর্গে নন, তাই তিনি আলাের ভুবনের পরিচিত সম্ভাষণ ব্যবহার করলেন। দীর্ঘদিন বন্ধ করে রাখা ঝর্ণাধারা দিয়ে যেমন প্রবল বেগে জল প্রবাহিত হয়, তার মুখ থেকে তেমনি আশীর্বাদের শ্রোতধারা প্রবাহিত হতে লাগল । EdBen 72.1

পৃথিবীর উচ্চাকাঙ্ক্ষী আত্ম-পরিতৃপ্তি লাভকারীদের দিকে পিছন ফিরিয়ে দিয়ে তিনি ঘােষণা করলেন যে, ধন্য তারা যাদের ভয়ানক অভাব থাকুক না কেন তারা তার জ্যোতি ও প্রেম লাভ করবে। যারা আত্মাতে দীনহীন, শােকার্ত, তাড়িত, তিনি তাদের দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, “আমার নিকটে আইস, ... আমি তােমাদিগকে বিশ্রাম দিব।” মথি ১১:২৮ । EdBen 72.2

প্রতিটি মানুষের মধ্যে তিনি অসীম সম্ভাবনা লক্ষ করলেন। তিনি লক্ষ করলেন, মানুষ তাঁর অনুগ্রহ দ্বারা- “আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর প্রসন্নতায় রূপান্তরিত হল।’ গীতসংহিতা ৯০:১৭। তিনি আশাপূর্ণ দৃষ্টিতে তাদের দিকে তাকালেন এবং আশাকে অনুপ্রাণিত করলেন। তিনি বিশ্বাস সহকারে তাদের সঙ্গে দেখা দিলেন এবং তাদের বিশ্বাসকে অনুপ্রাণিত করলেন। তাঁর মধ্যে মানুষের আদর্শ প্রকাশ করলেন, তাদের বাসনা এবং বিশ্বাসকে জাগিয়ে তুললেন। তাঁর সামনে ঘৃণীত এবং পতিত আত্মা উপলব্ধি করতে পেরেছে যে, তারা এখনাে মানুষ, এবং তারা এটি প্রমাণ করতে চাইল যে, তারা তার ভালােবাসা পাবার যােগ্য। অনেকের হৃদয়ে পবিত্র বিষয়গুলাে মৃত বলে মনে হচ্ছিল, তারা নতুন জীবনীশক্তি লাভ করল। অনেক ভগ্নোদ্যম ব্যক্তি নতুন জীবনের সম্ভাবনা লাভ করল। EdBen 72.3

খ্রীষ্ট লােকদের প্রেম এবং ধার্মিকতার রশি দিয়ে তার হৃদয়ের সঙ্গে বেঁধেছেন; এবং একই রশি দিয়ে তাদের সহমানদের সঙ্গেও বেঁধেছেন। তাঁর কাছে প্রেম ছিল জীবন এবং জীবন ছিল সেবায় রত থাকা। তিনি বললেন, “তােমরা বিনামূল্যে পাইয়াছ, বিনামূল্যে দান করিও।” মথি ১০:৮ EdBen 72.4

যীশু যে মানব জাতির জন্য একমাত্র ক্রুশেই বলিকৃত হয়েছিলেন, তাই নয়। যেমন তিনি “হিত কার্য করিয়া বেড়াইতেন” (প্রেরিত ১০:৩৮), প্রতিদিনের অভিজ্ঞতাই ছিল তাঁর জীবনের একটি উল্লেখযােগ্য দিক। কেবল একটি উপায়ে এমন একটি জীবন টিকিয়ে রাখা সম্ভব। যীশু ঈশ্বরের উপর নির্ভর করে এবং তার সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষা করেই বেঁচে থাকতেন। পরাৎপরের অন্তরালে, সর্বশক্তিমানের ছায়াতে মানুষ ক্ষণে ক্ষণে পরিবর্তিত হয়, মানুষ কিছু কাল তার অনুগত থাকে, আর এর ফল মহৎ কাজে প্রকাশ পায়, অতঃপর তাদের বিশ্বাস বিচ্যুত হয়, সম্পর্ক বাধা প্রাপ্ত হয়; জীবনের কাজ ক্ষতিগ্রস্থ হয়। কিন্তু খ্রীষ্টের জীবন ছিল এক বিরামহীন নির্ভরশীলতার জীবন। এক বিরামহীন সম্পর্কের মাধ্যমেই তিনি বেঁচে থাকতেন। স্বর্গ ও পৃথিবীর জন্য তাঁর সেবাকাজ ছিল অব্যর্থ এবং নির্ভুল । EdBen 73.1

একজন মানুষ হিসাবে তিনি ঈশ্বরের সিংহাসনে আবেদন করেছিলেন, যাবৎ না তার মনুষ্যত্বের মধ্যে স্বর্গীয় স্রোতধারা সঞ্চারিত হয়েছিল, যা ঈশ্বরত্বের সাথে মনুষ্যত্বকে সংযুক্ত করেছিল। ঈশ্বরের কাছ থেকে জীবন লাভ করে তিনি মানুষকে তার অংশীদার করছেন। EdBen 73.2

“কোন মানুষে কখনও এরূপ কথা কহে নাই।” যােহন ৭:৪৬। খ্রীষ্টের পক্ষে এটি সত্য বলে ধরে নেয়া যেত যদি নাকি তিনি কেবল শারীরিক এবং বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে, অথবা বিদ্যাগত তত্ত্ব এবং অনুমানের মাধ্যমে শিক্ষা দিতেন। যে রহস্য উঘাটন করতে বহু শতাব্দির অক্লান্ত পরিশ্রম এবং অধ্যয়নের প্রয়ােজন হত, তা তিনি অকপটে প্রকাশ করতে পারতেন। তিনি বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে পরামর্শ উপস্থাপন করতে পারতেন যা, শেষকাল পর্যন্ত, উদ্ভাবনের চিন্তা এবং শক্তি যােগাত। কিন্তু তিনি তা করেন নি। তিনি এমন কিছুই বলেন নি যার মাধ্যমে শ্রোতাদের কৌতূহলী বাসনা চরিতার্থ হবে অথবা স্বার্থপরতার উচ্চাকাঙ্ক্ষা জেগে উঠবে। তিনি নির্বস্তুক মতবাদ বন্টন করেন নি, কিন্তু এমন কিছু ব্যবহার করতেন যা চরিত্রের উন্নতির জন্য অপরিহার্য; যা ঈশ্বর বিষয়ক জ্ঞান লাভে মানুষের ক্ষমতা বাড়াবে, এবং ভালাে কাজে তার ক্ষমতা বাড়াবে। তিনি জীবনের আচরণ সম্পর্কিত এবং যা মানুষকে অনন্তকালের সঙ্গে সংযুক্ত করবে, সে সব সত্য সম্পর্কে কথা বলতেন। EdBen 73.3

তিনি, ঈশ্বর, তাঁর বাক্য, এবং তার কাজ সম্পর্কে লােকদের বিদ্যাগত তত্ত্ব সমূহ অধ্যয়নের প্রতি তাদেরকে পরিচালিত না করে, তিনি যে তার কাজে, বাক্যে, এবং তার বিচক্ষণ পরিচালনার দ্বারা প্রকাশিত হয়েছেন, ঐ সকলেতে তাঁকে দর্শন করতে শিক্ষা দিলেন। তিনি তাদের সসীম মন এবং চিন্তাধারা অসীমের সঙ্গে সংযুক্ত করলেন । EdBen 74.1

লােকেরা তাঁহার উপদেশে চমৎকৃত হইল; কারণ তাঁহার বাক্য ক্ষমতাযুক্ত ছিল।” ক ৪:৩২। চিন্তাধারাকে সক্রিয় করার উচ্চাকাঙ্ক্ষার আলাে জ্বালিয়ে দেবার, প্রতিটি দৈহিক মানসিক, এবং আত্মিক সক্ষমতা সজীব করে তােলবার জন্য, এমন কথা আগে কেউ কখনাে বলে নি। EdBen 74.2

খ্রীষ্টের শিক্ষা, তাঁর সমবেদনার ন্যায়, পৃথিবীকে জড়িয়ে রেখেছে। জীবনের এমন একটি অবস্থা ছিল না, মানব অভিজ্ঞতায় এমন একটি সন্ধিক্ষণ বা সংকটকাল হতে পারে না, যা তাঁর শিক্ষার মধ্যে আলােচিত হয়। নি, এবং যার প্রেক্ষিতে এর নীতিমালা একটি শিক্ষাস্বরূপ ছিল না। শিক্ষকগণের অধিপতি, শেষকাল পর্যন্ত তাঁর সহকর্মীদের কাছে তাঁর বাক্য একটি পথনির্দেশক স্বরূপ হবে। EdBen 74.3

তাঁর কাছে বর্তমান এবং অতীত, অদূর এবং সুদূর ছিল এক । মানুষ জাতির অভাব সমূহের প্রতি তার দৃষ্টি ছিল। তার মনের দৃষ্টিতে মানবিক চেষ্টা এবং সিদ্ধি লাভ, প্রলােভন, এবং দ্বন্দ্ব, জটিলতা এবং সংকটের চিত্র বিস্তৃত ছিল। তিনি সমস্ত অন্তঃকরণ, বাড়ি, সকল সুখ আনন্দ এবং উচ্চাভিলাস সম্বন্ধে জানতেন। EdBen 74.4

তিনি সমুদয় মানব গােষ্ঠির কাছে নয় কিন্তু সমুদয় মানব গােষ্ঠির। জন্য বলেছিলেন। ছােট শিশুর কাছে, তার জীবনের প্রভাতে; উৎসুক ব্যক্তির কাছে; যৌবনের চঞ্চল হৃদয়ে; মানুষের কর্মশক্তির বৎসরগুলাতে, যখন তারা দায়িত্বের বােঝা বহন করে; কর্ম-ক্লান্ত বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের কাছে, সকলের কাছে তাঁর বার্তা বলা হয়েছিল- প্রতিটি মানব শিশু, প্রত্যেক দেশের প্রত্যেক যুগের লােকদের কাছে। EdBen 74.5

তাঁর শিক্ষার মধ্যে অন্তর্ভূক্ত ছিল বর্তমান কাল এবং অনন্তকালীন বিষয়। দৃশ্যত, বিষয়সমূহের মাধ্যমে অদৃশ্যের পরিচয়, সাধারণ জীবনের অতীত ঘটনাবলী এবং ভাবী জীবনের শুরু গম্ভীর বিষয়গুলােও অন্তর্ভুক্ত ছিল। EdBen 74.6

ইহজীবনের বিষয়গুলাে অনন্তজীবনের বিষয়গুলাের সঙ্গে তিনি সুসামঞ্জস্য রেখেছেন; কিন্তু তিনি তাদের গুরুত্ব প্রত্যাখ্যান করেন নি । তিনি শিক্ষা দিয়েছিলেন যে, স্বর্গ ও পৃথিবী পরস্পর সম্পর্কযুক্ত, এবং ঐশ্বরিক সত্যের জ্ঞান প্রাত্যহিক জীবনের কার্যাবলী সম্পন্ন করার জন্য প্রস্তুত করে । EdBen 75.1

তাঁর কাছে কিছুই উদ্দেশ্যহীন ছিল না। ছােট শিশুদের খেলাধুলা, মানুষের পরিশ্রম, জীবনের আনন্দ বেদনা, এই সকলের একটি শেষ আছেমানব জাতিকে তুলে ধরবার জন্য ঈশ্বরের প্রকাশপ্রাপ্তি। EdBen 75.2

নতুন শক্তি এবং নতুন তাৎপর্য নিয়ে তার মুখ থেকে ঈশ্বরের বাক্য মানুষের হৃদয়ে প্রবেশ করেছে। তার শিক্ষা সৃষ্টির বিষয়বস্তুকে নতুন আলােকে তুলে ধরেছে। প্রকৃতির উপরে আরও একবারের মত ঐ উজ্জ্বলতার রশ্মি বিরাজ করেছিল যা পাপ দ্বারা নিশ্চিহ্ন হয়েছিল। EdBen 75.3

জীবনের সব এবং অভিজ্ঞতার মধ্যে একটি ঐশ্বরিক শিক্ষা এবং ঐশ্বরিক সাহচর্যের সম্ভাবনা প্রকাশিত হয়েছিল। ঈশ্বর পুনরায় পৃথিবীতে অবস্থান করলেন; মানবাঃন্তকরণ তার সান্নিধ্য উপলব্ধি করল; বিশ্ব তাঁর প্রেমে আবৃত হল। স্বর্গ মানুষের কাছে নেমে এল। খ্রীষ্টেতে তাদের অন্তঃকরণ তাঁকে উপলব্ধি করল, যিনি তাদের কাছে অমরত্বের বিজ্ঞান উন্মুক্ত করলেন “ইম্মানূয়েল, ... আমাদের সহিত ঈশ্বর।” EdBen 75.4

ঈশ্বর-প্ররিত শিক্ষকের মধ্যে, সমস্ত প্রকৃত শিক্ষা-কার্য কেন্দ্রিভূত রয়েছে। বর্তমান কালে এই কাজের বিষয়, তার স্থাপিত আঠারশ বছর আগের কাজের মত ত্রাণকর্তা এই বাক্যে বলেন EdBen 75.5

“আমি প্রথম ও শেষ ও জীবন্ত।” EdBen 75.6

“আমি আলফা এবং ওমিগা, আদি এবং অন্ত।” প্রকাশিত বাক্য ১:১৭; ২১:৬। EdBen 75.7

এভাবে একজন শিক্ষকের সান্নিধ্যে এমন ঐশ্বরিক শিক্ষার জন্য, তাঁর ব্যতিরেকে একটি শিক্ষার অন্বেষণ- তার জ্ঞান ব্যতিরেকে জ্ঞানের অন্বেষণ, তাঁর সত্য প্রত্যাখ্যান করে খাটি হবার বাসনা; তাঁর জ্যোতি ব্যতিরেকে জ্যোতির অন্বেষণ; এবং তাঁর জীবন ব্যতিত বেঁচে থাকা; জীবন জলের নিকট হতে পিছিয়ে এসে একটি ভাঙ্গা চৌবাচ্চা খোড়া যা জল দিতে অক্ষম- এ সব কেমনই না মুখতার কাজ। EdBen 75.8

দেখ তিনি এখনও আহ্বান জানান, “কেহ যদি তৃষ্ণার্ত হয়, তবে আমার কাছে আসিয়া পান করুক। যে আমাতে বিশ্বাস করে, শাস্ত্রে যেমন বলে, তাহার অন্তর হইতে জীবন্ত জলের নদী বহিবে।” “বরং আমি তাহাকে যে জল দিব, তাহা তাহার অন্তরে এমন জলের উনুই হইবে, যাহা অনন্ত জীবন পর্যন্ত উথলিয়া উঠিবে।” যােহন ৭:৩৭, ৩৮; ৪:১৪1 EdBen 76.1